আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জুলেখা বাদশার মেয়ে নয়

www.adityaanik.com

জুলেখা বাদশার মেয়ে নয় আদিত্য অনীক জুলেখা বাদশার মেয়ে এটা ঠিক নয়, জুলেখা আসলে ওর বাবার মেয়ে। বাবা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল আর ফিরে আসে নি। আমার সাথে স্কুলে যেতো, আট এর কাসে পড়ত মায়ের সাথে থাকত। শাক ঘুটে কুড়াতো আর যে পথে বাবা যুদ্ধে গিয়েছিল সে পথে.. মোল্লাবাড়ির বড় মোল্লা দলনেতা। মাথায় জিন্নাটুপি, মুখে কালো দাড়ি হাতে রাইফেল।

ইসলাম ও পাকিস্তান রায় জান কুরবান দিল। তার বাহিনী বাড়ি ঘিরে ফেললো। দুস্কৃতকারী পেলো না। মালে গনিমত পেল। গাই-বাছুর, ছাগল, মুরগী, মা আর জুলেখা।

হালাল হালাল জেল্লায় হুমড়ি খেয়ে পড়ল। জুলেখার চিৎকারে পাড়া কেঁপে কেঁপে উঠল। পরাজিত বন্দির কান্না কেউ শুনে না, মা হাহাকার করে বলল, বাবারা তোমরা একজন একজন করে যাও, আমার মাইয়াটা ছোট। মইরা যাবো গো..... জুলেখা রক্তের উপর পড়ে রইল মায়ের পেটে বেয়োনেট ঢুকিয়ে ফুটো করে গেল। জুলেখা মরল না কারণ ও বাদশার মেয়ে নয়।

একদিন সত্যি বিয়ে হলো তার ফুল ছাড়াই। অনেকদিন কোন সন্তান হলো না। যুদ্ধ ওর বাবা-মা দেশ ও জরায়ু ছিন্ন ভিন্ন করে গেছে। বাঁজা বলে স্বামী খেদিয়ে দিয়ে আবার বিয়ে করল। জুলেখা বাড়ি বাড়ি বেড়ায় ভাতের খুজে।

বড় মোল্লা মুক্তিবহিনীর হাতে মারা গেল। বাজারের পাশে তার লাশ মাটি চাপা দেয়া হল। ছোট মোল্লা ওখানে রওজা শরীফ গড়েছেন। শ্বেত পাথরে খোদাই করে লেখা আছে- আসসালামু...... ইয়া হালাল কবুর শহীদ রইস উদ্দিন মোল্লা জন্ম- ...... হিজরী. মৃত্যু --- রমজান ....হিজরী মোতাবেক ..... ১৯৭১ । কতজন তার মাযার জিয়ারত করেন! শানধার ফাগ-কার আসে মাযারে গোল হয়ে দু’হাত তুলে ফাতেহা পড়েন।

তার মত ইসলাম বুলন্দ সাহসী নেতার হালে বড় প্রয়োজন-(আফসোস)। ছোট মোল্লা বড় শহরে থাকেন। তার গুলশানের বাড়িতে অনেক কাজ। জুলেখাকে দয়া করে কাজ দিলেন বাসা বাড়ির । জুলেখার দুঃখ দুর হলো।

ভাত-কাপড়ের যোগাড় হল। ছোট মোল্লা বড় নেতা। সভা সমিতি সংসদ কত কাজ কত কারবার! সারাদিনে তার শরীরের ঘাটে ঘাটে মেহনতের বিষ জমে ওঠে। জুলেখা নরম হাতে তার শরীর টিপে দেয়। আস্তে আস্তে মোল্লার চোখের পাতা মুদে আসে।

জুলেখা বাদশার মেয়ে নয়, তবে শাহী মতার গুপ্ত অলি-গলি এখন তার অতি পরিচিত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।