আনাড়ী রন্ধন শিল্পীর ব্লগ B-)। ব্লগের বাজে-মানহীন লেখাগুলোর মাস্টার পিস দেখতে চাইলে এই ব্লগারের পোষ্ট গুলো পড়ে দেখতে পারেন। কথা দিচ্ছি, নিরাশ হবেন না। B-) জীবন সায়াহ্ণে এসে এখন একা হাসি বেগম। বিয়ের কয়েক বছরের মাথায় ডিভোর্স হয়ে গেলে সারাটি জীবন মেয়ে ববিকে নিয়েই কাটিয়ে দেয়।
মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে। বিয়ের পর বেশ কয়েক বছর মায়ের সাথে থাকলেও সমাজের কারনে আর থাকতে পারেনা মায়ের সাথে। তাই নিজের সংসার নিয়ে আলাদা হয়ে যায় ববি।
-----------------------------------------------------------
মোয়াজ্জেম চেয়ারম্যানের তিন ছেলে দুই মেয়ে। মেয়ে দুজনের মাঝে হাসি ছোট।
চেয়ারম্যান সব ছেলেমেয়েকেই শিক্ষিত করেছেন। বড় মেয়ে পাকিস্তান পিরিয়ডের ম্যাট্রিক পাশ। ছেলেরা সবাই প্রতিস্ঠিত। লেখাপড়া করেনি শুধু হাসি। কোন দিকই ছিলোনা মেয়েটির, না পড়ালেখা না রুপ।
যার ফলে মেয়েকে বিয়ে দিতে সমস্যা হয় চেয়ারম্যানের।
একদিন মধ্যবিত্ত কৃষক মনসুর মিয়ার বেকার ছেলে নুরুর সাথে বিয়ে ঠিক হয় হাসির। বিয়েতে একটি চাওয়া থাকে। নুরু যদি ব্যবসা করতে চায় তবে তার টাকা-পয়সা দেবে অথবা চাকরী করতে চাইলে তা জোগার করে দেবে চেয়ারম্যান। মেয়েকে বিয়ে দিয়ে মারা যান চেয়ারম্যান।
সংসারের দ্বায়িত্ব নেয় ছেলেরা। বেশ দাপুটে বংশের তারা। সব ক্ষেত্রেই দাপট দেখাতে পছন্দ করে। মনসুর মিয়ার বংশ মর্যাদা থাকলেও ছিলোনা টাকা পয়সা। যা কাল হয়ে দাড়ায় নুরু-হাসির জীবনে।
হাসি মানতে পারে না শ্বশুর বাড়ীর এই অবস্থা, মানতে পারেনা স্বামীর বেকারত্ব। শর্ত অনুযায়ী ব্যাবসার টাকা দেয়ার কথা থাকলেও হাসির বাড়ী থেকে আরেক শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। নুরুকে ঘর জামাই থাকতে হবে তবেই ব্যাবসার টাকা দেয়া হবে। মানতে পারে না নুরু। বেকার জীবন চলতে থাকে।
এর মাঝেই জন্ম নেয় ববি। আস্তে আস্তে মনোমালিন্য-ঝগড়া বিরাট আকারে ধারন করে। পকেটে পয়সা নেই কিন্তু মেয়ের জনেও কিছু নিতে মনচায়। কখনো একটি-কখনো বা দুটি কমলা নিয়ে ঘরে ফেরে। তা সহ্য হয় না হাসির।
ছুড়ে বাইরে ফেলে দেয় একটি-দুটি কমলা তার মেয়ে খাবে না বলে। ঈদে নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী জুতো আনে মেয়ের জন্যে নিজ পছন্দে। হাসি তা ঘরের পেছনের পচা পুকুরে ফেলে দেয় এত কম দামী স্যান্ডেল তার মেয়ে পায়ে দেবেনা বলে।
----------------------------------------------
ভাইদের পরামর্শে হাসি কোর্টে বিভিন্ন মিথ্যে মামলা করে নুরুর পরিবরের বিরুদ্ধে। সহজ-সরল শ্বশুর, পর্দানশীল শাশুড়ীকেও রেহাই দেয়নি।
অথচ শ্বাশুড়ী এই ছেলের বউকে নিজের পোষা মুরগী-ডিম বিক্রী করে শাড়ী-চুরি শখের জিনিস কিনে দিয়েছে ছেলের সামর্থ্য নেই বলে। কখনো অমর্যাদা করেনি বউকে।
পাঁচ বেড়ার ভেতরে থাকা নুরুর মা সাহেরন বিবিকে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে জেলা শহরে কোর্টে যেতে হয়েছে বউয়ের মামলার কারনে। বড় ঘোমটার আড়ালেই থেকেছেন পুরো সময়। বাইরে পরপুরুষের সামনে খেতে হবে বলে প্রতিটি হাজিরার দিন রোজা থেকেছেন।
বিভিন্ন সাক্ষী প্রমানের ভিত্তিতে একপর্যায়ে প্রমানিত হয় হাসির সব অভিযোগ মিথ্যে। মামলা নিষ্পত্তি হয়ে যায়।
-----------------------------------------------
কষ্টে, লজ্জায় সাহেরন বিবি হাত তুলে আল্লাহ কাছে কান্না করে ফরিয়াদ জানায় "আল্লাহ আমি জীবনে পাঁচ বেড়ার বাইরে যাই নাই, মিথ্যা অভিযোগে ও (বউ) আমারে এতদূর আনছে, এত কষ্ট দিছে আমারে, আমার পরিবাররে। ওরে তুমি জীবনে ভাতারের (গ্রাম্য ভাষায় স্বামী) ভাত খাওয়াইয়ো না, তুমি ওরে পুতের মুখ দেখাইয়োনা আল্লাহ। "
------------------------------------------------------
হাসি নুরুর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।
নুরুর চাকরী হয় ভাল জায়গায়। সংসার ছেলে-মেয়ে নিয়ে সুখে থাকলেও হাসি আর সংসার করেনি আত্নীয় স্বজনের শত অনুরোধেও।
জীবনের শেষ বেলায় এসে নিজের ভূল বুঝতে পারে। বুঝতে পারে ভাইদের কথায় তার ক্ষতিই হয়েছে, কোন লাভ হয়নি।
-----------------------------------------------
সেদিন নির্দোষ সাহেরন বিবির কান্নায় হয়ত আল্লাহ আরশ কেঁপে উঠেছিলো।
আল্লাহ সাথে সাথেই কবুল করেছিলেন তার অভিশপ। হয়ত সে কারনেই হাসির আর............ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।