thanks all over
দুটি পাতা একটি কুড়ির দেশ চায়ের দেশ ও প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলায় প্রবাসী শিল্পোক্তার অভাব, বিদ্যুতের দাম বেশী, লাগসই বিনিয়োগে অনিহা, অভিজ্ঞতার অভাব, অভিজ্ঞ কর্মীবাহিনীর অভাব, ব্যাংক ঋন পেতে জটিলতার কারণে মৌলভীবাজার বিসিক শিল্পনগরীতে পর্যাপ্ত শিল্প গড়ে উঠছে না। মনোরম পরিবেশ, বিদ্যুৎ-গ্যাসের সুবিধা, জমির মূল্য কম থাকার পরেও ২ দশকের বেশি সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও মৌলভীবাজারের বিসিক শিল্পনগরী পর্যাপ্ত শিল্প গড়ে উঠেনি। শিল্পোক্তাদের অভিমত শিল্পনগরীর উপযুক্ত যাতাযাত ও যানবাহনের সুবিধাজনক জায়গা নির্বাচনসহ বিসিক কর্তৃক বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদান, ব্যাংক ঋন সুবিধা পেলে অনেক শিল্পোক্তা এগিয়ে আসতেন। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে অবস্থিত বিসিক শিল্পনগরী মৌলভীবাজার শহর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দেিন এবং শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে। বিশেষ করে শ্রীমঙ্গল শহর এলাকা শিল্পোক্তাদের জন্য উপযুক্ত বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
কারণ হিসেবে বলেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় হলেও এখানে যাতায়াতের সর্বোত্তম সুবিধা, চা শিল্পাঞ্চল হিসেবে অনেক আগে থেকেই পরিচিত এবং বিনিয়োগে অনেকটা কম ঝুকি থাকবে। কিন্তু বর্তমান বিসিক শিল্পনগরী যাতায়াতে কিছুটা সুবিধা ও বিত্তবান লোকের অভাব না থাকলেও বিনিয়োগে ঝুকির কারনে অনেকেই শিল্প কারখানা করতে এগিয়ে আসছেন না। যারা আসছেন তারাও তেমন অভিজ্ঞ না থাকায় প্রথমত লোকসান দিয়ে কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছেন। ফলে দ শিল্প উদ্যোক্তার অভাবে মৌলভীবাজার জেলায় বিসিক এর বাণিজ্যিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি।
স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও শিল্পসমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলার ল্েয ১৯৮৭ সালে সিলেট-মৌলভীবাজার-ঢাকা মহাসড়কের পাশে মৌলভীবাজার শহরের প্রায় ৫ কিলোমিটার দেিণ গোমড়া এলাকায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪.৫৯ একর জমিতে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলা হয়।
মাত্র ৮ হাজার ২০০ টাকা (প্রতি ডেসিমেল) মূল্যে ৯৯ বছরের জন্য শিল্প উদ্যোক্তাদের কাছে প্লট বরাদ্দ দেয়া শুরু হয়। কিন্তু শিল্পনগরীর ১০১টি প্লটের মধ্যে গত দুই দশকে ৫২টি শিল্প ইউনিটের আওতায় মাত্র ৭১টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে চালু আছে ২৬টি, নির্মাণাধীন আছে ২১টি এবং ৫টিকে রুগ্ন/বন্ধ শিল্প হিসেবে চিহ্নিত করে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া প্লট বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে ৫৪টি।
অতি স¤প্রতি বন্ধ হয়েছে মিল্ক ভিটা নামের দুধ উৎপাদন কারী প্রতিষ্টান।
এখানে দীর্ঘসময়ে আশানুরূপ শিল্প কারখানা গড়ে না ওঠার নেপথ্যে আছে স্থানীয়ভাবে বিনিয়োগে উদাসীনতা, অদতা ও দ কর্মীর অভাব। মৌলভীবাজারের বিপুল সংখ্যক লোক পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থান করেন। বিলেতেও অনেকের বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। কিন্তু এ দেশে বিনিয়োগের ঝুকি তারা নিতে চান না শুধু তাই নয় তাদের
পরিবাবেব সবাই দেখা যাবে বিদেশে কর্মরত,তাই এ দেশে শিল্প প্রতিষ্টান গড়ে তুলে তা চালাবে কে?
মৌলভীবাজার শহরের অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, মৌলভীবাজারের মানুষ অলস। কষ্ট করতে চায় না।
তাদের টাকা আছে প্রচুর, শিল্প কারখানা গড়ে তোলার মানসিকতা নেই। তারা ঝুঁকি নিতে চান না। তাছাড়া একটি কারখানা দাঁড় করাতে বাংলাদেশের পরিপ্রেেিত যে পরিমান দৌড়ঝাঁপ করতে হয় তা করার ধর্য তাদের নেই। ঘরে বসে সব সুযোগ-সুবিধা পেতে চায়। তাছাড়া শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে যে মেধার প্রয়োজন তাও অনেকের নেই।
শিা-দীায় ও আছে অনেক পিছিয়ে। তাছাড়া শিল্পনগরী হিসেবে জায়গা নির্বাচনও সঠিক হয়নি। তবে প্রায় সবারই অভিযোগ স্থানীয় উদ্যোক্তাদের অভাব। প্রথম দিকে অনেকেই শুরু করে কিন্তু একধাপ দু’ধাপ অতিক্রম করার পর থমকে যায়। তাছাড়া ব্যাংক ঋণের জটিলতার কারণে অনেকে মাঝ পথে আটকে যায়।
সে সঙ্গে আছে পানিসহ নানাবিদ সমস্যা। বিসিক শিল্পনগরীতে আয়রণমুক্ত পানি না পাওয়ায় বয়লারের চাল পরিষ্কার হয়না, বেকারী শিল্পের জন্য পানি নিতে হয় শহর থেকে। মৌলভীবাজারের জনৈক ব্যবসায়ী জানান, কারখানায় গ্যাস সংযোগ নিতে সাত মাস সময় লেগেছে। শুরুতেই ছাড়পত্র নিতে হয়েছে পরিবেশ অধিদফতরের। এেেত্র স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ছাড়পত্রের পর নিতে হয় গ্যাস সংযোগ।
এভাবে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় দৌড়াতে গিয়ে অনেকেই হাঁপিয়ে ওঠেন।
বিসিক শিল্পনগরীতে সরেজমিনে পরিদর্শন কালে দেখা যায়, অনেক প্লট বরাদ্দ না নেওয়ায় শূন্য জায়গা গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। অনেক শিল্পকারখানা প্রাথমিক ভাবে চালু হলেও বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষ করে টায়ার রিট্রেডিং, পিবিসি পাইপ, উড ট্রিটমেন্ট এন্ড ফার্ণিচার, ষ্টিল ফার্ণিচার, ওয়ার্ক্সপ, রাবার লেটেক্স, অটো রাইস মিল, এলুমিনিয়াম ইন্ড্রাষ্ট্রি, মিনারেল ওয়াটার, টেক্সটাইল, প্রকৌশলজাত, প্রিন্টিং ও প্যাকেজিংসহ ২৬টি কারখানা চালু রয়েছে।
বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম সরকারের কাছে এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিসিক শিল্পনগরীতে অনেক সমস্যা রয়েছে।
তবে এখানে দ শিল্পোক্তার অভাব। এখানে প্রবাসী ও বিত্তশালী মানুষের অভাব নেই কিন্তু শিল্প বিনিয়োগের েেত্র তেমন আগ্রহ নেই। কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন, টেকসই বিনিয়োগ করতে প্রাথমিক পর্যায়ে কিছুটা ঝুঁকি অনেকেই নিতে চাননা। কেউ কেউ প্রথমে কারখানা শুরু করে অভিজ্ঞতা ও লোকবলের অভাবে বন্ধ করে দেন। আবার কেউ শুরুতে বিনিয়োগ করলেও পরবর্তীতে ভারসাম্য রা করতে পারেন না।
তার মতে বিসিক শিল্প নগরী থেকে বর্তমানে প্রতি মাসে সরকার প্রায় লাধিক টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে। সবগুলো প্লটে শিল্পকারখানা গড়ে উঠলে রাজস্ব আয় ৩ গুন হতো। শুধু তাই নয়, এখানে কয়েক হাজার বেকারদেরও কর্মসংস্থান হতো। বিসিক শিল্পনগরীর সঠিক স্থানের সমস্যা কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারী ভাবে যা করা হয়েছে, এখানেই শিল্পনগরী গড়ে তোলতে সমস্যা নেই। তবে শ্রীমঙ্গলের শহর ঘেষা কোন স্থানে এটি স্থাপিত হলে আরও বেশী উন্নত এবং শিল্পকারখানা গড়ে উঠতো বলে তিনি মনে করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।