স্বা¯’্যসেবার অর্ধেকই ভুয়া
চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণে
দেশজুড়েই চিকিৎসার নামে অহরহ প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। স্বা¯’্যসেবা এখন একটি লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এ সুযোগে দেশের স্বা¯’্য খাতের অনেকটাই এখন ভুয়া ডাক্তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় রাজধানীসহ সারাদেশেই রমরমা চিকিৎসা বাণিজ্যি করে যা”েছ ভুয়া ডিগ্রিধারী ডাক্তাররা। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে দেশের স্বা¯’্যসেবা।
এসব ডাক্তারের হাতে পড়ে ভুল চিকিৎসায় কতো রোগী প্রাণ হারিয়েছেন তার কোনো হিসাব নেই। অনেকে আবার ওসব ভুয়া ডাক্তারের চিকিৎসায় অঙ্গহানির মাধ্যমে বিকলাঙ্গ অভিশপ্ত দিনযাপন করছেন। ভুয়া চিকিৎসকরা অর্থের জন্য রোগীর দেহে যে কোনো ধরনের অস্ত্রোপচার করতে দ্বিধাবোধ করে না। দেশজুড়ে এ অব¯’া তীব্র আকার ধারণ করলেও চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বিএমডিসি পালন করছে নিরব দর্শকের ভূমিকা।
সম্প্রতি ভেজাল বিরোধী ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে অস্ত্রোপচাররত অব¯’ায় একজন ভুয়া ডিগ্রীধারী ডাক্তারকে আটক ও ফেনসিডিল উদ্ধার করে।
আটকের পর ওই ডাক্তার ভ্রাম্যমান আদালতকে জানান, ফেনডিসিল না খেলে তিনি অপারেশন করতে পারেন না। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি রাজধানীতে চিকিৎসা বাণিজ্য চালিয়ে আসছেন। আটক হওয়ার আগ পর্যন্ত ওই ডাক্তারের কাছে কত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন এবং পরবর্তীতে তাদের শারীরিক অব¯’া কি সে সম্পর্কে ওই ভুয়া ডাক্তার কিছু বলতে পারেননি। বিভিন্ন অভিযানে ইতিমধ্যে এ ধরনের আরও ১৫জন ভুয়া ডাক্তারকে আটক এবং জেল-জরিমানা করা হয়েছে। শুধুমাত্র রাজধানীতে বিপুলসংখ্যক ভুয়া ডিগ্রীধারী ডাক্তার রয়েছেন বলে ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র মতে, ভুয়া চিকিৎসকের চিকিৎসায় বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক রোগী চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে আসছেন। দিন দিন এই ধরনের রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে অপারেশন করতে গিয়ে প্রকৃত জায়গায় অস্ত্রোপচার না করে অন্য জায়গা কেটে ফেলার ঘটনা বেশি ঘটছে। এতে রোগীর রক্ত রণ বন্ধ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে এবং গুর“তর জটিলতা দেখা দেয়। এসব জটিলতা পরবর্তী চিকিৎসা কিংবা দ্বিতীয় দফা অপারেশন করেও তেমন ভাল হয় না।
আগত রোগীদের মধ্যে ঢাকার বাইরের অর্থাৎ গ্রামাঞ্চলের রোগীদের সংখ্যাই সর্বাধিক। রাজধানীতে এ ধরনের রোগী বেশি আসে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, হƒদরোগ ইনস্টিটিউট, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, চক্ষু বিজ্ঞান ইনষ্টিটিউট, পঙ্গু হাসপাতাল, মহাখালী বক্ষ ব্যাধি হাসপাতাল ও ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে।
সূত্র আরো বলেন, দেশেজুড়েই জেলা ও উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মত অসংখ্য বেসরকারি ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। শতকরা ৯০ ভাগ ভুয়া ডিগ্রীধারী ডাক্তার দ্বারাই ওইসব ক্লিনিকের চিকিৎসা সেবা পরিচালিত হ”েছ। ¯’ানীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করেন।
এর জের ধরে ভুল চিকিৎসার কারণে রোগী মারা যাওয়ার কারণে উত্তেজিত হয়ে রোগীর আÍীয়-স্বজনরা অনেক ¯’ানে বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে হামলা চালানোর ঘটনা ঘটা”েছ। অভিযোগ রয়েছে, ¯’ানীয় স্বা¯’্য প্রশাসন কিংবা পুলিশ প্রশাসন নিয়মিত মাসোহারা পেয়ে থাকেন বলেই ভুয়া ডাক্তারদের চিকিৎসা বাণিজ্যে তেমন কোনো অসুবিধা হ”েছ না।
সূত্র আরো জানান, বাণিজ্যের লক্ষ্যে ভুয়া ডাক্তাররা নামের পেছনে এফআরএসএইচ, এমএসিপি, এফএসিপি, পিজিটি, এমডি ও এফসিপিএস (ইনকোর্স) ও পার্ট-১ অথবা পার্ট-২সহ বিভিন্ন ডিগ্রী উল্লেখ করে থাকে। শুধু তাই নয়, ভুয়া ডিগ্রীর সঙ্গে লন্ডন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নামও উল্লেখ করা হয়। এ কারণে সাধারণ রোগীরা এসব ডাক্তারকে বিদেশী ডিগ্রীপ্রাপ্ত বলে মনে করেন।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল এণ্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) মতে, এগুলো কোন ডিগ্রী নয়। পাশাপাশি ওই ডিগ্রীধারীদের কি ধরনের প্রশিক্ষণ রয়েছে তা জানা নেই দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।
এদিকে সাধারণ রোগীরা ডাক্তারের এতো এতো ডিগ্রি দেখে সরল মনে ভুয়া ডাক্তারদের দেখানোর জন্য ভিড় জমায়। এ সুযোগ ভুয়া ডাক্তাররা রোগী প্রতি ফি নেন নিম্নে ৩শ’ থেকে ৬শ’ টাকা পর্যন্ত। এর সাথে প্যাথলজি টেস্টের নামেও চলে কমিশন বাণিজ্যি।
তারা রোগীকে প্যাথলজি পরীক্ষার জন্য লম্বা সিপ দিয়ে মনোনীত ক্লিনিক কিংবা ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা করার জন্য বলে দেন। নির্দিষ্ট প্যাথলজি ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা না করালে তারা রোগী দেখে না। এতে প্রতিটি টেস্টের জন্য প্যাথলজি ল্যাবরেটরি থেকে ওসব চিকিৎসক ৫০ থেকে ৬০ ভাগ কমিশন পেয়ে থাকে। এমন অসংখ্য অভিযোগ প্রতিদিনই পাওয়া যা”েছ। মূলত ভুয়া ডিগ্রী ওসব ডাক্তাররা রোগীদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত প্রতারণা করছে।
এতে রোগীরা বিভ্রান্ত এবং শারীরিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হ”েছন। দেশে ভুল চিকিৎসা বৃদ্ধি পাওয়ার এটাই অন্যতম কারণ।
অন্যদিকে দেশে চিকিৎসকদের ডিগ্রী নিয়ন্ত্রণকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান বিএমডিসি রয়েছে বেহাল অব¯’ায়। অথচ এ প্রতিষ্ঠানের অনুমতি ব্যতীত কোন ডিগ্রী ডাক্তাররা ব্যবহার করতে পারে না। কিন্তু ভুয়া চিকিৎসকদের দৌরাÍ নিয়ন্ত্রণে এ প্রতিষ্ঠানের একদিকে যেমন যথাযথ কোনো আইন নেই, অন্যদিকে নেই চিকিৎসকদের কার্যক্রম দেখার জন্য পর্যাপ্ত জনবলও।
তবে কোন রোগী অভিযোগ করলেই শুধুমাত্র বিএমডিসি জুরি বোর্ড গঠন করে ওই ডাক্তারের বির“দ্ধে ব্যব¯’া নেয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে।
এ প্রসঙ্গে বিএমডিসির সচিব ডাঃ জাহিদুল হক বসুনিয়া বলেন, বিএমডিসির এ্যাক্ট অনুযায়ী তারা বাইরে গিয়ে তদারকি করতে পারেন না। ভুল চিকিৎসার জন্য রোগী অভিযোগের ভিত্তিতে বিএমডিসি স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ১৯৯৪ সালে একজন ডাক্তার ও একজন স্বা¯’্য সহকারীর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেছে। এছাড়া বিএমডিসিতে আর কোন চিকিৎসকের বির“দ্ধে ব্যব¯’া গ্রহণ করার রেকর্ড নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বা¯’্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ শাহ মনির হোসেন দেশে ভুয়া ডিগ্রীধারী চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এটা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব বিএমডিসির।
বিএমডিসির এ্যাক্ট সংশোধন করে তার মতা বাড়ানো প্রস্তাব জাতীয় সংসদে পাসের অপেক্ষায় রয়েছে। এই আইন পাস হলে বিএমডিসি ভিজিলেন্স টিমের মাধ্যমে ভুয়া ডিগ্রীধারী ডাক্তারদের বির“দ্ধে দ্র“ত ব্যব¯’া গ্রহণ করতে পারবে।
ক্ষমতায় থাকলে নিজের চেহারা আয়নায়
Ñ খন্দকার দেলোয়ার
বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, ক্ষমতায় থাকলে আয়নায় নিজেদের দেখা যায় না। এটা বোধহয় তিনি ভুলে গেছেন। আমার জানা মতে উনি অতীতে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
এখন ভোকাল হয়েছেন। কিন্তু তিনি যে এতো ভালো ধারাভাষ্যকার ছিলেন জানা ছিল না। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) ২১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। আয়নায় নিজের চেহারা দেখতে গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে যে পরামর্শ দিয়েছেন তার সমালোচনা করে খোন্দকার দেলোয়ার এভাবে জবাব দেন।
সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি খায়র“ল হকের দেয়া বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংবিধানের কোথায় কি সংশোধন হবে তা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সংসদে বসে ঠিক করবেন।
সংবিধান প্রণয়ন ও সংশোধনের অধিকার জাতীয় সংসদের। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রধান বিচারপতি সংবিধানের বিষয়ে বিভিন্ন কথা বলেন। কিন্তু সংবিধান তৈরি করে সংসদ। এর বাইরে যে যত বড় পদেই থাকুন কারো কোন কিছু করার ক্ষমতা নেই। এ ব্যাপারে অতিউৎসাহী হয়ে কেউ কিছু বললে ধরে নিতে হবে, এর পেছনে কোনও উদ্দেশ্য আছে।
সম্প্রতি নব নিযুক্ত প্রধান বিচারপতি খায়র“ল হক শপথ গ্রহণের পর এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের রায় অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করার উপর তাগিদ দেন। সেইসাথে আদালতের রায় অনুযায়ী সংবিধানের অনু”েছদ সংশোধনযোগ্য বলেও মন্তব্য করেন।
সরকারি দলের দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির কারণে তাদের জনসমর্থন এখন শূন্যের কোঠায় দাবি করে দেলোয়ার হোসেন বলেন, দলের নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সহিংসতার ঘটনায় উ”চ পর্যায় থেকে মদদ দেয়া হ”েছ। সম্প্রতি পাবনার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কথা তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, আওয়ামী লীগের মেইন সুইচ এখন ওখানে।
ক্ষমতায় থাকার লোভে সরকার দেশের স্বার্থবিরোধী কাজ করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
প্রধান বিচারপতির বক্তব্য সংসদকে
অকার্যকর করেছে
Ñ সাকা চৌধুরী
প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়র“ল হকের বক্তব্য নির্বাহি বিভাগ এবং সংসদকে অকার্যকর করার সামিল বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ¯’ায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির বক্তব্য দেশে অসাংবিধানিক ধারাকে উৎসাহিত করবে। তিনি সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনের আলোকে সংবিধানের পুনঃমুদ্রণের জন্যে প্রধান বিচারপতির দেয়া বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। গতকাল সকালে চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জ¯’ গুডস হিলের বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সাকা চৌধুরী বলেন, মনে হ”েছ প্রধান বিচারপতির রায়ই সর্বো”চ। এ ক্ষেত্রে সংবিধান এবং সংসদ তার কাছে কোনো বিষয় নয়। প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্যের কারণে সংসদ এখন হুমকির মুখে বলে মন্তব্য করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী অভিযোগ করেন, প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়র“ল হক তার এ বক্তব্যের মধ্যদিয়ে সংবিধান, নির্বাহি বিভাগ, সংসদকে অকার্যকর করার মতো কাজ করেছেন। অথচ প্রধান বিচারপতি সংবিধান সংরক্ষণের শপথ নিয়েছেন।
কিন্তু তিনি নিজেই যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে মনে হয় তার রায়ই সর্বো”চ।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, সরকারের নির্বাহী বিভাগের অনেক কাজেও কোর্ট থেকে নির্দেশনা দেয়া হ”েছ। বিএনপির এ নেতার মতে প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সংসদের প্রতি সরাসরি অনা¯’া জ্ঞাপন করেছেন। তার এ বক্তব্যে সৃষ্ট পরি¯ি’তি উত্তরণের জন্য দলমত নির্বিশেষে সকল রাজনীতিবিদদের বসার আহবান জানিয়েছেন।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে সংবিধানের ভারসাম্য নষ্ট হবে।
সাংবিধানিক ভারসাম্য বিনষ্ট হলে শুধু সংসদ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, রাষ্ট্র পরিচালনায় নির্বাহি বিভাগের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না। দেশে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা সংসদ থেকে চলে যাবে সুপ্রিম কোর্টে।
সংবিধানে বলা হয়েছে দেশের জনগণ সকল ক্ষমতার মালিক, সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বো”চ আইন। প্রধান বিচারপতি সংবিধান রক্ষা, নিরাপত্তা ও সংরক্ষণ করার শপথ নিয়েছেন, কিন্তু তার বক্তব্যে সংবিধান লঙ্ঘনের মতো ঘটনা ঘটেছে। সম্মেলনে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রধান বিচারপতিকে মোবারকবাদ জানিয়ে বলেছেন, বিএনপি বিভিন্ন সময় সংসদ অকার্যকর বলে দাবি করে আসলেও সরকারি দল তা মানতে রাজি নয়।
কিন্তু প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্যের পর মনে হ”েছ সংসদ অপ্রয়োজনীয়। সামরিক আইনের আওতায় সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর ১১ ধারা বাতিল করা হলেও বিচারপতিদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বাতিল করা হয়নি। সামরিক ফরমানে বিচারপতিদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বাতিল না করায় প্রধান বিচারপতির কঠোর সমালোচনা করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
সংসদেরই সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা থাকা উচিত
Ñসৈয়দ আশরাফ
সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা সংসদের থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ¯’ানীয় সরকার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সংবিধান সংশোধনের কর্তৃত্ব আদালতের উপর ন্যস্ত করা হলে গণতন্ত্র ব্যাহত হতে পারে বলেও আশংকা প্রকাশ করেন তিনি।
বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে মহাজোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির আয়োজনে গতকাল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, সংবিধান সংশোধন নিয়ে নানা অভিমত রয়েছে। কারো মতে, আদালতের রায় প্রতি¯’াপন করে সংবিধান পূনঃপ্রকাশ করলেই চলবে। আবার কারো মতে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার কিংবা ক্ষমতা সংসদেরই থাকা উচিত।
তিনি বলেন, তিনি নিজেও এ মতে বিশ্বাস করেন।
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে বিচারপতিদের চাকরির বয়স বাড়ানোর বিষয়টি উল্লেখ করে ¯’ানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, অতীতে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। এসব সংশোধনী জাতির জন্য মঙ্গল বয়ে আনেনি।
তিনি বলেন, সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে কমিটি করা হয়েছে। কমিটির পূর্ণাঙ্গ মত পেলে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে। যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে সৈয়দ আশরাফ বলেন, অনেক দিন পর যুদ্ধাপরাধের বিচার করার সুযোগ এসেছে।
হাতছাড়া করলে আর কখনো এ সুযোগ পাওয়া যাবে না।
সংবিধান কমিটির ৬ষ্ঠ বৈঠক ¯’গিত
সংবিধান সংশোধনের জন্য গঠিত বিশেষ কমিটির ৬ষ্ঠ বৈঠক ¯’গিত করা হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টায় সংসদ ভবনের ২য় তলার কেবিনেট কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। বৈঠকটি আগামী ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে পারে। কমিটির চেয়ারম্যান সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সহকারী একান্ত সচিব মো. শফি উদ্দিন এ তথ্য জানান।
বৈঠক ¯’গিতের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভা রয়েছে। তাছাড়া সংসদ উপনেতা আজই দেশের বাইরে যা”েছন।
সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকে কমিটির সদস্য ছাড়াও আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি আব্দুর রশিদসহ ৮ সংবিধান বিশেষজ্ঞের উপ¯ি’ত থাকার কথা ছিল।
বিশেষজ্ঞদের মধ্যে রয়েছেন বিচারপতি সৈয়দ আমির“ল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বিশিষ্ট আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক, সিনিয়র আইনজীবী তৌফিক নেওয়াজ, মাহমুদুল ইসলাম, ড. এম জহির, আজমালুল হোসেন কিউসি ও সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিশেষ কমিটির ৫ম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ওইদিন প্রথমবারের মত সংবিধান বিশেষজ্ঞদের সাথে মতবিনিময় করেন কমিটির সদস্যরা।
ওই বৈঠক শেষে কমিটির মুখপাত্র কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সাংবাদিকদের জানান, সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের সাথে একমত হয়েছে কমিটি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, আমন্ত্রিত অতিথিদের বাইরেও যে বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন, পর্যায়ক্রমে তাদের কাছ থেকেও সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে মতমত নেয়া হবে। ওই বৈঠকে উপ¯ি’ত বিশেষজ্ঞরা কি ধরনের মতামত দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিতে ৫ম সংশোধনী নিয়ে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের রায়সহ এ দুটি রায় ও সংবিধানের মধ্যেকার সংগতি-অসংগতি নিয়ে আলোচনা শুর“ হয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন দেশে সংবিধান সংশোধনের রেফারেন্স নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এসব নিয়ে আরো আলোচনা হবে কমিটিতে।
অপরদিকে ওই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মাহবুবে আলম ও ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক জানান, তাদের সাথে কমিটির বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। আগামী বৈঠকেও তারা সকলেই উপ¯ি’ত থাকবেন। ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বলেন, এ সংবিধান কমিটি নিশ্চয়ই জাতিকে ভালো কিছু উপহার দেবে।
আদালতের দেয়া রায়ের আলোকে সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে গত ২১ জুলাই জাতীয় সংসদে ১৫ সদস্যের এ বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে এ কমিটিতে থাকার আহ্বান জানানো হলেও তারা সরকারের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।
পরে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে চেয়ারম্যান এবং সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে কো-চেয়ারম্যান করে এ কমিটি গঠন করে সরকার। গঠনের পর কমিটি গত ২৯ জুলাই প্রথম, ৮ আগস্ট দ্বিতীয়, ২৪ আগস্ট ৩য় ও ১৯ সেপ্টেম্বর ৪র্থ বৈঠক করে। এর মধ্যে ৪র্থ বৈঠকটি ছিলো বিশেষ বৈঠক। ওই বৈঠকে কমিটির সদস্য ছাড়া অন্য কেউ উপ¯ি’ত ছিলেন না।
এছাড়া ৫ আগস্ট আইন মন্ত্রণালয় ও আইন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও একটি বৈঠক করে কমিটি।
এর আগে ৪, ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বরে এ বিশেষ কমিটির চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। পরে গত ২ সেপ্টেম্বর র এসব বৈঠক ¯’গিত করা হয়। সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবনা দ্র“ত চূড়ান্ত করতেই গত ২৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত তৃতীয় বৈঠকে টানা তিন দিন চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো।
নিয়োগ পরীক্ষার ফল ¯’গিত
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল ¯’গিতের খবরে গতকাল দুপুরে সদর হাসপাতাল ও সিভিল সার্জনের বাসায় হামলা ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ চাকরি প্রত্যাশীরা।
হামলায় সদর হাসপাতালে ওয়ার্ডবয় নূর“ল ইসলাম আহত হয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাশেদ আল মামুন জানান, দুপুর ১২টার দিকে ১০-১২ জনের একদল যুবক প্রথমে সিভিল সার্জন ডা. কেরমাত আলীর বাসায় হামলা চালায়। সেখানে তাঁকে না পেয়ে হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় নুর“ল ইসলামকে কিল ঘুষি মেরে আহত করে।
এরপর তারা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসারের কক্ষে প্রবেশ করে চেয়ার টেবিল, চায়ের কাপ-পিরিচ ভাঙচুর করে অফিসটি তছনছ করে। ঘটনার সময় উপ¯ি’ত জেলা বিএমএরর সভাপতি ডা. আজিজুর রহমান, সদর উপজেলা স্বা¯’্য কর্মকর্তা ডা. দুলাল কুমার চক্রবর্তী ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মুস্তাফিজুর রহমান বিক্ষুদ্ধ যুবকদের থামানোর চেষ্টা করেন।
এ সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে এদিক ওদিক দৌড়াদড়ি করতে থাকে। হাসপাতালের চিকিৎসকরাও ভয়ে নিরাপদ ¯’ানে সরে যান। ভাঙচুরের পর ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আজিজুর রহমান ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ হাসপাতালে আসেন।
চাকরি বঞ্চিত যুবকরা অভিযোগ করেন তাদের চাকরি দেওয়ার নাম করে সরকারি দলের কতিপয় নেতা তাদের কাছ থেকে মাথা প্রতি ৩ লাখ করে টাকা নিয়েছেন। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. কেরামত আলী জানান তিনি ঢাকায় রয়েছেন।
হাসপাতালে ভাঙচুরের খবর শুনেছেন। তিনি জানান সরকার হাসপাতালের সব নিয়োগ ¯’গিত করেছে।
১ নভেম্বর থেকে সিএনজি স্টেশনে লাগাতার ধর্মঘট
সারাদেশে সিএনজি স্টেশনে আগামী ১ নভেম্বর থেকে লাগাতার ধর্মঘট ডেকেছে সিএনজি ফিলিং স্টেশন মালিকরা। গতকাল রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে সংগঠনের এক সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সিএনজি স্টেশন প্রতিদিন ৬ ঘণ্টা বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, গ্যাসের দাম না বাড়ানো, স্টেশনে ইলেকট্রিক মিটার ¯’াপনসহ সংগঠনের ৭-দফা দাবি না মেনে নেয়া হলে লাগাতার কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংগঠনের সভাপতি শফিউল ইসলাম কামালের সভাপতিত্বে সভায় সারাদেশের ১৪টি জোনের প্রায় ৫শ প্রতিনিধি যোগ দেয়।
বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ প্রতিদিন ৬ ঘণ্টা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সে সময় আন্দোলনের হুমকি দেয় সিএনজি স্টেশন মালিকরা।
সিএনজি স্টেশন মালিকরা জানান, সিএনজি স্টেশনগুলো বন্ধ থাকায় প্রথম থেকেই পরিবহন মালিক, চালক ও যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহা”েছন।
সিএনজি স্টেশনে সর্বো”চ ১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস ব্যবহার করা হয়। যা মোট উৎপাদিত গ্যাসের মাত্র ২ শতাংশ। সিএনজি স্টেশন ৬ ঘণ্টা করে বন্ধ রাখা সত্ত্বেও আবাসিক সংযোগে গ্যাসের চাপ খুব একটা বাড়েনি।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও তেমন প্রভাব পড়েনি। আর এ খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে।
স্টেশন বন্ধ রাখায় আমরা মারাÍকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হ”িছ। তাই অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই আমরা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। জানা গেছে, সারাদেশে সিএনজি স্টেশনের সংখ্যা ৫৮২টি এবং বর্তমানে দেশে ২ লাখেরও বেশি গাড়ি সিএনজি নির্ভর।
হাইকোর্টের মাজার সংলগ্ন ফটক খোলা
হাইকোর্টের মাজার সংলগ্ন প্রবেশপথ প্রায় এক বছর বন্ধ থাকার পর গতকার খুলে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মামলাজট কমানোর লক্ষ্যে এদিন হাইকোর্টের মামলা সংক্রান্ত এফিডেভিট কার্যাবলী শুর“ হয়েছে।
হাইকোর্টে মামলার এফিডেভিট এতোদিন প্রতি রোববার করা যেতো। এখন তা প্রতি শনিবার করা যাবে।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়র“ল হকের নির্দেশে আজ এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি মামলাজট কমাতে করণীয় বিষয়ে অবহিত রয়েছেন। আমরা আশা করছি, এ সংক্রান্ত বিষয়গুলো দ্র“ততম সময়ে তার নির্দেশ অনুযায়ী কার্যকর হবে।
’
আজ সকাল ৯টার দিকে হাইকোর্টের মাজার সংলগ্ন প্রবেশপথটি খুলে দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দীর্ঘ দিনের দাবি ছিলো এ পথটি খুলে দেওয়ার।
রেজিস্ট্রার আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আইনজীবী সমিতির দাবি ও বিচারপ্রার্থীদের কথা বিবেচনা করেই নতুন প্রধান বিচারপতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ’
হাইকোর্টে মামলার এফিডেভিট এতোদিন রোববার করা যেতো জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির নির্দেশে প্রতি শনিবার এই এফিডেভিট করা যাবে। এটা কার্যকর করা হয়েছে।
এতে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবী উভয় পক্ষের সুবিধা হবে। ’ গত বৃহস্পতিবার দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণের পর এ বি এম খায়র“ল হক নিজ চেম্বারে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার প্রথম কাজ হ”েছ-হাইকোর্টে মামলাজট কমানো। ’
জেএমবির ৩ সদস্য গ্রেপ্তার
নিষিদ্ধ সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)র দণ্ডপ্রাপ্ত এক শুরা সদস্যসহ তিনজনকে র্যাব সাভার থেকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেনÑজয়পুরহাটের শরীফুল ইসলাম লিখন (৩২), দিনজাপুরের শাহীনুর রহমান শাহিন (২২) এবং কুড়িগ্রামের চাইনুর রহমান বাবুল (২৪)।
র্যাব বলছে, গত শুক্রবার গভীর রাতে র্যাব-৪ ও সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা সাভারের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ বেশ কিছু জিহাদী বই ও প্রচারপত্র উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক জিয়াউল আহসান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে জয়পুরহাটের লিখন জেএমবির শুরা সদস্য। তার বির“দ্ধে ২০০৫ সালের ১৭ অগাস্ট দেশব্যাপী বোমা হামলার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ রয়েছে। বর্তমানে জয়পুরহাটের জেলা কমান্ডের শীর্ষ কোনো পদের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। গ্রেপ্তারকৃত অপর দুজনের মধ্যে শাহীন জেএমবির এহসার সদস্য এবং বাবুল গায়েবে এহসার সদস্য।
র্যাব কর্মকর্তা জিয়াউল বলেন, ‘বাবুলকে এর আগে কুড়িগ্রামে জেএমবির একটি সভা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিলো। জামিনে বেরিয়ে সে পুনরায় জঙ্গি কার্যক্রম শুর“ করেছিলো। ’
র্যাব সদরদপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক ক্যাপ্টেন ওয়ালিদ জানিয়েছেন, গতকাল দুপুর ১২টায় র্যাব সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গিদের হাজির করা হয়।
ঢাকা মহানগরীতে দুর্গাপূজা এবার
১৮৯টি পূজামণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে
এ বছর ঢাকা মহানগরীর ১৮৯টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, আগামী ৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহানগরে বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুর“ হবে।
এবারের পূজা অনুষ্ঠান সূচি হ”েছÑ ১৩ অক্টোবর বুধবার, পূর্বাহ্ন ৯টা ৫৮ মিনিটের মধ্যে ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ এবং সন্ধ্যায় ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠান। ১৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার মহাসপ্তমী। এদিন পূর্বাহ্ন ৯টা ৫৮ মিনিটের মধ্যে মহাসপ্তমী বিহিত পূজা আরম্ভ ও বস্ত্র বিতরণ।
১৫ অক্টোবর শুক্রবার মহাষ্টমী। এদিন পূর্বাহ্ন ৮টা ২৫ মিনিটের মধ্যে দেবীর মহাষ্টমী বিহিত পূজা আরম্ভ ও মধ্যাহ্নে মহা প্রসাদ বিতরণ।
রাত ৬টা ২০ মিনিট থেকে ৭টা ৮ মিনিটের মধ্যে সন্ধিপূজা।
১৬ অক্টোবর শনিবার মহানবমী। এদিন পূর্বাহ্ন ৯টা ৫৮ মিনিটের মধ্যে দেবীর মহানবমী বিহিত পূজা আরম্ভ ও সন্ধ্যায় আরতি প্রতিযোগিতা।
১৭ অক্টোবর রোববার বিজয়া দশমী। ৯টা ৫৮ মিনিটের মধ্যে দেবীর দশমী বিহিত পূজা সম্পন্ন ও দর্পণ বিসর্জন দেয়া হবে।
দুপুর ১২টায় স্বে”ছায় রক্ত দান কর্মসূচি শেষে বিকেল ৪টায় বিজয়া শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে ডাকা মহানগরের সকল মঠ, মন্দির ও পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দের সমন¦য়ে গত শুক্রবার সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আসন্ন দুর্গাপূজার প্রস্তুতিসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বীরেশ চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবুল দেবনাথ, মিলন কান্তি দত্ত প্রমুখ।
মহাÍা গান্ধী আমাদের পথ প্রদর্শক
Ñঢাবি উপাচর্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, দুনিয়া জোড়া হানাহানি, সংঘাতের এ নিদার“ন দুঃসময়ে মহাÍা গান্ধী নিঃসন্দেহে আমাদের পথ প্রদর্শক।
তিনি বলেন, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের বির“দ্ধে পরিচালিত ভারতের স্বাধীনতার আন্দোলনে যে অহিংস ধারার তিনি সূচনা করেছিলেন তা আজ বিশ্বের দেশে দেশে মানবমুক্তির আন্দোলনে অনুসৃত হ”েছ।
অহিংস আন্দোলনের প্রবর্তক শান্তিবাদী নেতা মহাÍা গান্ধীর ১৪১তম জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এক সম্প্রীতি শোভাযাত্রার উদ্বোধনকালে উপাচার্য এসব কথা বলেন। মহাÍা গান্ধী হিউম্যান সেন্টার বাংলাদেশ এই সম্প্রীতি শোভাযাত্রার আয়োজন করে।
সর্বস্তরের শান্তিকামী জনগণের অংশগ্রহণে শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্যপরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, মহাÍা গান্ধী হিউম্যান সেন্টার বাংলাদেশের পরিচালক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসান, মুফতি জুবাইদ আলী, মাওলানা মহিবুল্লাহ মোজাদ্দেদি, ঢাকার গুর“ দোয়ারা নানক শাহীর প্রধান গ্রš’ী ভাই পিয়ারা সিং, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি বীরেশ চন্দ্র সাহা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে আরেফিন সিদ্দিক আরো বলেন, আদর্শহীন রাজনীতি, চরিত্রহীন জ্ঞানের বির“দ্ধে মহাÍা গান্ধী ছিলেন সতত সো”চার।
এখানেই রয়েছে তার শ্রেষ্ঠত্ব ও বিশালত্ব। এ কারণে তিনি অনন্য।
খুলনায় এভারেস্ট বিজয়ী
মুসা ইব্রাহীমকে
নাগরিক সংবর্ধনা
এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহীমকে বিশ্বের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনের এ্যাম্বেসেডর নির্বাচিত করা হয়েছে। গতকাল তাকে দেয়া এক নাগরিক সংবর্ধনায় সর্বস্তরের খুলনাবাসী এই দায়িত্ব অর্পণ করেন। এখন থেকে প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনে সুন্দরবনের পক্ষে বিশেষ দূত হয়ে তিনি দেশে-বিদেশে সুন্দরবনের জন্য ভোট প্রচারণা চালাবেন।
খুলনা প্রেসক্লাবের ভিআইপি কনফারেন্স র“মে খুলনার সর্বস্তরের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী এবং উন্নয়ন সংগঠনের উদ্যোগে বাংলার বীর মুসা ইব্রহীমকে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হয়।
সংবর্ধনার জবাবে মুসা ইব্রাহীম বলেন, এভারেস্ট জয়ের মতোই আরো একটি বিজয় আমরা অর্জন করবো ২০১১ সালের ১১ নভেম্বর সুন্দরবনকে প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য হিসেবে নির্বাচিত করে। আর এ জন্য আমাদের প্রচুর ভোটের প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সরকারী উদ্যোগের পাশাপাশি আমাদের সকলকে সুন্দরবনের পক্ষে ভোট প্রচারণায় নামতে হবে। সুন্দরবনকে টেলিফোনে ভোট দেয়ার পথ সুগম করতে ০০৪৪২০৩৩৪৭০৯০১ নম্বরটিকে টোল ফ্রি করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সচেতন নাগরিক কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ জাফর ইমাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপ¯ি’ত ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। স্বাগত বক্তৃতা করেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন¦য় কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব লিয়াকত আলী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন- খুলনা নাগরিক ফোরামের চেয়ারপার্সন মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুল কাইয়ুম, বেগম ফেরদৌসী আলী, হায়দারগাজী সালাউদ্দিন র“নু, সেলিম রেজা, শামীমা সুলতানা শিলু, ডা. মনোয়ার হোসেন, আহমদ আলী খান, এসএম জাহিদ হোসেন, মকবুল হোসেন মিন্টু, মল্লিক সুধাংশু, শেখ মোশাররফ হোসেন, এ্যাডভোকেট রোজি।
মানপত্র পাঠ করেন সুন্দরবন সমর্থক কমিটির সমন¦য়কারী এ কে হির“ এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সদস্য সচিব উন্নয়ন কর্মী রফিকুল ইসলাম খোকন।
এর আগে খুলনা সিটি কর্পোরেশন, সুন্দরবন সমর্থক কমিটি, বাংলাদেশ, বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন¦য় কমিটি, খুলনা প্রেসক্লাব, শিশু ফাউন্ডেশন, যুব নাগরিক ফোরাম, আইনজীবী ফোরাম, সনাক, ইলা, সুন্দরবন একাডেমি, আমাদের গ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতি, পেশাজীবী এবং উন্নয়ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া দিয়ে এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহীমকে স্বাগত জানানো হয়।
শিগগিরই রংপুরে বেসরকারী
আরডিআরএস বিশ্ববিদ্যালয়ের
কার্যক্রম শুর“ হ”েছ
দেশের অনগ্রসর উত্তরাঞ্চলে আন্তর্জাতিক মানের উ”চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শীঘ্রই রংপুরে বেসরকারি আরডিআরএস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুর“ হ”েছ। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ হওয়ায় সম্পর্ণ অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাজধানীর বাইরে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ডিসেম্বর নাগাদ শিক্ষা কার্যক্রম চালু হবে বলে আশা করা হ”েছ।
বিশ্ববিদ্যালয়টি চালু হলে উত্তরাঞ্চলে উ”চশিক্ষা বিস্তারে নব-দিগন্তের সূচনা হবে। পাশাপাশি এর কার্যক্রমকে ঘিরে সমগ্রঅঞ্চলে আর্থ-সামাজিক জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
উত্তরাঞ্চলে পর্যাপ্তসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয় না থাকায় প্রতিবছর অসংখ্য দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের হাজার হাজার শিক্ষার্থী উ”চশিক্ষা লাভের সুযোগ বঞ্চিত হয়। সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগামী শিক্ষাবর্ষের প্রথম সেমিষ্টারে প্রথমবারের মত ছ’টি বিভাগে কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিংসহ মোট ১০টি বিষয়ের প্রত্যেকটিতে ৫০ জন করে মোট পাঁচশ’ শিক্ষার্থী ভর্তির প্রস্তুতি গ্রহন করেছে।
এতে প্রাথমিক পর্যায়ে বছরে তিনটি সেমিমষ্টারে মোট দেড় হাজার ছাত্র-ছাত্রী অনার্স কোর্সে ভর্তির সুযোগ পাবে। আগামী বছরগুলোতে যুগোপযুগী চাহিদা অনুযায়ী বিভাগ ও বিষয়ের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পর্ণ আবাসিক সুবিধাসহ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর ভর্তির ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।