থেমে যাবো বলে তো পথ চলা শুরু করিনি।
সরকারে অস্থিরতা বাড়ছে।
এর মধ্যে কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করা যায়। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর দিকে নজর দিলে দেখা যাবে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের মুখোমুখি অবস্থানে আছে, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অন্য মন্ত্রী-এমপিদের বিরোধ ও হাতাহাতি হয়েছে, বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে সংসদীয় কমিটি ও বিমান চেয়ারম্যানের বনিবনা না হচ্ছে না, দ্রব্যমূল্য বিশেষ করে চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের ক্রমাগত বাড়াবাড়ি চলছে, ডিসি-এসপি দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, উপজেলা চেয়ারম্যান-ইউএনও বিরোধ অনেক পুরনো হয়ে গেলও তা সমাধা না করায় এখন তিল থেকে তালে পরিণত হয়েছে, পিএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে সদস্যদের মতদ্বৈধতা রয়েই গেছে, আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠানো নিয়ে সরকার দ্বন্দ্বে পড়েছ, সংবিধান সংশোধনের দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব নির্ধারণ প্রশ্নে বিতর্ক এবং মিডিয়া সম্পর্কে দায়িত্বশীল মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের কুৎসা রটনা, দেশের বিভিন্ন স্থানে শাসক দল ও সরকারি কর্মকর্তাদের মুখোমুখি অবস্থান নেয়া, দলীয় সংসদ সদস্যের অস্ত্রে দলের নেতা খুন হওয়ার ঘটনায় বেকায়দায় আছে সরকার।
নানা উদ্যোগ নিয়েও এসব অস্থিরতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না।
বরং দিন দিন বিরোধ-দ্বন্দ্ব-সংঘাত বেড়েই চলেছে। দায়িত্বশীলদের অদক্ষতা, অদূরদর্শিতা, প্রতিহিংসাপরায়ণতা এবং সরকার ও দলকে একসঙ্গে গুলিয়ে ফেলার কারণে এমন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
সর্বশেষ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে তার কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা সরকারকে বেকায়দায় ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, সরকার এখন এ কর্মকর্তাকে নিয়ে কী করবে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। এপিএস মাহবুবুল হক শাকিল জাতিসংঘ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যান।
রাজনৈতিক নিয়োগপ্রাপ্ত শাকিল মাতাল অবস্থায় মধ্যরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা শাহনাজ গাজীর রুমে জোরপূর্বক প্রবেশের চেষ্টা করেন।
বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে সেখানে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। গ্র্যান্ড হায়াত হোটেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর বলে অভিহিত করে। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাত্ক্ষণিকভাবে স্ট্যান্ডরিলিজ করে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং যথারীতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অফিস করতে শুরু করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার শাকিলকে তার কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করতে দেখে ক্ষুব্ধ হন। পরে তিনি সংশ্লিষ্টদের ডেকে শাকিলকে পদত্যাগ করতে বলেন, রাজি না হলে পদচ্যুত করার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার পর একদিন অফিস করলেও গতকাল তিনি পদত্যাগ করেন।
প্রসংগতঃ এর আগে মাহবুবুল হক শাকিলকে ঢাকা ফুয়াং ক্লাবে মদ্যপ অবস্থায় এক মডেল কন্যার ওড়না ধরে টানাটানি করতে দেখা গেছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
প্রসঙ্গত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা শাহনাজ গাজীকে শিগগিরই বর্তমান কর্মস্থল থেকে বদলি করা হচ্ছে বলে খবর বেরিয়েছে।
এই পদত্যাগের ফলে সরকার স্বীকার করে নিল যে শাকিল নারী কেলেঙ্কারির ঘটনার হোতা।
[ সূত্রঃ আমার দেশ, ৮ অকটোবর ]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।