আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রবীন্দ্রনাথের "হৈমন্তীর" ডিজিটাল সংস্করন ----------দি "হ" (শেষ অংশ)

যে মুখ নিয়ত পালায়......। ।

রবীন্দ্রনাথের হৈমন্তী ছোটগল্পের দিজিটাল সংস্করন দি হ। যারা প্রথম অংশ পড়েন নাই তারা পড়ে নিবেন এখান থেকেরবীন্দ্রনাথের "হৈমন্তীর" ডিজিটাল সংস্করন ----------দি "হ" (১) এমন সময় কোন এক উতসব উপলক্ষে দেশের কুটুম্বরা আমাদের বাড়িতে আসিলেন। তাহারা কেমন করিয়া যেন হ এর পূর্ব প্রেমকথার কিছু কিছু জানিতে পারিয়াছিলেন।

তাহাদের মধ্যে কানাকানি শুরু হইয়া গেল। এক দিদিমা বলিয়া উঠিলেন, অহ মাই গড! নাতবউয়ের নাকী ছয় ছয়টা বি এফ ছিল। আর এক দিদিমাশ্রেনীয়া বলিলেন, বল কি! আর তোমার মাত্র দুইটা বিএফ ছিল বলে বিয়ে দিতে কত ঝামেলা হয়েছিল। আমাদের অপু তাহলে ভাগ্যবান। বলিয়া উচ্চস্বরে তাহারা সকলে হাসিয়া উঠিলেন।

আমার মা খুব জোরের সহিত বলিলেন,এসব মিথ্যা কথা। বউমার আসলে বি এফ ই নাই। থাকলে একটা হয়ত ছিল। এসব তো এখনকার মেয়েদের একটা-আধটা থাকেই। দিদিমারা বলিলেন, আমরা যে ফেইসবুকে দেখলাম ওর বি এফ দের সাথে ছবি।

এসব কি মিথ্যা? মা বলিলেন, ফেইসবুকে ফেইক একাউন্ট দিয়ে আজকাল কত কি হয়! কথাটা সত্য কিন্তু হ এর একাউন্ট টা ফেইক ছিল না। প্রবীনেরা বলিলেন, ফেইসবুক কি আমরা আজ থেকে ইউজ করি?আমরা বুঝতে পারব না কোনটা ফেইক একাউন্ট আর কোনটা ঠিক। এই লইয়া জোর তর্ক এমনকি বিবাদ হইয়া গেল। হঠাত সেখানে হ আসিয়া উপস্থিত। কোন এক দিদিমা জিজ্ঞাসা করিলেন, নাতবউমা তোমার বি এফ কয়টা ছিল বল তো? মা তাহাকে চোখ টিপিয়া ইশারা করিলেন কিন্তু হ এসব পাত্তা না দিয়ে বলিল, বি এফ তো স্কুল লাইফে ছিল দুইটা,কলেজ লাইফে তিনটা আর ভার্সিটি লাইফে সবমিলিয়ে সাতটা হবে।

তবে নামগুলো ঠিক বলতে পারব না গ্রান্ড মম। আমার ফেইসবুকের নোটে আছে দেখে নেবেন। দিদিমারা পরস্পর গা টেপাটেপি করিতে লাগিলেন। মা ব্যস্ত হইয়া বলিলেন, তুমি তো জানো না। হ কহিল, আমি জানিনা তো কে জানে আম্মাজান?ওরা অনেকে এখনো আমার গুড ফ্রেন্ড।

আপনি ইচ্ছা করলে একদিন দাওয়াত করে খাওয়াতে পারেন। তবে সবাইকে পাবেন না। দুইজন সুইসাইড করেছে শুনেছি। বধূর নির্বোদ্ধিতায় মা রাগিয়া উঠিয়া বলিলেন, তুমি তো সব জানো। তোমার বাবা যে বলিলেন নাই।

হ যেন শ্বাশুরীর নির্বোদ্ধিতায় ততোধিক চমকিয়া উঠিল। সে অট্টহাসিতে সারা ঘর আলোকিত করিয়া কহিল, আম্মাজান আপনি বিরাট আজিব মহিলা। বাবার কথা বিশ্বাস করেছেন। উনি কথায় কথায় মিথ্যা বলেন। মিথ্যা বলা উনার স্বভাব।

তারওপর তখন তার ছিল কন্যাদায়। আমার একটা গতি করার জন্য তার মাথা ছিল আউলা। আম্মাজানকে কি বোঝাতে পেরেছি? এরপর মা দ্বিরুক্তি না করিয়া প্রস্থান করিলেন। ঝরের বেগে সারা পাড়ায় রটিয়া গেল হ এর কথা। তাহার শ্বশুর মশাই তাকে ডাকিয়া বলিলেন, আইবড় মেয়ের হাজারটা বিএফ,এটা কি খুব একটা গৌরবের কথা,যে সবাইকে বলিয়া বেড়াইতে হইব।

এই কথায় হ যেন ফাটিয়া পড়িল। সে বলিল, আব্বাজান হাজারটা না মাত্র সাতটা। আগের গুলা যোগ করলেও হয় মাত্র বারোটা। হাজারটা হতে এখনো ৯৮৮ টা বাকী। আর হাজারটা বিএফ অতি গৌরবের বিষয়।

আপনি কয়টা মেয়ে দেখাইতে পারিবেন যে হাজারটা বি এফ আছে? এমন অবস্থা চলিতে ছিল। আমাকে প্রতিরাতে হ এর জন্য ফ্লেক্সি করিতে যাইতে হত,সারারাত তাহার কন্ঠস্বর ভাঙ্গা রেডিওর মত বাজিতে থাকিত। আমি একবার ভাবিলাম একখানা রোমান্টিক বই আনিয়া দিয়া তাহার মন পাইবার চেষ্টা করিব। বাজার হইতে “রোমিও এন্ড জোলিয়েট” কিনিয়া আনিলাম। তাহাকে দিতেই সে ছুড়িয়া ফেলিয়া দিল।

সঙ্গে এও শুনাইয়া দিল, হাড় কিপটা এইগুলা কি আনচস?দূর দূর। মাথা গরম হইয়া গেল। সেইদিন তাহার মাথা গরম ছিল অনেকক্ষন। তারপর থেকে আমি আর তার সাথে ভাব ভালবাসা করিতে যাই নাই। তারপরের কথা অনেক।

এত কথা বলিয়া লাভ নাই। হ এর মার্কেটিং এর জন্য টাকা যোগাইতে যোগাইতে আমি প্রায় ফতুর হবার অবস্থায় উপনিত হইলাম। বাড়ির সকলের সাথে তাহার ব্যবহার ছিল অতি রুঢ়। কেহ উনিশ হতে বিশ কিংবা পান হতে চুন খসালেই তাহার উপর মেঘগর্জনে হ গর্জিয়া উঠিত। কাজের মেয়েরা তাহার হাতের মার খাইয়া বাড়ি ছাড়িল।

তাহার শ্বাশুড়ি কাজ করিতে গিয়া আচার খাইয়া পড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি হইয়া রহিলেন। হ তাহাকে একবারো গিয়া দেখিল না। তাহার শ্বশুর ও একদিন গ্রামের বাড়িতে বেড়াইবার নাম করিয়া গ্রামে গিয়া বসিয়া রহিলেন। আমি অতিস্ট হইয়া থাকিলাম অথবা থাকিতে বাধ্য হইলাম। এই কিছুদিন আগে অফিস হইতে ফিরিয়া আসিয়াছি।

ঘরের মধ্যে হ ছিল না। শান্তিমত বসিবার উদ্দ্যেশে আয়োজন করিয়া বসিতে গেছি এমন সময় মোবাইলে এক খানা এস এম এস আসিল। আমি মহব্বত আলীর লগে চলিয়া গেলাম। ভাল থাকিও। আর আমারে আজ রাতে ৫০০ টাকা ফ্লেক্সি দিতে বুলিও না।

গুড বাই বেইবি। হ”

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।