আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাকা চিড়িয়াখানায় এসেছে নতুন কিছু অতিথি। মৃত্যুর প্রহর গুনছে বয়সের ভারে ন্যুব্জ প্রবীণরা। বছরের মার্চে টাইগার দম্পতির ঘরে এসেছে দুটি বাচ্চা।

লোভ লালসার জন্য নয় বরং লোভ লালসার বিপরিতে নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই

ঢাকা চিড়িয়াখানায় এসেছে নতুন কিছু অতিথি। মৃত্যুর প্রহর গুনছে বয়সের ভারে ন্যুব্জ প্রবীণরা। বছরের মার্চে টাইগার দম্পতির ঘরে এসেছে দুটি বাচ্চা। এদের একটি ছেলে অন্যটি মেয়ে। এ বছরই ওয়াল্ডিবিস্ট ও কমন ইলান্ড বাচ্চা দিয়েছে।

ডিম দিয়েছে ময়ূর ও এমু পাখি। গতবছর বাচ্চা দিয়েছে ইম্পালা। অন্যদিকে ১৫টি প্রাণী বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সিংহ, গণ্ডার, নীলগাই, জলহস্তি, কুমির, ভালুক, শিম্পাঞ্জি, কেশোয়ারি, হাতি, ইমু ও বাঘডাস পাখি ইত্যাদি। চিড়িয়খানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বছরের শেষে নতুন প্রাণী আনা হবে।

চিড়িয়াখানার রয়েল বেঙ্গল টাইগারের খাঁচার সামনে গিয়ে দেখা গেল মা বাঘের সঙ্গে খেলায় ব্যস্ত মেয়ে শাবকটি। আর ছেলে শাবকটি পায়ে ব্যথার কারণে দূরে বসে বোন ও মা'র খেলা দেখছে। পেছনে মহড়া দিচ্ছে বাবা বাঘটি। বাঘের খাঁচার পাশেই কালো ভালুকটির খাঁচা। বয়সের কারণে ভালুকটি মানুষদের এড়িয়ে চলছে।

খাঁচা থেকে বের হচ্ছে না। ভারতীয় সিংহীর খাঁচার সামনে গিয়ে দেখা গেল, সামনে রাখা মাংসের টুকরাটির প্রতি তার কোনো আগ্রহ নেই। বয়সী সিংহীটিকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা গেল। কুমিরের খাঁচার সামনে গিয়ে দেখা যায়, লোনা পানির কুমিরটির পায়ে হয়েছে টিউমার। বয়স ও শারীরিক অসুস্থতা_ দুয়ে মিলে প্রাণীটির অবস্থা করুণ।

গণ্ডার চিড়িয়াখানার বয়স্ক প্রাণীদের একটি। সঙ্গীহীন মহিলা গণ্ডারটি বহুদিন ধরেই অসুস্থ। কর্তৃপক্ষ জানান, গণ্ডারটির চিকিৎসায় যে ধরনের যন্ত্রপাতি প্রয়োজন, তা তাদের নেই। চিড়িয়াখানার অন্য বয়স্ক প্রাণীটি হচ্ছে সত্তর বছর বয়সী হাতি কাজলতারা। কিছুদিন আগে কাজলতারা'র সঙ্গী নয়নতারার মৃত্যু হয়।

বয়সের ভারে কাজলতারাও এখন গুনছে মৃত্যুর প্রহর। পাখিগুলোর মধ্যে মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে কেশোয়ারি। বয়সের কারণে পাখিটিকে বেশ ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। অন্যদিকে চিড়িয়াখানার দুটি ইমু পাখির মধ্যে একটির ঘাড়ের হাড় জন্ম থেকেই বাঁকা। ফলে অসুস্থ পাখিটি সবসময় ঘাড় বাঁকা করে ঝিমায়।

চিড়িয়াখানায় বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের একজন হামিদুর রহমান জানান, বহু বছর পর তিনি চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসে হতাশ হয়েছেন। এখানকার বেশিরভাগ খাঁচাই দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত। খাঁচাবন্দী প্রাণীদের বেশিরভাগই অসুস্থ ও বয়স্ক হয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে আগের মতো প্রাণচাঞ্চল্য নেই। কথা হয় চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর ডা. এ বি এম শহীদুল্লাহের সঙ্গে।

তার দাবি, বয়স্ক প্রাণীদের আগের তুলনায় বেশি সেবা-শুশ্রূষা করা হয়। তাদের খাবারের সঙ্গে ভিটামিন খেতে দেওয়া হয়। তিনি জানান, চিড়িয়াখানায় নতুন প্রাণী আনতে সরকার একনেকের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ বছরের শেষ নাগাদ নতুন প্রাণী আনা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। চিড়িয়াখানায় বিনোদন পার্ক করার বিষয়ে কিউরেটর বলেন, এ বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি সার্জন ডা. শাফিক উল আযম দীপ্ত জানান, বর্ষাকালে লেকের পানি বেড়ে যাওয়ায় হাঁসজাতীয় প্রাণীদের সুরক্ষার জন্য চিড়িয়াখানার ২ নম্বর পাবলিক টয়লেটের পাশে কিছু খালি খাঁচা রাখা হয়েছে এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বাচ্চাদের জন্য একটি খাঁচা খালি রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ এবার যেসব প্রাণী নিঃসঙ্গ, তাদের জন্য সঙ্গী এনে প্রাণীদের জোড়া তৈরি করার পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রাণীদের খাবার দেওয়ার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ সর্বদা সতর্ক থাকে দাবি করে ভেটেরিনারি সার্জন বলেন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খাবার সরবরাহ করা হলে ভালো হতো। তিনি জানান, চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের চিকিৎসার জন্য এবার সর্বোচ্চ টাকার ওষুধ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.