ভারতের সংসদে স্থলসীমান্ত চুক্তি সংশোধনী বিলটি পেশ করার জন্য তৃণমূলের দ্বারস্থ হতে চলেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ।
উল্লেখ্য, অসম গণ পরিষদ (অগপ) ও বিজেপির প্রবল বিরোধিতায় চলতি বছরের মে মাসে সীমান্ত চুক্তি বিলটি সংসদেও বাজেট অধিবেশনে পেশ করা সম্ভব হয়নি। এরপর সোমবার সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনে দ্বিতীয়বারের জন্য রাজ্যসভায় এই বিলটি পেশের জন্য উত্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় সেই অগপ, সঙ্গে যোগ দেয় তৃণমূল। চলতি অধিবেশনে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সীমান্ত চুক্তি বিলটি সংসদের দুই কক্ষেই পাস করিয়ে নিতে মরিয়া ছিল। কারণ সংসদের দুই কক্ষে (রাজ্যসভা ও লোকসভা) দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার অনুমোদন পেলেই ভারত-বাংলাদেশ স্থলসীমান্ত চুক্তিতে সিলমোহর পড়বে। এরপর রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলে চুক্তিটি কার্যকর হয়ে যাবে। কিন্তু দেশটির আঞ্চলিক দলগুলোর প্রবল বিরোধিতায় বার বার থমকে যাচ্ছে এই উদ্যোগ। তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি ও অগপের মূলত অভিযোগ ছিল এই চুক্তির ফলে দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হবে। ভারতের চেয়ে বেশি পরিমাণ জমি বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে হবে।
এ নিয়ে আলাদা করে দেশটির প্রধান বিরোধী দল বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্রীয় সরকার। বিজেপির সেই ধারণা অসত্য বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বার বার বোঝানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এমনও বলা হয়েছিল যে এই চুক্তি কার্যকর হলে সীমান্তে অশান্তি যেমন কমবে, তেমনি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য পথ খুলে যাবে। এ কারণে এই চুক্তি রূপায়ণে কেন্দ্র এবার তৎপর। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ দাবিও করেছিলেন যে বিজেপিকে এই চুক্তির গুরুত্ব বোঝানো গেছে। তা হয়তো ঠিক। কারণ গতকালের রাজ্যসভায় সীমান্ত চুক্তি বিল পেশের সময় কোনো বিরোধিতা বিজেপির তরফে আসেনি। কিন্তু এবার কাঁটা তৃণমূল আর অগপ। রাজ্যসভায় অগপের মাত্র দুজন সদস্য আছেন_ কুমার দীপক দাস ও বীরেন্দ্র প্রসাদ বৈশ্য। অন্যদিকে তৃণমূলের সদস্যসংখ্যা আরও বেশি। তাই এবার তৃণমূল কংগ্রেসকে এই বিলের গুরুত্ব বোঝাতে নতুন উদ্যোগ কেন্দ্রের। সোমবার তৃণমূলের বিরোধিতার পরই দলের সুপ্রিমো মমতার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন খুরশিদ। সূত্রে খবর, সংসদে এই বিলটি পেশ করার সময় তৃণমূল যাতে সমর্থন করে সেই আর্জি নিয়ে খুব শীঘ্রই দলের তিন শীর্ষ নেতা মুকুল রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডেরেক ও'ব্রায়েনের সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে মমতার সঙ্গে আলোচনা হয়। রাজ্যসভার সংসদ সদস্য ডেরেক ও'ব্রায়েন জানান, ভারতের মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় অঙ্গরাজ্যগুলোর মত না নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সালের ১৬ মে দিলি্লতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এই দ্বিপক্ষীয় আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এরপর ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ওই প্রোটোকল স্বাক্ষর করেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।