তুমি কি বোঝো না তার তিরিশ বছর কালকুমারী থাকার অভিশাপ?
আবুল হাসানের কবিতার এই কথার মতোই আমাদের সমাজ নিরন্তর অভিশাপ আর অভিযোগের তির তুলে ধরে থাকে ৩০ বছরের কুমারীদের দিকে। কেন হয়নি বিয়ে? এই এত বয়সেও? নিশ্চয় কোনো পছন্দটছন্দ ছিল! হয়তো কোনো ব্যর্থ প্রেমকাহিনি আছে পেছনে! কিংবা হয়তো ভারী নাক উঁচু। দুই পাতা লেখাপড়া শিখে ধরাকে সরা জ্ঞান করছে! গড়পড়তা পুরুষদের পছন্দ হচ্ছে না আর। নাকি আরও গোপন বা মারাত্মক কোনো বিষয় আছে? প্রশ্ন আর প্রশ্ন। পড়ালেখা শেষ করা অবিবাহিত নারীদের চারপাশে এসব প্রশ্ন প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ায়।
সেশনজটের এই যুগে যে মেয়ে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে একটা জুতসই চাকরি বা কাজ জুটিয়ে নিজেকে গোছাতে গোছাতে আটাশ, উনত্রিশ বা তিরিশ পার করে দিলেন, তাঁকে সমাজের করুণাই হয় কেবল। এত দিনেও একটা সুপাত্র জোটেনি বলে তাঁর অর্জন আর সাফল্য প্রায় ধূলিসাৎ হতে বসে যেন। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, সহকর্মী—সবাই কোমর বেঁধে নামেন এই অগ্রহণযোগ্য সমস্যার একটা সমাধান করতে। ছেলেদের ক্যারিয়ারে সাফল্য আর পদের ঊর্ধ্বগতি তাঁদের বিয়ের বাজারে মূল্যবৃদ্ধির সূচক মেয়েদের বেলায় ঠিক উল্টো। সাফল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে নিম্নগতিতে নামে বিয়ের সম্ভাবনা।
সবকিছু ভালোই যদি থাকবে, তবে কেন বিয়ে হয়নি এত দিন?
কুড়িতেই বুড়ি?
একসময় এই বাংলায় একটা প্রবাদ প্রচলিত ছিল—কুড়িতেই বুড়ি। বয়স কুড়ি পেরোলেই ভ্রু কুঁচকে তাকাত সমাজ, রাতের ঘুম হারাম হয়ে যেত মেয়ের মা-বাবার। কালের স্রোতে এই প্রবাদ এখন অর্থ হারাতে বসেছে। গরিব-ধনী, গ্রাম-শহর—সব জায়গাতেই মেয়েরা লেখাপড়ায় এগিয়ে আসছে। সাফল্যের সঙ্গে পেরোচ্ছে লেখাপড়ার চৌকাঠ।
নারীর শিক্ষার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়েছে ব্যাপক। তবু বয়স খানিকটা বেশি হয়ে গেলেও বিয়ে না হওয়াটা এখনো গ্রহণযোগ্য নয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।