হেফাজতে ইসলাম তাদের দেয়া ১৩ দফা বাস্তবায়ন করতে আগামী ৫ মে ঢাকা অচল করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর আগেই শাহবাগের নাস্তিক ব্লগারদের ফাঁসি দেয়ার দাবি তুলেছে। দাবি মানা না হলে আগামী ৫ মে-ই হবে সরকারের শেষ দিন। সরকারের পতন না করে তারা ঘরে ফিরবে না। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেছন থেকে জামায়াত-বিএনপি ইন্ধন দিচ্ছে।
এরপরেও সরকারের পক্ষ থেকে হেফাজতের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। যাতে তারা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচী পালন করে। কিন্তু এবারের কর্মসূচী তাদের জঙ্গী কর্মসূচী হবে। জ্বালাও, পোড়াও ও ভাংচুরের জন্য হেফাজতে ইসলামকে বিরাট অঙ্কের টাকা জামায়াত আগেই দিয়েছে। সরকারের প্রভাবশালী একটি গোয়েন্দা সংস্থা এমন তথ্য দিয়েছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির নূর হোসেন কাসেমি বলেন, ‘স্বাধীনতা ও আলেম-ওলামাদের রক্ষার জন্যই আমাদের ১৩ দফা। আগামী ৫ মে ঢাকায় তৌহিদী জনতার ঢল নামানো হবে। মাহমুদুর রহমানের মুক্তিসহ হেফাজত কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলা প্রত্যাহার না করলে দেশ অচল করে দেয়া হবে। সরকারের মধ্যেই নাস্তিকতা রয়েছে। এরা নাস্তিকদের অনুকরণে নারীনীতি বাস্তবায়নের পাঁয়তারা করছে।
তারা এ দেশকে একটি জারজ রাষ্ট্রে পরিণত করার পরিকল্পনা করছে।
বাংলাদেশে ব্লগ ও ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম ও নবী মোহাম্মদের অবমাননাকারীদের কথা বলে হেফাজতের আন্দোলন শুরু হয় চট্টগ্রামে। পরে এই সংগঠন রাতারাতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে। এই বিষবৃক্ষটি বাড়তে বাড়তে অনেক বড় হয়ে গেছে। হেফাজতে ইসলামের নেতারা বলছেন, তাদের দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
তারা ইসলাম অবমাননাকারী ব্লগারদের শনাক্ত করতে গঠিত সরকারের কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে আসা হেফাজতে ইসলাম নেতারা বলেছেন তাদের এই আন্দোলনের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর কোন যোগসাজশ নেই। কিন্তু জামায়াত ও বিএনপির নেতাদের সঙ্গে কথা বলেই তারা বিভিন্ন কর্মসূচী দিচ্ছে। এবারের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচী পালন করতে তারা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে।
সংস্থাটি বলেছে, সরকারকে মুসলিম বিশ্বের কাছে হেয়পতিপন্ন করা এবং বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে জামায়াত-শিবিরের ফ্যাসিবাদী কায়দায় ফেলতে ভয়াবহ হামলা, ব্যাপক নাশকতা, সহিংসতা এমনকি হত্যা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
জামায়াত কৌশলে কয়েকটি লাশ চাইছে। এটা সাধারণ মানুষ অথবা হেফাজতের কর্মী যেই হোক না কেন লাশ হলেই তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল হবে। আল্লামা আহম্মদ শফী এবং হেফাজতে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করার জন্য কওমী মাদ্রাসাসহ অন্য ইসলামী সংগঠনগুলোকে সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আগামী ৫ মে সহিংসতা ও নাশকতার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের পলাতক নেতাকর্মী এবং জামায়াত-শিবিরের ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগের কয়েকটি অঞ্চলে গোপন বৈঠক করেছে। এই বৈঠকে ‘অপারেশন হেফাজতে ইসলাম’ নামে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্রশিবির এবং নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনের কয়েকটি প্রশিক্ষিত ক্যাডার গ্রুপকে এ কমিটির অন্তর্ভুক্ত করে দায়িত্ব প্রদান করা হবে। কমিটির নেতৃত্বে ছাত্রশিবির এবং জঙ্গী সংগঠনের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা অপারেশন চালাবে। প্রয়োজনে কিলিং মিশনও চলবে। নাশকতা ও কিলিং অপারেশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ছাত্র শিবিরসহ নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনের ক্যাডারদের হাতে শক্তিশালী হাতবোমা ও ককটেলসহ কয়েক শ’ দেশীয় গ্রেনেড এবং বিপুলসংখ্যক আগ্নেয়াস্ত্র থাকবে। গোয়েন্দা সংস্থা এমন তথ্য সরকারের ওপর মহলে জানিয়েছে।
এবার হেফাজতে ইসলাম ঢাকা অবরোধে শান্তিপূর্ণ থাকবে না। পেছন থেকে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির ক্যাডাররা কাজ করে যাবে।
এদিকে সরকার হেফাজতে ইসলাম থেকে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে দূরে রাখার কৌশল নিয়েছে। এ জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য একাধিক মন্ত্রী ও এমপিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। হেফাজতে ইসলামকে নিবৃত্ত করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিষয়টি যেন জনসাধারণ নেতিবাচক হিসেবে না নেয় সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। তাই বুঝেশুনে মিডিয়ার সামনে কথা বলা উচিত বলতে হবে। জামায়াতকে আলাদা রাখতে হবে। এ বিষয়ে কৌশলী হওয়া প্রয়োজন। হেফাজতকে নিবৃত্ত করায় মনোযোগী হতে হবে।
তারা যাতে যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতের সঙ্গে সভা না করে ওই বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। খালেদা জিয়া মনে করছেন, হেফাজতকে সামনে রেখে ফায়দা লুটবেন। এটা যাতে তিনি করতে না পারেন। হেফাজতের ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচীতে কি পরিমাণ লোক সমাগম হবে সে বিষয়েই একটি ধারণা রাখতে বলা হয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্তদের।
গোয়েন্দা সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামী ৫ মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে জামায়াত-বিএনপির মাঝে মহাপ্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
৬ এপ্রিল মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের লং মার্চ কর্মসূচীতে জামায়াত-বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে অংশ গ্রহণের পাশাপাশি নেপথ্যে আর্থিক ও অন্যান্য সহযোগিতা প্রদান করে। এছাড়াও প্রকাশ্যে জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীরা হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের নাস্তার প্যাকেট ও পানির বোতল বিতরণ করে। হেফাজতে ইসলাম নিজেদের অরাজনৈতিক সংগঠন দাবি করলেও তাদের গত ৬ এপ্রিল লং মার্চ কর্মসূচী থেকে জামায়াতে ইসলামীর দাবিই ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়া হয়। ঢাকা অবরোধ কর্মসূচীকে বাস্তবায়ন করার জন্যও জামায়াত-বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।