আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছারপোকা

এইসব ভালো লাগে...

১ সোহানের মনটা আজকে বেশ ভাল। রুমমেট আজকে বাসায় থাকবে। ওর ফ্যানটা ইউজ করতে পারবে আজ। কদিন ধরে ভীষণ গরম পড়েছে। কুইচ্চা মুরগীর মত ঝিমানো প্লাস্টিকের পাখাওয়ালা ফ্যানটা যেটা বাবা কিনে দিয়েছিল ৮০০ টাকা দিয়ে ওটা কেমন নুয়ে পড়েছে আজকাল।

কলম দিয়ে গুতিয়ে গুতিয়ে চালু করতে হয়। একটু যদি ঘাড় ঘুরিয়েছ তো থামিয়ে দেবে টিমটিমে বাতাস। আচ্ছা বাতাস কি টিমটিমে হয়?? ফেসবুকে হাল্কা খাজুরে আলাপ করে রাত দুটোর দিকে শুয়ে পড়লো। তন্দ্রাভাব গ্রাস করতে শুরু করেছে এমন সময় মধুর অনুভুতিময় কামড়। পাত্তা দিলোনা।

একটু পর আবার। তারপর আবারো। ধড়মড় করে উঠে পড়লো। ছারপোকা! কি সর্বনাশের কথা! এদ্দিন হলে ছিল কোন অসুবিধা হয়নি তাহলে আজকে হঠাত!!! হ্যাচকা টানে মশারীটা খুলে ফেলে দিল। সব ছারপোকা মশারীর কোনায় ছিলো লুকিয়ে, কিছু ঠাসঠুস করে মারল।

রাতটা কোন রকম পার হয়ে যায়। ২ টিউশনি থেকে ফেরার পথে একদিন বাদে একদিন কার্জন হল এলাকা পার হতে হয় সোহানের। চশমার ভেতর থেকে দেখে সে কি দারুণ উপহাস সমাজের! একপাশে দেখা যায় কি সুন্দর সব তৈজস্পাতি, নার্সারী! গাড়ি থামিয়ে বড়লোকের বউরা কেনাকাটা করে। লাল টুকটুকে ড্রেস পরে শিশুরা ছবি আকা, গান-আবৃত্তি শিখতে যায়। কি চমৎকার দৃশ্য! আচ্ছা একই সাথে রাস্তার অন্যপাশটাতে কেউ কি ভুলেও তাকায়? মানে কার্জন হল ছাড়া অন্য কিছু কি চোখে পড়ে? ঐ যে একটা ছোট্ট ঠেলাগাড়িতে বসে একটা প্রতিবন্ধী মেয়ে সারাক্ষণ মাথা নাড়ে এদিক অদিক! কেউ দেখেছে? তারপর সবসময় কোলে ঝুলে থাকা বাচ্চাগুলো! তা দেখবে কেন? অসুন্দর কি কেউ দেখে? দেখেনা।

তৈজস্পাতি কিনলে নিজের বাড়িঘর সাজানো হবে… ওদের দিকে তাকানোর সময় কার??!! বুকে হাত রেখে বলতে পারে সোহান, এত বৈষম্য পৃথিবীর আর কোথাও নেই। হঠাত একদিন পুলিশ এসে উচ্ছেদ করে সব তৈজস্পাতিওয়ালাদের, আবাসিক-ঠেলাওয়ালাদের। কোন পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করেই। এখন তৈজস্পাতিওয়ালারা ছড়িয়ে গেছে। আর ভাসমান মানুষগুলো? ওরা আবার আসে রাত গভীর হলে, পুলিশ দেখলে পালায়, বা টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে।

সোহানের এদের দিকে তাকিয়ে হঠাত ছারপোকাদের কথা মনে পড়ে যায়…

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।