দীর্ঘ এক পথ শেষে আমি আজ পথের কিনারে
নাটোরের আলোচিত সাব্বির আহমেদ গামা হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ড পাওয়া ২০ আসামির সাজা মওকুফে রাষ্ট্রপতির দফতর কোন বিধিবিধান মেনে চলেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ফাঁসির সাজা পাওয়া ২০ আসামির দণ্ড মওকুফের কোন অফিস আদেশ রাষ্ট্রপতির দফতরে সংরক্ষণ করা হয়নি। এ নিয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ২০০৬ সালের ২৪ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফিরোজ আলম গামা হত্যা মামলার রায়ে ২১ জনকে ফাঁসির আদেশ দেন। আসামিরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে।
এই আপিলের শুনানির আগেই ২০ আসামি গত ১৫ এপ্রিল কারাগার থেকে আপিল প্রত্যাহার ও রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আবেদন করে। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে ২০ আসামির ফাঁসির দণ্ড মওকুফ সংক্রান্ত আদেশে সই করেন। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত সারসংক্ষেপ পাঠানো হয় রাষ্ট্রপতির কাছে। নিয়ম রয়েছে, এ ধরনের কোন সারসংক্ষেপ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হলে তা নোটিংয়ের মাধ্যমের রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। কিন্তু গামা হত্যা মামলায় ২০ আসামির সাজা মওকুফের ক্ষেত্রে তা অনুসরণ করা হয়নি।
ফলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো সারসংক্ষেপটি কিভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে তা সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের কোন কর্মকর্তাই জানেন না। রাষ্ট্রপতির সাজা মওকুফ করলে তার একটি আদেশের কপি রাষ্ট্রপতির দফতরে সংরক্ষিত থাকে কিন্তু গামা হত্যার আসামিদের সাজা মওকুফ সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির কোন আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে সংরক্ষণ করা হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নাটোর নলডাঙ্গা রামশার কাজিপুর বাজারে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের গুলি ও চাপাতির আঘাতে খুন হন সাবেক চার দলীয় জোট সরকারের উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর ভাতিজা সাব্বির আহমেদ গামা। এই ঘটনায় নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম তালুকদার বাদী হয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এসএম ফিরোজসহ ১৬ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ২১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে।
এরপর মামলাটি নাটোরের জেলা দায়রা জজ আদালতে বিচারের জন্য আসে। পরে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের পর মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। ২০০৬ সালের ২৪ আগস্ট সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক ফিরোজ আলম ২১ জন আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেন। রায় ঘোষণার পর পলাতক আসামিদের মধ্যে আনিসুর রহমান, এসএম ফিরোজ, ফয়সাল হোসেন, সেন্টু শাহ, শাহজাহান শাহ, জাহেদুল ইসলাম, বাদল শাহ, ফজলুল হক শাহ ও ফারুক হোসেন গত ১২ এপ্রিল এবং ২১ এপ্রিল অপর পলাতক আসামি আবদুল জলিল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। অন্য আসামিরা বিভিন্ন সময়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।
আকবর হোসেন নামে এক আসামি এখনো পলাতক। কারাগারে থাকা অবস্থায় ২০ জন আসামি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উচ্চ আদালতে আপিল প্রত্যাহার ও ক্ষমা চেয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবরে আবেদন করে। রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করার পর তারা গত ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা ও রাজশাহী কারাগার থেকে মুক্তি পান। আসামিদের মধ্যে ১০ জন ঢাকা ও অপর ১০ জন রাজশাহী কারাগারে আটক ছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।