আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নতুন রূপে পুরোনো লড়াই

এমন একটা সমাজের কথা ভাবতে পারেন যেখানে কোনো মধ্যবিত্ত নেই! দুটি মাত্র বিশাল ধনী পরিবার, বাকি সবাই কোনোরকমে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকে। নিদারুণ এই বৈষম্যের কথা কল্পনা করতেই তো অস্বস্তি হয়।
কিছুটা অদ্ভুত হলেও সত্যি, স্প্যানিশ লা লিগার অবস্থা অনেকটা এ রকমই। প্রতিদ্বন্দ্বী আরও অনেক থাকলেও আসলে এটা ‘দুই ঘোড়ার দৌড়’ অনেক দিন থেকেই। বাকি ১৮ দল প্রতিটি মৌসুমের প্রথম দিন থেকেই জানে, ওরা লড়ছে তৃতীয় হওয়ার জন্য! এবার রিয়াল-বার্সেলোনাসহ ১০টি দলেরই নতুন কোচ।

গত মৌসুমের শেষ থেকে এই মৌসুমের শুরু পর্যন্ত স্প্যানিশ লিগ ছেড়ে অন্য কোথাও পাড়ি জমিয়েছেন ৭০ জনেরও বেশি ফুটবলার। আবার স্পেনেও নতুন ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন অনেকে। সব মিলিয়ে বেশ বড় রকমের রদবদল। কিন্তু কী লাভ? আজ শুরু হতে যাওয়া নতুন মৌসুমেও লা লিগার মূল ছবিটা বদলাচ্ছে না। লড়াইটা এবারও শুধুই রিয়াল মাদ্রিদ-বার্সেলোনার।

দ্য গার্ডিয়ান-এর ফুটবল কলামিস্ট সিড লো যে কারণে আফসোস করে বলছেন, এমন অবস্থা হতে পারে, যখন লিগের দুটি ‘এল ক্লাসিকো’র ফলই নির্ধারণ করে দেবে শিরোপা!
স্প্যানিশ লিগ শুরু হচ্ছে আজ, তবে দুই ‘দানব’ রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা মাঠে নামবে আগামীকাল। লড়াইটা আগের মতো হলেও দুই দলই ডাগ-আউটে পাবে নতুন কোচ, নতুন রূপে। শেষের দিকে কিছুটা বিতর্কিত হয়ে রিয়াল ছেড়েছেন হোসে মরিনহো। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব পাওয়া কার্লো আনচেলত্তি সাতটি প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতি ম্যাচে ছয় জয় আর একটি ড্র নিয়ে আশার আলো দেখাচ্ছেন। গত জুনে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে নিজের পরিচিতি অনুষ্ঠানেই আনচেলত্তি জানিয়েছিলেন, তাঁর লক্ষ্য শুধু ফলনির্ভর ফুটবল খেলা নয়, ভক্তদের মন জেতানো খেলাও উপহার দেওয়া।

প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতি ম্যাচে রিয়ালের খেলা আনচেলত্তির কথাই সমর্থন করে। তবে তাঁর আসল চ্যালেঞ্জ হলো ১১ বছরের অধরা চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং বার্সেলোনার কাছ থেকে লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধার করা।
মৌসুম শুরুর আগেই নেইমারকে দলে নিয়ে বার্সেলোনার সঙ্গে একটা ঠান্ডা লড়াই হয়ে গেছে রিয়াল মাদ্রিদের। শেষ পর্যন্ত নেইমার স্বেচ্ছায় বার্সেলোনাকে বেছে নেওয়ায় অহমের লড়াইয়ে হেরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। এখন টটেনহাম উইঙ্গার গ্যারেথ বেলকে দলে টেনে টেক্কা দিতে চাইছে তারা।

বেল সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আসছেন কি না, এটা নিশ্চিত নয় এখনো। তবে শিরোপা লড়াইয়ে বার্সেলোনার সঙ্গে টেক্কা দেওয়ার জন্য চেষ্টার কমতি নেই তাদের। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, মেসুত ওজিল, আঙ্গেল ডি মারিয়ারা আছেন। আনা হয়েছে স্প্যানিশ অনূর্ধ্ব-২১ দলের সম্ভাবনাময় তারকা ইসকো, ইলারামেন্দি ও ব্রাজিলের কাসেমিরোকে। আনচেলত্তির অধীনে নিজের নতুন ভূমিকায় (স্ট্রাইকারদের ঠিক পেছনে) বেশ উজ্জ্বল দেখাচ্ছে রোনালদোকেও।


ডেভিড ভিয়া ও থিয়াগো আলকানতারা চলে গেছেন, কিন্তু বার্সেলোনার মাঝমাঠ আর আক্রমণভাগ এত শক্তিশালী যে ওই অভাব তাদের টের পাওয়ার কথা নয়। নতুন কোচ জেরার্ডো মার্টিনোর চ্যালেঞ্জ রক্ষণভাগকে নিশ্ছিদ্র রাখা। এরিক আবিদাল নেই, মধ্য ত্রিশের কার্লোস পুয়োল এমনিতেই চোটপ্রবণ। জেরার্ড পিকের সঙ্গে একজন নিখাদ সেন্টারব্যাক না থাকলে ভুগতে হতে পারে বার্সেলোনাকে। অনেক চেষ্টা করেও প্যারিস সেন্ট-জার্মেইয়ের থিয়াগো সিলভা কিংবা চেলসির ডেভিড লুইজকে আনা যায়নি।

আরও একটা মৌসুম তাই হাভিয়ের মাচেরানোকে ডিফেন্ডারের দায়িত্ব পালন করতে হবে হয়তো। পাশাপাশি আরেকটা বড় চ্যালেঞ্জ, ইউরোপিয়ান লিগের সঙ্গে খুব একটা পরিচিত নন কোচ মার্টিনো। এই প্রথম দক্ষিণ আমেরিকার বাইরে তিনি। তবে আশার কথা হচ্ছে, প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতি ম্যাচেই বোঝা গেছে খুব দ্রুত নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছেন মেসির জন্মশহরের কোচ। এরই মধ্যে জিতে নিয়েছেন বার্সা ফুটবলারদের মনও।


বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়া বাকি দলগুলোর মধ্যে কিছুটা এগিয়ে রাখা যায় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও ভ্যালেন্সিয়াকে। রাদামেল ফ্যালকাও চলে গেছেন, কিন্তু ডেভিড ভিয়া ও লিও ব্যাপতিস্তাওকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে পারে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ভ্যালেন্সিয়া খুশি থাকবে চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা নিশ্চিত করতে পারলেই। তবে এখানে তাদের জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে গত মৌসুমে চতুর্থ হওয়া রিয়াল সোসিয়েদাদ ও আটবারের লিগ চ্যাম্পিয়ন অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের।
অন্য দলগুলো কেমন খেলল তা নিয়ে অবশ্য খুব বেশি লোকের মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না।

ইএসপিএনের একটি সাম্প্রতিক জরিপ বলছে, স্পেনের শতকরা ৬৩ ভাগ মানুষ বার্সেলোনা বা রিয়ালের সমর্থক। আর হবে নাই-বা কেন? বিশ্বের সেরা দুই ফুটবলার লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো খেলেন এই দুই দলে।
ওহ, নাহ্, সেরা তিন বলতে হবে। নেইমারও তো এবার খেলছেন বার্সেলোনায়!।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.