এই দেশটা আমার, আপনার, আপনাদের সবার, আসুন দেশটাকা ভালবাসি।
অনেকেই বলে অভিশাপ স্রেফ মুখের কথা। কিন্তু মাঝে মাঝে ঘটনা এমন দিকে গড়াতে থাকে যে বিশ্বাস করতে বাধ্য হবেন, অভিশাপ বলে একটা কিছু আছেই। তেমনি কিছু জ্বলজ্যান্ত অভিশাপের কথা জানাচ্ছেন ফাহমিদা হক
অভিশপ্ত পোরশে
১৯৫৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মার্কিন অভিনেতা জেমস ডিন। দুর্ঘটনার পর ডিনের প্রিয় সিলভার পোরশে স্পাইডার গাড়িটি আড়াই হাজার ডলারে কিনে নেন গাড়ি ব্যবসায়ী জর্জ ব্যারিস।
গ্যারেজে মেরামতের সময় পায়ের ওপর গাড়িটা পড়ে ভেঙে যায় এক মেকানিকের পা। ব্যারিস এরপর গাড়ির ইঞ্জিন ও ট্রান্সমিশন বিক্রি করেন দুই রেসারের কাছে। নতুন ইঞ্জিন ও যন্ত্র নিতেই একসঙ্গে দুর্ঘটনার শিকার হন দু'জন। এরপর গাড়িটির টায়ার কিনেছিলেন এমন একজনকে যেতে হয় হাসপাতালে। এসব ঘটনার পরে গাড়িটি এক প্রদর্শনীতে দেখানোর কথা ছিল।
কিন্তু প্রদর্শনীর আগের দিন রাতে গ্যারেজে আগুন লেগে গাড়িটি ছাড়া বাকি সব পুড়ে যায়। অতঃপর ক্যালিফোর্নিয়ার স্যালিনাসে পাঠানোর জন্য ট্রাকে ওঠানো হয় ওটা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে যায় ট্রাক ও চালক। ১৯৬০ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার হাইওয়ে পেট্রল কর্তৃপক্ষ একবার প্রদর্শনীতে এনেছিল গাড়িটি। এরপর ওটা আর দেখা যায়নি।
ঘুম নষ্টের প্রতিশোধ
১৯২২ সালে ইংরেজ অভিযাত্রী হাওয়ার্ড কার্টার তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কার করেন। উন্মোচনের কিছুদিন পরই নিউমোনিয়ায় মারা যান কার্টার। তার মৃত্যুর সময় রহস্যজনকভাবে শহরের সব বাতি নিভে যায়। তাঁর কুকুরটিও ওইদিন সকালে মারা যায়। তুতেনখামেনের সমাধির দেয়ালে লেখা ছিল, যে ব্যক্তি তার চিরশান্তির নিদ্রা নষ্ট করবে, তার ওপর মৃত্যুর ছায়া ঘনিয়ে আসবে।
২৭ ভয়ংকর
মার্কিন রকস্টার ও মিউজিশিয়ানদের এক মিলনস্থল হচ্ছে দ্য ক্লাব। আজব ব্যাপার হলো ক্লাবের সদস্যরা সবাই মারা গেছেন একটি নির্দিষ্ট বয়সে। আফ্রো-আমেরিকান মিউজিশিয়ান রবার্ট জনসন থেকে শুরু করে রোলিং স্টোনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ব্রায়ান জোনস, জিমি হেনড্রিক্স, জেনিস জপলিন, জিম মরিসন, কার্ট কোবেইন_সবাই মারা যায় মাত্র ২৭ বছর বয়সে। হয়তো কেউ একজন ২৭ বছর বয়সেই তাঁদের অভিশাপ দিয়ে গিয়েছিল।
ছাগলের জন্য
১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিলি সায়ানিস তাঁর পোষা ছাগল মার্ফিকে নিয়ে ওয়ার্ল্ড সিরিজের খেলা দেখতে যান রিগলি ফিল্ডে।
খেলাটি ছিল 'শিকাগো কাবস' ও 'দ্য ডেট্রয়েট টাইগার'র মধ্যে। ছাগলের গন্ধের কারণে বিলি ও তার ছাগলকে গ্যালারি থেকে বের করে দেয় কাবস কর্তৃপক্ষ। অভিশাপ দেন সায়ানিস। এরপর থেকে কাবস দলটি একটি খেলাও জিততে পারেনি। পরে কাবসের অনুরোধে বিলির ছোট ভাই স্যাম সায়ানিস ছাগল নিয়ে গ্যালারিতে আসেন।
তাতেও হয়নি শাপমোচন।
রাসপুতিনের রাগ
রাশিয়ার জার রোমানোভের
অন্তরঙ্গ মহলে জায়গা করে নেন সন্নাসী রাসপুতিন। কিছু রোমানোভরা তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বিষ প্রয়োগ, সিঁড়ি থেকে ফেলে দেওয়া ও গুলির আক্রমণ_এত কিছুর পর শেষ পর্যন্ত মারা যান রাসপুতিন। মৃত্যুশয্যায় অভিশাপ দেন, রাশিয়ার স্বৈরশাসকরা এক বছরের মধ্যেই মৃত্যুর স্বাদ নেবে।
এক বছরেরও কম সময়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় রোমানোভ পরিবার।
আশার হীরে
ইংল্যান্ডের রাজা চতুর্থ জর্জের কাছ থেকে জনৈক হেনরি ফিলিপ হোপের কাছে আসার পর থেকেই 'হোপ ডায়মন্ড' ট্রাজেডির শুরু। দারিদ্র্যের কারণে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় হোপের পরিবার। এরপর সে বংশেরই লর্ড ফ্রান্সিস হোপ জুয়ায় খুইয়ে ফেলেন হীরাটি। নতুন মালিক হন ফরাসি জ্যাক কোলো।
আকস্মিকভাবে তিনিও নিঃস্ব হয়ে আত্মহত্যা করেন। এর কিছু দিন পর পূর্ব ইউরোপের যুবরাজ ইভান কানি টোয়াসকি এক অভিনেত্রীকে হীরাটি উপহার দেন। প্রথম যেদিন গলায় পরেন, সে দিনই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ওই অভিনেত্রী। ইভান মারা যান বিদ্রোহীদের ছুরিকাঘাতে। এরপর হোপের মালিক হন এক গ্রিক স্বর্ণকার।
তিনিও স্ত্রী-সন্তানসহ পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। অনেক হাত ঘুরে মিসেস ইভালিন ওয়ালস ম্যাকলিনের কাছে আসে হীরাটি। অকালমৃত্যু হয় তাঁর ভাইয়ের, নয় বছর বয়সেই মারা যায় ছেলে, আর মাদকাসক্ত হয়ে মারা যায় মেয়ে। মৃত্যুর আগে ১৯৪৭ সালে তিনি হীরাটি হ্যারি উইন্সটন করপোরেশনের কাছে বিক্রি করে দেন। বহু বছর এটা স্পর্শ করার সাহস পায়নি কেউ।
সুত্র: কালের কন্ঠ পত্রিকা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।