আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চোরের উপর বাটপারি



আমাদের দেশে সব রুইকাতলা এটা করে । আমি রুই কাতলা তো নয়ই চুনোপুটি হইতেও ভয় লাগে। জানেন তো এনথ্রাক্স আতংকে সব বাজারে আগুন। চুনোপুটিও আজকাল আনেক দামি। ঘটনাটা ছোট বেলার, হেমন্ত কাল ,গ্রামে তখন পুরোদমে ধান কাটা মাড়াই চলছে।

আমার মা গ্রামের বাড়ি গেছেন ধান মাড়াই করার জন্য । আর এ মৌসুমে ধানের দাম কিছুটা কম থাকে। তাই মা কিছু বাড়তি টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন ধান কিনে রাখবেন বলে । একদিন মা দেখলেন তার টাকা থেকে ৫০০ টাকা হাওয়া। অনেক খুঁজেও পাওয়া গেল না ।

আর বাড়িতে সবাই নিজের মানুষ কে নেবে? অবশেষে মা টাকাটা পাওয়ার আশা ছাঢ়লেন ভাবলেন তার হিসেবে মনে হয় ভুল হয়েছে। কিন্তু টাকাটা নিয়েছিল আমারই এক মামাতো ভাই যে আমার থেকেও বয়েসে ৩ বছর এর ছোট। টাকাটা সে নিয়েছে বটে কিন্তু ওত ছোট মানুষ খরচ করতে পারেনি। কিছুদিন পর ও যখন আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে তখন আমাকে ব্যপারটা জানাল। কিন্তু ওযে টাকাটা চুরি করেছে সেটা আমাকে বলেনি।

আমাকে বলেছে টাকাটা সে ঘুঘু পাখির বাসায় পেয়েছে। ছোটবেলায় গ্রামে এমন কুসংস্কার থাকায় আমিও ওর কথা বিশ্বাস করেছিলাম। তো এবার দুজন মিলে নেমে পরলাম টাকাটা কাজে লাগানোর অভিযানে । আমাদের থানা শহরে বাসা হওয়ায় আমাদের বাসার পাশের অনেক দোকানি আমার পরিচিত ছিল। পরিচিত একজন এর কাছে আগে টাকাটা ভাংতি করে নিলাম।

এরপর দুজন মিলে নামলাম টাকাটা খরচ করার কাজে । মাথায় যা যা আসে আমরা খেলাম আইসক্রিম ,বিস্কুট, চানাচুর, লজেন্স কিন্তু ৫০ টাকার বেশি শেষ করতে পারলাম না। এরপর হোটেলে গেলাম কোকা কোলা খাব বলে । আমি এর আগে কোনদিন কোক খাই নি আর ওতো নয়ই । কোক খেতে বসে সেকি বিপত্তি ।

বুদ বুদ ওটা কোক আমারা গলা দিয়ে নামতে চায় না কিছুতেই। আমাদের অবস্থা দেখে একজন ওয়েটার লবণ এনে দিল । ওমা! লবণ দিলে কমবে কি আরও বেশি বুদ বুদ আসতে লাগল আর কোকের স্বাদটা হল বিশ্রি। আনেক চেষ্টা করেও দু গ্লাস কোক এর দুই চুমুক এর বেশি গিলতে পারলাম না। কি আর করা অগত্য বিল দিয়ে বের হয়ে এলাম।

আরও থাকল প্রায় ৪০০ টাকা । কি করা যায়? । আমি বললাম আয় আমারা টাকাটা জমিয়ে রাখি। কথামত আমার মাটির ব্যংকে রাখা হল । ওর সাথে আমার চুক্তি হল সমান সমান করে আমরা ভাগ পাব টাকাটার।

এরপর আমাদের সেকি দম্ভ আমরা মাকে বলি আমরা এটা কিনব ওটা কিনব। অবশেষে মা তদন্তে নামলেন। তদন্তে অচিরেই থলের বিড়াল বেড়িয়ে এল । ধরা পরল চোর সাথে আমিও চোরের মাল ভাংগার দায়ে। শাস্তি স্বরুপ কানমলা উত্তম মধ্যম খেতে হল মার কাছে।

পরে ও টাকাটা দিয়ে মা আমাদের দুজন কে দুটো শার্ট কিনে দিলেন । আমাদের তখন কী যে আনন্দ !। কথাটা মনে উঠলে আজও আমার হাসি পায়। ভাবি কি বাটপারটাই না ছিলাম আমি......

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.