আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোলেস্টেরল নিয়ে কিছু কথা

আতাউর রহমান কাবুল

আতাউর রহমান কাবুল কোলেস্টেরল কী? কোলেস্টেরল হলো এক ধরনের পিচ্ছিল চর্বি জাতীয় জিনিস যা নতুন কোষ তৈরি ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হয়। যদি কেউ উচ্চ কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার বা বেশি মাত্রায় স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার খায়, কিংবা তার শরীরের ধারা এমন যে দেহ বেশি কোলেস্টেরল তৈরি করে, তাহলে তার শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকবে। কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে ধমনী বা রক্তবাহী নালিগুলো শক্ত হয়ে যায়। এটি ঘটে যখন চর্বি এবং ক্যালসিয়াম ধমনীর ভেতরে জমতে শুরু করে। জমতে জমতে এরা ধমনীর মধ্য দিয়ে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি শুরু করে।

অন্তিম ক্ষেত্রে চলাচল রুদ্ধ করে দেয়। এর ফলে করোনারি আর্টারি রোগে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। দেহে কোলেস্টেরল আসে দুটি জায়গা থেকে : আমাদের খাবার থেকে আর দেহের যকৃত যা সৃষ্টি করে তার থেকে। দেহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় আশি ভাগ কোলেস্টেরলই যকৃত সৃষ্টি করতে পারে। কোলেস্টেরল বেশি কথাটার অর্থ কী? রক্ত পরীক্ষা করে কোলেস্টেরলের পরিমাণ মাপা যায়।

সেখান থেকে বোঝা যায় কোলেস্টেরলের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত কিনা। কোলেস্টেরল মাপা হয় প্রতি ডেসিলিটারে কত মিলিগ্রাম আছে এই হিসেবে (mg/dL)। অনেক সময় প্রতি লিটারে কত মিলিমোল আছে (mmo/L) সেই হিসেবেও মাপা হয়। এলডিএল এবং এইচডিএল কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসেরাইডস কী? কোলেস্টেরল রক্তের মধ্যে বাহিত হয় প্রোটিনের সঙ্গে যুক্ত অবস্থায়। এই সংযুক্ত কোলেস্টেরল-প্রোটিনকে বলা হয় লিপোপ্রোটিন।

লিপোপ্রোটিনকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়—বেশি ঘনত্বের (high density), কম ঘনত্বের (low density) বা খুব কম ঘনত্বের (very low density)। লিপোপ্রোটিন কোন শ্রেণীতে পড়বে তা নির্ভর করে প্রোটিনের তুলনায় চর্বির পরিমাণ কতটা। যদি প্রোটিনের তুলনায় চর্বি বেশি থাকে তাহলে তাকে low-density lipoprotein (LDL) কোলেস্টেরল বলা হয়। খউখ হলো ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল, কারণ এটি রক্তবাহী ধমনীর দেয়ালে জমে নালিপথ রুদ্ধ করে দিতে পারে। LDL-এর পরিমাণ কমাতে পারলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ইত্যাদির সম্ভাবনা কমানো যায়।

High-density lipoprotein cholesterol (HDL) কে অনেক সময় বলা হয় ‘ভালো’ কোলেস্টেরল, কারণ এটি রক্তবাহী নালিতে কোলেস্টেরল না জমতে সাহায্য করে। এতে ফ্যাটের তুলনায় প্রোটিন বেশি থাকে। HDL কোলেস্টেরল পরিমাণ বেশি থাকাটা যাদের হার্টের রোগী বা যাদের হার্টের অসুখের সম্ভাবনা আছে তাদের পক্ষে ভালো। ট্রাইগ্লিসারাইডস হলো আরেক ধরনের চর্বিজাতীয় পদার্থ যেটি খুব কম ঘনত্বের লিপোপ্রোটিনের মাধ্যমে রক্তে প্রবাহিত হয়। রক্তে খুব অল্প পরিমাণেই ট্রাইগ্লিসারাইডস থাকে, বেশিরভাগই জমা থাকে টিস্যুর মধ্যে।

LDL যখন বেশি আছে, তখন ট্রাইগ্লিসারাইডসও বেশি থাকলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। কোলেস্টেরল কেন বেশি হয়? নানা কারণে কোলেস্টেরল বেশি হতে পারে; কিছু কারণ নিয়ন্ত্রণযোগ্য, কতগুলো নয়। যেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেগুলো হলো—অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান, এক্সারসাইজের অভাব, বেশি কোলেস্টেরল ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার। এগুলো বাজে কোলেস্টেরল (LDL) ও ট্রাইগ্লিসারয়েডকে বাড়ায়, HDL-কে কমায়। যেগুলো নিয়ন্ত্রণাধীন নয়, তার মধ্যে একটি হলো জন্মগত সমস্যা, ‘লিপিড ডিসঅর্ডার’।

এছাড়া বয়স, পুরুষ না স্ত্রী—এগুলোরও কোলেস্টেরলের ওপর প্রভাব আছে। যেমন—২০ বছরের পর থেকে দেহে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। প্রথম দিকে পুরুষদের কোলেস্টেরলের মাত্রা নারীদের থেকে বেশি থাকে; কিন্তু ৫০ বা তার কাছাকাছি বয়স থেকে নারীদের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। বয়ঃসন্ধির পর নারীদের ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা পুরুষদের থেকে সাধারণত বেশি থাকে ইত্যাদি। এছাড়া কোলেস্টেরলের ওপর ওষুধেরও কিছু প্রভাব আছে।

রক্ত পরীক্ষা করে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিরূপণ করা যায়। যদি কোলেস্টরলের পরিমাণ অত্যধিক হয়, তাহলে ডাক্তাররা জীবনযাত্রা পরিবর্তন করার (যেমন—কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা, ধূমপান কমানো বা বন্ধ করা) নির্দেশ দেন। শুধু জীবনযাত্রার পরিবর্তন কোলেস্টেরল না কমাতে পারলে ডাক্তাররা ওষুধ ব্যবহার করেন। লেখাটির সূত্র: Click This Link

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।