২.০ মেগাপিক্সেল মোবাইল ক্যামেরায় চলছে। যোগাযোগ <<< photopagol@gmail.com >>>
থলের বেড়াল ক্রমশ বের হচ্ছে। পাকিস্তান ক্রিকেটে পাতানো ম্যাচের বিষাক্ত ছোবল যে কতটা গভীরে গিয়ে পৌঁছেছে তা জেনে চোখ কপালে উঠতে শুরু করেছে ক্রিকেটামোদীদের।
যে কুকর্মটা শুরু করেছিলেন সেলিম মালিকরা তার ধারাবাহিকতাই যেন ধরে রেখেছেন সালমান বাটরা।
আসলে পাকিস্তান ক্রিকেটে পাতানো ম্যাচের বিষবাষ্প কখনোই একেবারে শেষ হয়ে যায়নি।
ভেতরে ভেতরে লেনদেন চলছিল ঠিকই। কিন্তু প্রকাশ হচ্ছিল না।
চোরের দশ দিন আর গৃহস্থের একদিনের মতো ফের তাই ধরা পড়ে গেল পাকিস্তান ক্রিকেটারদের দুষ্কর্ম।
জড়িয়ে গেছে অন্তত সাত ক্রিকেটারের নাম। যার মধ্যে নাটের গুরু হিসেবে বলা হচ্ছে সদ্য টেস্ট অধিনায়ক হওয়া সালমান বাটের নাম।
সঙ্গে রয়েছে পুরনো ডোপপাপী মোহাম্মদ আসিফ, উদিয়মান পেসার মোহাম্মদ আমির এবং এরই মধ্যে দলে নানা বিতর্ক ছড়ানো উইকেটকিপার কামরান আকমল।
ধরা পড়া বাজিকরদের দালাল মাজহার মাজিদ জানিয়েছেন, শুধু ইংল্যান্ডেই নয়, পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা অস্ট্রেলিয়া সফরেও পাতানো ম্যাচ খেলেছে। তিনি জানিয়েছেন, সিডনি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার অভাবিত জয়ের পেছনে পাকিস্তান ক্রিকেটারদের অর্থের বিনিময়ে বদান্যতাই দায়ী।
অস্ট্রেলিয়া সফরে পাকিস্তান সব ম্যাচ হেরেছিল। বাজে ফিল্ডিংয়ের নমুনা দেখে বাকহারা হয়ে গিয়েছিলেন ধারাভাষ্যে থাকা সাবেক ক্রিকেটাররা।
বিশেষ করে সিডনি টেস্টে কিপার কামরান আকমল একাই মাইকেল হাসির তিনটিসহ মোট চারটি লোপ্পা ক্যাচ এবং একটি সহজ রান আউট মিস করে সন্দেহের কোপানলে পড়েন। তাকে পরের টেস্টে বাদ দেয়া হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
বিস্ময়কর তথ্য দিয়েছেন আসিফের সাবেক বান্ধবী ভিনা মালিক। বলেছেন, আসিফ বহুদিন ধরেই জুয়াড়িদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন।
তাকে নাকি আসিফ একবার বলেছিলেন, ২০১০ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান কোনো সিরিজই জিতবে না। ভারতীয় জুয়াড়িদের সঙ্গেও আসিফের রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।
অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়ার আগে আসিফ একদিনের জন্য ব্যাংকক গিয়েছিলেন পাতানো ম্যাচের সবকিছু ঠিকঠাক করতে। ভিনা জানিয়েছেন, জুয়াড়িরা আসিফকে চল্লিশ হাজার ডলার দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আসিফ রাজি হননি।
তার দাবি ছিল দুই লাখ ডলার। ভারতীয় সেই জুয়াড়ির নাম ধিরাজ দিক্ষিত।
দিক্ষিত নাকি পাকিস্তান দলের আরও কিছু ক্রিকেটারকে অস্ট্রেলিয়া সফরে কিনেছিলেন।
সাবেক টিভি অভিনেত্রী এবং মডেল ভিনা বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ায় ক্রমাগত হার দেখে তিনি আসিফকে ফোনে অন্তত একটি ম্যাচ জেতার জন্য বলেছিলেন। তখন আসিফ নাকি জবাব দিয়েছিলেন, ২০১০ সালে পাকিস্তান কোনো সিরিজ জিতবে না।
অস্ট্রেলিয়া সফরে মোহাম্মদ আমিরকে নাকি একদিন আসিফ বলেছিলেন, ‘আরে এত ঘাবড়াচ্ছ কেন। তোমার বয়স এখন মাত্র ১৮। ওই বয়সে আমি তোমার চেয়ে ঢের বেশি কেস খেয়েছি। ’
আইপিএলে ডোপ টেস্টে ধরা পড়ে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন আসিফ।
ভিনা জানিয়েছেন, কলিম ইমরান নামে একজন আসিফকে নানড্রোলিন ইনজেকশন যোগান দিত।
ভিনা প্রয়োজন পড়লে যে কোনো তদন্তে হাজির হয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
পাকিস্তান ক্রিকেট দলের এমন কাণ্ডে শঙ্কায় পড়ে গেছে দু’দলের টি-টুয়েন্টি এবং ওয়ানডে সিরিজ। যদিও ম্যানেজার ইয়ার সাইদ বলেছেন, তার জানা মতে ওই দুটি সিরিজ ঠিকই অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু জানা গেছে, ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড ওয়ানডে সিরিজ থেকে অভিযুক্ত মূল চার ক্রিকেটারকে বাদ দিতে আহ্বান জানিয়েছে। নইলে সিরিজ বানচাল হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের মতে, পাতানো ম্যাচের কাণ্ডে লর্ডস টেস্টই তার আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেছে। এখন অভিযুক্ত ক্রিকেটাররা খেললে ওয়ানডে এবং টি-টুয়েন্টি সিরিজও নিশ্চিতভাবেই বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। দর্শক, স্পন্সর এবং টিভি চ্যানেলগুলো মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে সিরিজ থেকে। কাজেই এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত টানতে হবে।
উল্লেখ্য, টি-টুয়েন্টি এবং ওয়ানডে সিরিজ দুটোতেই বাট, আসিফ, আমির এবং কামরান রয়েছেন।
অনেকের মতে, পাকিস্তান দলের অবস্থা এখন ঠগ বাছতে গা উজাড় করার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলের হাতেগোনা দু’একজন ছাড়া বাকি সব ক্রিকেটারই নাকি ম্যাচ গড়াপেটায় জড়িত—এমনটাই বলছে জুয়াড়িরা এবং তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাহলে পাকিস্তান ক্রিকেটের ভবিষ্যত্ কি? অনেকের মতে, সবকিছু ফের প্রথম থেকে শুরু করা।
সুত্রঃ আমার দেশ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।