আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আর্জেন্টিনায় বিধ্বস্ত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন

আমি অতি সামান্য.... আমাকে HELPকরুন

১১ জুলাই সকার সিটি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ শিরোপা হাতে তোলার পর ফুটবল-বিশ্বকে এখনো নিজেদের লাল রঙে রাঙিয়ে রেখেছে স্পেন। চ্যাম্পিয়নদের গর্বের পতাকাটা এখনো সগৌরবে উড়ছে চারদিকে। কিন্তু এর মধ্যেই তাদের প্রথম পরাজয়ের স্বাদ দিল আর্জেন্টিনা। পরাজয়টা যেনতেনও নয়। বুয়েনস এইরেসের রিভার প্লেট স্টেডিয়ামে পরশু স্পেনকে ৪-১ গোলে হারাল আর্জেন্টিনা।

এই আর্জেন্টিনা ডিয়েগো ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনা নয়, সার্জিও বাতিস্তার। কিন্তু যে দুঃখ তারা কিছুটা হলেও ঘোচাল, সেটি ওই ম্যারাডোনার রাজত্বেই পাওয়া। সেই যে বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার দুঃস্মৃতি! লিওনেল মেসি খেলার ১০ মিনিটে এগিয়ে দেন আর্জেন্টিনাকে। জাতীয় দলের হয়ে গোল পেলেন তিনি ১৩ ম্যাচ ও ১০ মাস পর। ঘটনাচক্রে যে স্পেনের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে সর্বশেষ গোল, ১৪তম গোলটিও তাদের বিপক্ষেই।

১৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন গঞ্জালো হিগুয়েইন, ৩৫ মিনিটে কার্লোস তেভেজ স্কোরলাইন করেন ৩-০। তবে এই গোলে যতটা না তেভেজের কৃতিত্ব, তার চেয়ে বেশি ব্যর্থতা ইকার ক্যাসিয়াসের বদলে খেলা গোলরক্ষক পেপে রেইনার। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে সেটি তুলে দিয়েছিলেন তেভেজের কাছে। ক্যাসিয়াসের কারণে পুরো বিশ্বকাপ দর্শক হয়ে থাকতে হয়েছিল রেইনা ও ভালদেসকে। দুই অর্ধে ভাগাভাগি করে এ দিন খেলেছেন দুজনই।

নিজেদের ফিরে পেতে মরিয়া স্পেন ৮৪ মিনিটে একটি গোল পরিশোধ করে ফার্নান্দো লরিয়েন্তের মাধ্যমে। কিন্তু কোথায় কী? উল্টো আরও গোলের বোঝা ভারী করেছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। বাড়তি সময়ে স্পেনের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন ম্যারাডোনার জামাই সার্জিও আগুয়েরো। বিশ্বকাপ-ব্যর্থতার পর তত্ত্বাবধায়ক কোচ সার্জিও বাতিস্তার হাতে শুরু হয়েছে আর্জেন্টিনার নতুন পথচলা। আসলে নতুন করে পথ চলতে চাইছে তারা।

কিন্তু নতুন কোথায় আর্জেন্টিনা? এ তো সেই ম্যারাডোনার আক্রমণাত্মক আর্জেন্টিনাই। আর গোল করলেনই বা কারা? সেই ম্যারাডোনার বিশ্বস্ত আক্রমণভাগ। সেই মেসি, হিগুয়েইন, তেভেজ ও আগুয়েরোই তো গোল দিলেন! না, এখানে একটু ভুল হয়ে গেল। বাতিস্তা অনেক বদলই এনেছেন দলে। ফিরিয়ে এনেছেন ম্যারাডোনার কাছে ব্রাত্য দুই খেলোয়াড় ডিফেন্ডার হাভিয়ের জানেত্তি ও রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার এস্তেবান ক্যাম্বিয়াসোকে।

এ ম্যাচে ইন্টার মিলানের দুই পরীক্ষিত সৈনিক এর প্রতিদানও দিয়েছেন। ডান প্রান্তটাকে একেবারে দুর্ভেদ্য দুর্গ বানিয়ে রেখেছিলেন জানেত্তি। পুরো ৪৫ মিনিট প্লে-মেকার আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাকে অকেজো করে রেখেছিলেন। আর মাঝমাঠে মাচেরানো-ক্যাম্বিয়াসো যুগলবন্দী বিরামহীনভাবে জাভি- ফ্যাব্রিগাসকে হতাশ করে বল রেখেছেন পায়ে। এতেই খেলার জন্য অনেক জায়গা পেলেন মেসি।

জ্বলে উঠল আর্জেন্টাইন আক্রমণভাগের ত্রিমূর্তি। দুর্দমনীয় তেভেজ একটি গোল করলেন। করালেন দুটি। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বকাপে কেপটাউনের সেই দুঃখের রাতের কালো চাদরটা কিছু সরাল বৈকি! বাতিস্তা নিজেই জয়ের পর বলেছেন বিশ্বকাপে জার্মানি-দুঃখের সেই রাতটা এ দিয়ে পেছনে ছুড়ে ফেলেছে আর্জেন্টিনা, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আমরা লজ্জা নিয়ে ফিরেছিলাম, কিন্তু আমরা সেখানে বিশ্বকাপ জিততেও পারতাম। আজ আমরা তেমনই খেললাম, যেমনটা আমরা খেলতে চেয়েছিলাম।

’ তবে এমন পরাজয়কেও লজ্জা হিসেবে দেখছেন না স্পেন কোচ ভিসেন্তে দেল বস্ক। এই ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে শ্রেয়তর দল বলে মেনেও তাঁর দাবি স্কোরলাইনটা যা দেখাচ্ছে, ম্যাচটি প্রকৃতপক্ষে সে রকম ছিল না। সত্যিই তো, বিশ্বকাপজয়ী দলের বেশ কয়েকজন বাইরে রেখে নেমেও স্পেন গোল করার অনেক সুযোগ পেয়েছিল। তিন-তিনবার বল ফিরেছে পোস্টে লেগে। দুবার এই দুর্ভাগ্যের শিকার ডেভিড ভিয়া (২৮ ও ৪১ মিনিটে) অন্যবার ডেভিড সিলভার বদলি সান্তিয়াগো কাজোরলা (৭৫ মিনিট)।

৭৮ মিনিটে পেদ্রোর শট দুর্দান্তভাবে রুখে দেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো। এএফপি। দুদলে খেলেছেন যাঁরা আর্জেন্টিনা: রোমেরো, জানেত্তি, ডেমিকেলিস, গ্যাব্রিয়েল মিলিতো, হেইঞ্জ, বানেগা, মাচেরানো, ক্যাম্বিয়াসো, মেসি (ডি আলেসান্দ্রো ৮৯ মি.), তেভেজ (ডি মারিয়া ৬০), হিগুয়েইন (আগুয়েরো ৬৮)। স্পেন: রেইনা (ভালদেস ৪৫ মি.), আরবেলোয়া, পিকে, মারচেনা, মনরিয়াল, বুসকেটস, আলোনসো (পেদ্রো ৭১), ইনিয়েস্তা (নাভাস ৪৫), ফ্যাব্রিগাস (হার্নান্দেজ ৫৭), সিলভা (কাজোরলা ৪৫), ভিয়া, (লরেন্তে ৪৫)।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।