ভালো ..তবে কালো
প্রিন্স চার্লস না প্রতিভা পাতিল?
অভিনব বিন্দ্রা না সুশীল কুমার?
কিছুদিন তর্ক-বিতর্কের পর সব প্রশ্নেরই উত্তর জানা হয়ে গেছে। কারণ পাকা সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। গেমস শুরু হতে আরো কয়েক দিন লাগলে হয়তো এ তর্ক চলতই। চলার সুযোগ নেই, আজ ১৯তম কমনওয়েলথ গেমসের উদ্বোধন আর যথারীতি ব্রিটিশ রাজ পরিবারের উত্তরসূরি প্রিন্স চার্লসই উদ্বোধনের ঘোষণা দেবেন। তাহলে প্রতিভা পাতিলের ভূমিকা? ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাঁর উপস্থিতি থাকবে চার্লসের পাশে।
তবে ভারতের পতাকা তো থাকবে ভারতীয়দের হাতেই। সেটা নিয়েও সংবাদ সম্মেলনে দুই কর্তা বক্তব্য দিয়েছিলেন দুই রকম। একদল নাকি চেয়েছিল বিশ্বের নাম্বার ওয়ান কুস্তিগির সুশীল কুমারের হাতে তেরঙ্গা পতাকা দেখতে, অন্য দলের পক্ষ অভিনব বিন্দ্রার দিকে। শেষ পর্যন্ত অলিম্পিকের সোনাজয়ী শ্যুটার অভিনব বিন্দ্রাই টিকে গেছেন, তাঁর হাতেই থাকবে মার্চপাস্টের পতাকা।
বিতর্ক শেষে জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামও নতুন সাজ নিয়ে তৈরি হয়ে আছে ১৯তম কমনওয়েলথ গেমসকে সব সুষমা দিতে।
ভারতকে বিশ্ববাসীর কাছে নতুন করে উপস্থাপন করতে। এ ভারতের অনেক আছে, ক্রিকেট, প্রযুক্তি ও বলিউডের কথা অনেকের জানা। এবার জানাবে তারা ঐতিহ্য-সংস্কৃতির কথা, অঞ্চলভেদে যার নানান বৈচিত্র্য। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে শুরু এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে তারই প্রামাণ্যচিত্র আর সেটাকে বলা হচ্ছে 'সেভেন ওয়ান্ডার্স'। সাতটি ভাগে বিভক্ত এ অনুষ্ঠানের শুরু হবে 'রিদম অব ইন্ডিয়া' দিয়ে, এটা হবে পাঞ্জাব, কেরালা, মনিপুর, মেঘালয়, অন্ধ্র প্রদেশ ও কেরালার ঢোল-বাদ্যের প্রদর্শনী, যার মধ্যে থাকবে ওসব এলাকার মানুষের জীবন-কথা।
এর পরের অংশের নাম 'গ্রেট ইন্ডিয়ান জার্নি'। মাঠের ভেতরই তৈরি হবে একটা ট্রেন জার্নির আবহ, তাতে আলো পড়বে দেশের খেটে খাওয়া মানুষের জীবিকার ওপর। দুধওয়ালা থেকে ফেরিওয়ালা, কামার-কুমার থেকে রাস্তার সার্কাসম্যানরাও জীবন্ত হয়ে উঠবে এ ট্রেন জার্নিতে। সাধারণ মানুষের কষ্টগাথার ওপর আসবে আনন্দময় জীবনের ছবি। কয়েক শ শিল্পীর ফুলেল নাচ, তা মুদ্রিত হবে উত্তর থেকে দক্ষিণ ভারতের নাচের নানা মুদ্রায়।
থাকবে ভারতীয় যোগাসনের প্রদর্শনী, ২০০০ হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী এ যোগের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তির কথা জানিয়ে যাবে। থাকবে রাজস্থানের পাপেট শো।
এসব দেখিয়েই কমনওয়েলথ গেমসকে ধন্য করার জন্য ভারত পুরোপুরি প্রস্তুত। অথচ এ গেমস কিন্তু ব্রিটিশ রাজ পরিবারের পরম্পরা বহন করে, মনে করিয়ে দেয় বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের শাসন ও শোষণের স্মৃতি। কী এক অদ্ভুত ব্যাপার, সেই নাগপাশ থেকে বেরিয়েও কিন্তু ভারত কমনওয়েলথ গেমস আয়োজন করছে সাড়ম্বরে।
এর একটি অন্য রকম ব্যাখ্যা হতে পারে, একটি গেমসের নামে সারা বিশ্বের কাছে নিজেদের উন্নয়নের বার্তা বইয়ে দেওয়া। এবার যেমন তারা বলছে, ৭১ দেশের মধ্যে ভারত দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে। অনেক নামি-দামি অ্যাথলেট আসেনি, এ ফাঁকে স্বাগতিকরা গতবার চতুর্থ স্থান থেকে উঠে আসবে দ্বিতীয় স্থানে। সেখানে তাদের বড় সহায় শ্যুটিং, সব কয়টি ইভেন্টেই সোনা তাদের ঘরে যোগ হবে বলে বিশ্বাস।
সে রকম হলে বাংলাদেশের স্বর্ণযোগ কোথায়? রত্না-আসিফদের ওপর যে আশা নিয়ে বসে আছে বাংলাদেশ অলিম্পিকের কর্মকর্তারা।
অবশ্য আর্চার ইমদাদুল হক মিলনও আছেন। মিলন অপ্রত্যাশিত কিছু মিলিয়ে দিলেই হবে, এক সোনায় বাংলাদেশ গর্ব বুকে নিয়ে ফিরতে পারবে দেশে। জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের কাছে সেই প্রত্যাশা রেখেই শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের ১৯তম কমনওয়েলথ গেমসের কঠিন পরীক্ষা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।