০০০০০০০০০০ -কই তুমি?
-স্কুলে আসছি
-আজও নিশ্চয়ই কোন গার্লস স্কুলে প্রোগ্রাম,তাইনা?
-হে। কি করব বল,ইভেন্ট এর কাজ,যখন যেই স্কুলে প্রোগ্রাম,তখনতো সেইখানেই করতে হবে।
-গার্লস স্কুল ছাড়া আর কোন স্কুল পাওনা তোমরা???
-ঝগড়া পরে কইর আমি এখন খুব বিজি। বাই। ।
লাইন কেটে সাথে সাথে মোবাইল সাইলেন্স করে দিলাম।
কোন দুঃখে যে প্রেম করতে গেছিলাম!তাও আবার রিয়ার সাথে। মেয়েটা খুবই ঈর্ষা প্রবণ। একদিন ওর এক চাচাত বোনের ছবি দেখিয়ে বলল কিউট না? আমি বললাম হাঁ খুবই কিউট। ব্যাস আর যাই কই।
শুরু হইল প্যানপ্যান। মেয়ে দেখলেই পছন্দ হয়। হবেনা কেন,যে ছেলে আগে ১০-১২ টা প্রেম করছে সে আর কত ভাল হবে...এবেরা ব্যাগেরা সব। সত্য কথা আমার অনেক মেয়ের সাথেই রিলেশন ছিল আগে। কিন্তু কোনটাই ২-৩ মাসের বেশী টিকেনাই।
সমস্যা হচ্ছে আমি টাকা কামানোকেই বেশী প্রাধান্য দেই,তাই কাওকেই ঠিক ভাবে সময় দিতে পারতামনা। এই কারনেই মূলত ব্রেক আপ গুলো হত।
রিয়ার সাথে পরিচয় গত বছর এক গায়ে হলুদে। ইভেন্টে জব করার বদলতে ভালো করেই জানি কাকে কখন কিভাবে পটাতে হয়। তাই ওকে পটাতে খুব একটা সমস্যা হয় নাই।
আমি আবার খুব ভালা পোলা। প্রেম করার এক সপ্তাহের মাথায় ওই গার্লফ্রেন্ডকে আমার বিগত সকল প্রেমের কথা বলে দেই,পরে যেন আবার দোষ না দেয়।
আমার সাথে রিয়ার অনেক মিল। ৯৫% মতের মিল হ্য়। কিন্তু ওর সন্দেহ প্রবণ মন এর জন্য আমার শান্তির ঘুম হারাম হই গেছে।
আমি ঠিক যেমন চাইছিলাম ঠিক তেমন একটা দুষ্টু মেয়ে। কিন্তু খুব লক্ষ্মী। আর আভিমানি। যাই হোক কয়েক দিন পর জানতে পারলাম ও খুবই ধনী ঘরের মেয়ে। কপাল আমার!আমার বিগত ম্যাক্সিমাম প্রেমিকাই ধনীর মেয়ে।
যাই হোক আমার ইভেন্ট এর প্রোগ্রাম শেষ হতে হতে দুপুর তিনটা বাজল। মোবাইল হাতে নিয়া দেখি ওর দুইটা মিসকল। যাক যা হওয়ার হবে। লাঞ্চ করার পর ওকে কল দিলাম। ফোন ধরেই ঠাণ্ডা গলায় বললঃ
-আজ সন্ধ্যায় ফ্রী আছ?
-না।
তুমি ভাল করেই জান আমি রাত ১০:৩০ পর্যন্ত টিউসুনি করি। কিন্তু কেন?
-তোমাকেনা বলছিলাম বড় আপুর জন্য বর খোঁজা হচ্ছে। আপুর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে
-ভাল
-বাবা তোমার সাথে দেখা করতে চায়
-ও এই বেপার!কখন?
-থাক আজ আর আসা লাগবেনা। কাল বিকালে বাসায় এস
-ওকে
-এখন রাখি
কিরে বাবা!!এখন কেবল বিবিএ পড়তেছি,এত তাড়াতাড়ি বিয়ে করার কোন ইচ্ছে নাই। কিন্তু আমার মা-বাবার কোন অমত নাই।
তারা আমাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য দুই পায়ে খাড়া। কি আর করা যেতে হবে আমাকে রিয়ার বাসায়। দেখি কি হয়?
-আসসালামুয়ালাইকুম
-অয়াইকুমাসসালাম। বস। তুমিই অমি?
এই কথা বলে আগাগোড়া আমাকে দেখে নিলেন রিয়ার বাবা।
বুঝতে চেষ্টা করলেন আমার স্ট্যাটাস। ফর্মাল হয়ে এসেছি। অবশ্য আজও কাজ ছিল তাই এই গেটআপ।
-জি। আমিই অমি।
তারপর আমার পরিবার থেকে শুরু করে পড়ালেখা কিছুই বাদ দিলেননা,সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞাস করলেন। হাজার হলেও ব্যবসায়ী মানুষ।
-তুমি কি আমার মেয়ের ভার গ্রহণ করতে প্রস্তুত?
এই রকম প্রশ্ন আমি কল্পনাও করিনাই।
-জী না। আমি প্রস্তুত না।
-তাহলে ওকে ভালবাসলে কেন?
-দেখেন আমাকে আগে সেটেল হতে হবে দেন বিয়ে।
-আমি যদি তোমাকে সেটেল করে দেই তাহলে?
-দুঃখিত। আমি আপনার প্রস্তাব গ্রহণ করলাম না।
-তার মানে রিয়াকে তোমার জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে?
-হয়ত
-কিন্তু আমি যে আর অপেক্ষা করতে পারবনা।
-কেন দুই এক দিনের ভিতর মারা যাচ্ছেন নাকি?
বাবা এবং মেয়ে দুইজন প্রচণ্ড শক খেল আমার কথায়।
কি করব রিয়ার বাবার কথা বার্তায় মেজাজটা খারাপ হয়ে গেছিল।
-তুমি এখন আসতে পার।
রাত একটা। রিয়ার ফোন
-তুমি আমার বাবার সাথে এইভাবে কথা বললা কেন?
-তোমার বাবা ওইরকম কথা বলল কেন?
-বাবা ঠিক কাজ করছে,আর আমি বাবার অমতে তোমাকে বিয়ে করতে পারব না
-আমি কি তোমাকে বলছি যে আমকে এখন বিয়ে করতে?অপেক্ষা করতে পারলে কর না করলে বাপের পছন্দের ছেলের গলা ধরে ঝুলে পর।
আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি রিয়ার গাল বেয়ে কান্নার পানি পরছে।
-তুমি এমন কথা বলতে পারলা?
-তোমার বাবা আগে থেকেই হয়ত তোমার জন্য ছেলে দেখে রেখেছে,তাই আমার সাথে এইরকম করেছে। ফাজিল লোক একটা।
-আমার বাবাকে নিয়ে আর একটা কথা বলবা না।
-খেতারে পুড়ি তোমার কথা বলার। না বললাম আর কথা।
-তুমি আর জীবনেও আমাকে কল দিবানা আর দেখা করারও চেষ্টা করবানা।
-যা করুম না তোর লগে দেখা। মরলে দূরে গিয়া মরিস।
মেজাজটা আবার খুব গরম হয়ে গেল। মোবাইলের লাইন কেটে দিলাম।
অফ করলাম মোবাইলটা।
সকালে ঘুম থেকে উঠে মোবাইল অন করেই রিয়ার এসএমএস। শুধু চারটা ওয়ার্ড লেখা “Good Bye 4 Ever”.বুঝতে পারলাম আরেকটা ব্রেকআপ হল আমার জীবনে। আজ সকাল থেকে আবার শুরু হল আরেকটি যান্ত্রিক দিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।