নিঃস্বার্থ মন্তব্যকে ধন্যবাদ, সাময়িক ভাবে আমি মন্তব্যে নেই
একটু আস্তে বন্ধু - তর্জনীর ডগায় ব্যান্ডেজ নিয়ে কীবোর্ডে!
পেন্সিল শার্পনার না থাকায় এন্টিকাটারে গ্রাফাইট খুলতে গিয়ে
আ-নখাগ্র রক্তে লাল হয়েছে - অবিশ্বাস্য দু:খী সেই রক্তের ফোঁটা
আমি ভীষণ ব্যথাকাতুরে, ইস্ত্রি করা গরম কাপড়ে পুড়ে যাই, পায়ে খেজুর কাঁটা বিঁধলে হাবিয়ার বহ্নিশিখায় জ্বলে জ্বলে যাই, ঘুম আসে না
অথচ টেলিভিশনে জলপাই ট্যাংকের সামনে মানুষগুলোকে বারুদ বারুদ খেলতে দেখে তো দু:খী মনে হয়না। লেমনেড হাতে খবর শুনি, ছন্দোময় গোলাগুলিতে তন্দ্রা পেয়ে যায়। গাজা উপত্যকা অথবা দ্বীপান্তরী কয়েদীদের মুখে কাপড় বেঁধে থ্যাতলে দিতে দেখি। পত্রিকার চার রঙা ছবিতে ওদের একদম দু:খী দেখায় না। অথচ গালের ব্রন লাল হলে ব্যথায় আমার চোখে পানি আসে।
অন্যরা হয়তো পায় বা পায়না, আমার ব্যথাগুলো কিন্তু অভিনয় নয়। দরজার কপাটে ভুলে আঙুল কেচে গেলে চিলিক দেয়া ব্যথাটা জল্লাদের শিরোচ্ছেদের চেয়ে বেশী।
পত্রিকায় বাস উল্টে যায়, হারিক্যান, ঝড়ে, সুনামীতে পেট ফোলা দেহ ভেলার মতো ভেসে আসে। প্লেন ক্র্যাশে অথবা সহসা অগ্নুৎপাত, এত মৃত্যু তবুও তো কোথাও কারো কষ্ট নেই। তবে আমি কি কষ্টের জন্য স্পেশাল?
ভ্যানিলা দড়িতে নলি ঝুলিয়ে দিলে, পুরোহিতেরা পাপীষ্ঠকে পাথরে টেনে হিঁচড়ে নিতে বললে, অথবা বেত্রাঘাতে পিঠের তালুতে রক্তের ট্রেন লাইন এঁকে দিলে কি কারো কষ্ট হয়? জলে চেপে শ্বাসরোধ অথবা এসিডে কাজল চোখ ঝলসানো রুটি হলেও আমার কষ্টের কাছে তা খুব ম্লান।
চাঁদাবাজীদের কোন্দলে প্রতিপক্ষ ডান উরু তুলে নেয়, ব্যথার্ত হলেও সে কি সুন্দর শুয়ে আছে হোগলার চাটাইয়ে। ছবি দেখেই মনে হয়, আমার পেটের ভেতর যে ক্ষুধা হয়, যা পেলে ফ্রীজের সব খাদ্য ওভেনে জুড়িয়ে খেয়ে ফেলি, সেই কষ্টের কাছে তা কিছু না। আর যে পল্টি খাওয়া মাংসপিন্ডটা পঙ্গুত্ব বেচে এক পয়সা কেনে, তার কষ্টটা পাশে রিবক কেডস পরে হেটে গেলে টের পাই না। আমি ছাড়া অন্যদের যন্ত্রণা হয় না কেন?
রান্না ঘরের চাটাইয়ে ঘুমন্ত ১০ বছরের দাসীটি ক্রমাগত কাজ করেও ক্লান্ত হয় না। বিছানায় ছাড়পোকা অথবা আরশোলা রাতে শরীরে ঘুরে বেড়াতে থাকলেও নাক ডাকানোর নিয়ম।
আর মেয়েটা সৌভাগ্যবতী যে এক বেলা জাউ খেতে দিলেও সুখে থাকে। গৃহকর্তীর মসৃণ হাতের চড় অথবা পিঠে জ্বলন্ত ফুঁকনি দিয়ে পিটালেও আমার মতো কষ্ট পায়না।
আমার মন খারাপ হয়, শরীরও কষ্টে জারে জার। পৃথিবীতে কষ্ট শুধু এই দেহতেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।