কোন এক বিচিত্র কারনে এক বিশেষ প্রাণীর সাথে আমার অতি ঘনিষ্ঠতা । প্রাণীটি হচ্চে ছারপোকা। সিমিসিডে গোত্রের একটি ছোট্ট পরজীবী পতঙ্গবিশেষ। এটি মানুষ ও উষ্ণ রক্তবিশিষ্ট অন্যান্য পোষকের রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে।
মূলতঃ এ পোকাটি বিছানা, মশারী, বালিশের এক প্রান্তে বাসা বাঁধলেও ট্রেন কিংবা বাসের আসনেও এদের দেখা মেলে।
বিছানার পোকা হলেও এর অন্যতম পছন্দের আবাসস্থল হচ্ছে - ম্যাট্রেস, সোফা এবং অন্যান্য আসবাবপত্র। পুরোপুরি নিশাচর না হলেও ছারপোকা সাধারণত রাতেই অধিক সক্রিয় থাকে এবং মানুষের অগোচরে রক্ত চোষে নেয়। মশার ন্যায ছোট্ট কামড় বসিয়ে এরা স্থান ত্যাগ করে। আরও মজার বিষয় হচ্চে এরা বেজোর সংখ্যক কামড় দেয় । যেমন হাতে কামড় দিতে আসল।
কামর দেওয়া শুরু করলে এক সারিতে ৩,৫,৭ এই সংখ্যক কামড় দিবে ।
বছর চারেক আগের কথা । সবে মাত্র ঢাকা আসসি । চোখে রঙ্গিন চশমা । আরামবাগের চিপা গলি থেকে নটর ডেমের বিশাল মাঠ ।
সব কিছু কেমন জানি স্বপ্ন স্বপ্ন । তখন থাকতাম মামার বাসায়। ব্যাচেলার মামা । জীবনের মার প্যাচে ৪৫ বছর হয়ে গেল । বিয়েথা করা হয় নি ।
এক রুমের ফ্লাট । সামনে আবার রুগী দেখার চেম্বার । সাজানো গুছানো সংসার । সব মিলিয়ে মনে হচ্চেছিল ভালই কাটবে দিন । বিপ্পতি ঘটলো যখন ঘুমাতে গেলাম ।
লাইট বন্ধ করার ১০ মিনিটের মদ্দেই শরীরের মদ্দে অসহ্য চুলকানি শুরু হল । লাইট অন করে দিলাম । বিছানায় দেখি পিঁপড়ার মত ছোট ছোট প্রাণী । কোনটা আবার কিছুটা বড় । পায়ের গুতা লেগে এক টা আবার চিরে চ্যাপ্টা হয়ে গেল ।
পেট ফুরে বের হল আমার রক্ত । সাথে বিচ্চিরি ঘন্ধ। মামার কার থাকে জানলাম মহামান্য প্রানি টার নাম ছারপোকা ।
নটর দেম কলেজ । বিখ্যাত মুক্ততার স্যার এর ক্লাস এ রস আহরন করতাছি ।
বা হাতের কবজিতে দেখি ফুলা আর লাল হয়ে গেছে । চারপাশে ভাল করে তাকায়ে দেখি বেঞ্ছের এক কোনায় মহামতি ছারপোকা । পাশের বন্ধু আবার আরামবাগের মেছে থাকে । বোজলাম তার সাথে ছারপোকা সম্পর্ক স্তাপন করছে । কিন্তু ইতিমদ্দে আমি ছারপোকার ভয়ে মামার বাসা ছাইরা ছারপোকা বিহিন কমলাপুরের এক বাসায় সাব লেটে ওঠলাম ।
দুবাই এয়ারপোর্ট এ বসে আছি । ট্রানজিট পয়েন্ট । ৬ ঘণ্টার প্যারা । এর আগে এত বিদেশি এক সাথে দেখিনি । চোখ বড় বড় কইরা তাকাইয়া থাকি ।
কিছুক্ষণ পায়চারি কইরা বেঞ্ছে বইসা ঘুমানর চেস্থা করতে ছিলাম । পাশের জন সোনালি চুলের মেয়ে । চুলের চেয়ে হাত পা আরও সোনালি । কিছুটা শীত শীত । মেয়ে ব্যাগ থেকে পাতলা চাদর বের করে গায়ে জরিয়ে নিল ।
আমার স্বর্গ দেখা বন্ধ হয়ে গেল । হতাথ চোখ চলে গেল স্বর্ণকেশীর চাদরের এক কোনায় । অই খানে বসে আমার মত স্বর্গ উপভোগ করতাছে মহামতি ছারপোকা । মনটাই ভাল হয়ে গেল । চারদিকে অপরিচিত সব ছারপোকাকেই অতি আপন মনে হল ।
একই সাইজ , একই কালার । আমার রুমের ছারপোকারই দূর সম্পর্কের কোন ভাই বা বোন হবে।
রাশিয়ান হল । লম্বা করিডোর । হসপিটাল টাইপ ।
এ মাথা থেকে অ মাথা দেখা যায় না । রুম গুলু আরও সুন্দর । সাজ্জাদ ভাইয়ের রুমে নিবাস গাড়লাম । মনে মনে ছারপোকা খুঁজি । আবার ভাবি বিদেশ ।
অনেক পরিষ্কার পরিছন্ন । ছারপোকা ত অবিশ্বাস্য । অই দিন আমার সকল বিশ্বাস ভেঙ্গে দিয়ে সামনে হাজির হল ছারপোকা । আহ.......... অতি স্বাস্থ্যবান । রাশিয়ান বলে কথা।
কামড় দিলে মনে হয় কুত্তার কামরের ইঞ্জেকশান নাভির গোরায় দিতাছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।