www.adityaanik.com
জুলেখা বাদশার মেয়ে নয়
আদিত্য অনীক
জুলেখা বাদশার মেয়ে এটা ঠিক নয়,
জুলেখা আসলে ওর বাবার মেয়ে।
বাবা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল আর ফিরে আসে নি।
আমার সাথে স্কুলে যেতো, আট এর কাসে পড়ত
মায়ের সাথে থাকত। শাক ঘুটে কুড়াতো
আর যে পথে বাবা যুদ্ধে গিয়েছিল সে পথে.....
মোল্লাবাড়ির বড় মোল্লা দলনেতা। মাথায়
জিন্নাটুপি, মুখে কালো দাড়ি, হাতে রাইফেল।
ইসলাম ও পাকিস্তান রায় জান কুরবান দিল্।
তার বাহিনী বাড়ি ঘিরে ফেললো।
দুস্কৃতকারী পেলো না। মালে গনিমত পেল।
গাই-বাছুর, ছাগল, মুরগী, মা আর জুলেখা।
হালাল হালাল জেল্লায় হুমড়ি খেয়ে পড়ল।
জুলেখার চিৎকারে পাড়া কেঁপে কেঁপে উঠল।
মা হাহাকার করে বলল,
বাবারা, তোমরা একজন একজন করে যাও,
আমার মাইয়াটা ছোট। মইরা যাবো গো.....
জুলেখা রক্তের উপর পড়ে রইল
মায়ের পেটে বেয়োনেট ঢুকিয়ে ফুটো করে গেল।
জুলেখা মরল না কারণ ও বাদশার মেয়ে নয়।
বড় মোল্লা মুক্তিবাহিনীর হাতে মারা গেল।
বাজারের পাশে তার লাশ মাটি চাপা দেয়া হল।
ছোট মোল্লা এখন ওখানে রওজা গড়েছেন।
শ্বেত পাথরে খোদাই করে লেখা আছে-
আসসালামু...... ইয়া হালাল কবুর...
শহীদ রইস উদ্দিন মোল্লা জন্ম- ...... হিজরী.
মৃত্যু - রমজান ....হিজরী মোতাবেক ... ১৯৭১ ।
কতজন তার মাযার জিয়ারত করেন!
শানধার ফাগ-কার আসে মাযারে
গোল হয়ে দু’হাত তুলে ফাতেহা পড়েন।
তার মত ইসলাম বুলন্দ সাহসী নেতার
হালে বড় প্রয়োজন-(আফসোস)।
ছোট মোল্লা বড় শহরে থাকেন।
তার গুলশানের বাড়িতে অনেক কাজ।
যুদ্ধ জুলেখার বাবা-মা-জরায়ু ছিন্ন ভিন্ন করে গেছে।
বাঁজা বলে স্বামী খেদিয়ে দিয়ে আবার বিয়ে করেছে।
জুলেখা বাড়ি বাড়ি বেড়ায় ভাতের খুঁজে।
ছোট মোল্লা দয়া করে কাজ দিলেন বাসা বাড়ির ।
জুলেখার দুঃখ দুর হলো। ভাত-কাপড়ের।
ছোট মোল্লা বড় নেতা।
সভা-সংসদ কত কাজ!
সারাদিনে তার শরীরের ঘাটে ঘাটে মেহনতের
বিষ জমে ওঠে। জুলেখা নরম হাতে শরীর টিপে।
আস্তে আস্তে মোল্লার চোখের পাতা মুদে আসে।
জুলেখা বাদশার মেয়ে নয়, তবে শাহীক্ষমতার
গুপ্ত অলি-গলি এখন তার অতি পরিচিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।