হলমার্ক গ্রুপের ঋণ-জালিয়াতির সঙ্গে যমুনা গ্রুপের যোগসাজশ রয়েছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। হলমার্ক গ্রুপের সঙ্গে যমুনা গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানের ৭ লাখ ৩১ হাজার ২৯৩ ডলার জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে সোনালী ব্যাংক। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে সম্পৃক্ততা ধরা পড়ার পর গত বছরের জুলাইয়ে যমুনা গ্রুপের এই তিন প্রতিষ্ঠানের বিলের পাওনাও আটকে দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বিলগুলোতে ত্রুটি-বিচ্যুতির পাশাপাশি জাল-জালিয়াতিরও প্রমাণ পেয়েছে কর্তৃপক্ষ। এসব বিলের পাওনা আদায়ে যমুনা গ্রুপ এখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষের ওপর অন্যায়ভাবে চাপ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা। প্রতিষ্ঠান তিনটি হচ্ছে যমুনা স্পিনিং মিলস লিমিটেড, যমুনা ডেনিমস লিমিটেড ও শামীম কম্পোজিট মিলস লিমিটেড। যমুনা গ্রুপের সহযোগী এই তিনটি প্রতিষ্ঠান হলমার্ককে পণ্য সরবরাহের উদ্দেশ্যে গত বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে দেশের তিনটি বাণিজ্যিক ব্যাংকে ২১টি ব্যাংক টু ব্যাংক ঋণপত্র খোলে। কিন্তু এক পণ্যের এলসি খুলে তারা অন্য পণ্যের বিল দাখিল করে সোনালী ব্যাংকে, যা পরবর্তী সময়ে সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে বলে জানা গেছে। অথচ এসব ভুয়া বিল পরিশোধের জন্য সোনালী ব্যাংককে অনৈতিকভাবে চাপ দিয়ে আসছে যমুনা গ্রুপ। এমনকি সংশ্লিষ্ট ব্যাংক-কর্মকর্তাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, ওই বছরের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশের পর হলমার্ক সংশ্লিষ্ট সব স্বীকৃত (অ্যাকসেপটেবল) বিল পরিশোধ বন্ধ করে দেয় সোনালী ব্যাংক। এরপর একটি উচ্চতর কমিটি গঠন করে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে সঠিক বিল পরিশোধও করতে শুরু করে ব্যাংকটি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় যমুনা গ্রুপের এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিলগুলো পরিশোধযোগ্য নয় বলে প্রতিবেদন দাখিল করে ওই কমিটি। পরবর্তী সময়ে পর্ষদ বিলগুলোকে ত্রুটিযুক্ত ও ভুয়া বলে ঘোষণা করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, যমুনা গ্রুপের এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের দাখিল করা ২১টি বিলের মধ্যে ১৪টির স্বীকৃতি দিয়েছে সোনালী ব্যাংক। বাকি সাতটি বিলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। বিলগুলোর আর্থিক মূল্য ৭ লাখ ৩১ হাজার ২৯৩ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে স্বীকৃতি দেওয়া বিলের আর্থিক মূল্য ৫ লাখ ৭ হাজার ৩৫৮ ডলার।
বিলগুলোর মধ্যে ১১টি (৯টি স্বীকৃত, দুটি অস্বীকৃত) জনতা ব্যাংকের, সাতটি (পাঁচটি স্বীকৃত, দুটি অস্বীকৃত) বিল মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এবং তিনটি বিল ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের তিনটি বিলই অস্বীকৃত। অথচ এসব বিল পরিশোধের জন্য যমুনা গ্রুপের পক্ষ থেকে দিনের পর দিন অনৈতিকভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এতে সোনালী ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তা বিব্রতও হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
সূত্র আরও জানায়, ২০১২ সালের ১৮ জানুয়ারি যমুনা স্পিনিং মিলস লিমিটেড জনতা ব্যাংকের দিলকুশা করপোরেট শাখায় হলমার্ক গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হলমার্ক ডিজাউন ওয়্যার লিমিটেডের নামের সাতটি ব্যাংক টু ব্যাংক ঋণপত্র খোলে। ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান শাখায় হলমার্ক ডিজাউন ওয়্যার লিমিটেডের আরও একটি ঋণপত্র খোলে যমুনা ডেনিমস লিমিটেড। যুমনা গ্রুপের আরেক প্রতিষ্ঠান শামীম কম্পোজিট লিমিটেডের মাধ্যমেও এলসি খোলা হতো। তবে কোনো পণ্য সরবরাহ করা হতো না। এর মধ্যে আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে সুতার এলসি খুলে দাখিল করা হয়েছে কাপড়ের বিল। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে যমুনা ডেনিমের নামে এলসি খুলে বিল দাখিল করা হয়েছে যমুনা স্পিনিং মিলের নামে। এভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া বিল দাখিল করে তা পরিশোধের জন্য সোনালী ব্যাংককে চাপ দেওয়া হচ্ছে।
সূত্র মতে, ব্যাংক টু ব্যাংক ঋণপত্র খোলা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু কোনো ধরনের পণ্য সরবরাহ না করায় স্থানীয় এসব ঋণপত্রের বিপরীতে স্বীকৃতি দিয়ে বিপাকে পড়ে যায় সোনালী ব্যাংক। তবে হলমার্কের আড়াই হাজার কোটি টাকার জালিয়াতির ঘটনা যখন গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়, তখন প্রতিষ্ঠানটি তড়িঘড়ি করে এটিকে ঋণদায় হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে।
সোনালী ব্যাংক জানিয়েছে, যমুনা গ্রুপের এসব প্রতিষ্ঠান পণ্য সরবরাহ না করে ব্যাংক টু ব্যাংক ঋণপত্র খুলে জালিয়াতির মাধ্যমে ২০০ কোটি টাকার ভুয়া বিল দাখিল করে। ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে স্থানীয়ভাবে রপ্তানি-জালিয়াতির মাধ্যমে এসব বিল দাখিল করা হয়েছে, যা পরিশোধযোগ্য নয় বলে মনে করে সোনালী ব্যাংক। এ ছাড়া গত বছরের ১৪ মার্চ ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় হলমার্ক ডিজাউন ওয়্যারের নামে তিনটি ঋণপত্র খোলে যমুনা স্পিনিং মিলস। ২৭ মার্চ মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান শাখায় হলমার্ক ফ্যাশনের নামে একটি ঋণপত্র খোলে যমুনা ডেনিমস। ৩ এপ্রিল মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান শাখায় হলমার্ক ফ্যাশনের নামে আরও একটি ঋণপত্র খোলে যমুনা ডেনিমস। ১৮ এপ্রিল জনতা ব্যাংকের দিলকুশা করপোরেট শাখায় হলমার্ক ফ্যাশনের নামে দুটি ঋণপত্র খোলে শামীম কম্পোজিট। এই ঋণপত্রগুলোর কোনোটিই সোনালী ব্যাংকের স্বীকৃতি পায়নি ত্রুটিবিচ্যুতি বা জাল-জালিয়াতির কারণে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভুয়া ঋণপত্রের মাধ্যমে হলমার্ক যে আড়াই হাজার কোটি টাকার ঋণদায় সৃষ্টি করেছে, এর একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল ইনল্যান্ড বিল পারচেজ তথা আইবিপি-সংক্রান্ত। প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, স্থানীয় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঋণপত্র খোলা থেকে শুরু করে সব আনুষ্ঠানিকতাই সম্পন্ন হয়েছে, কিন্তু কোনো ধরনের পণ্য আদান-প্রদান হয়নি। এ ছাড়া অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণপত্র খোলারও ঘটনা ঘটেছিল। যে কারণে পরবর্তী সময়ে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার বিল (যা নন-ফান্ডেড) আটকে দেয় সোনালী ব্যাংক। এর মধ্যে প্রায় ২০০ কোটি টাকার বিল পরিশোধ করেছে ব্যাংকটি।
অন্যান্য অনেক বিল পরিশোধ করলেও নানা ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে যমুনা গ্রুপের এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিল পরিশোধ করছে না সোনালী ব্যাংক। যমুনা গ্রুপের ভয়ে সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা এ বিষয়ে স্বনামে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে ব্যাংকটির শীর্ষ পর্যায়ের দুজন কর্মকর্তা বলেন, বেশির ভাগ বিলেই তথ্যের নানা গরমিল রয়েছে। কোনো বিলে সুতা সরবরাহের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সরবরাহ করা হয়েছে আনুষঙ্গিক পণ্য বা গার্মেন্ট এঙ্সেরিজ। আবার কোনো কোনো বিলের কাগজপত্রে হলমার্কের প্রতিষ্ঠানের নাম ভুল দেওয়া হয়েছে। যে কারণে বিলগুলো পরিশোধ করছে না কর্তৃপক্ষ। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে অন্যায়ভাবে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে যমুনা গ্রুপ। অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, স্বীকৃত বিলের পাওনা পরিশোধের জন্য সোনালী ব্যাংকের একজন উপব্যবস্থপনা পরিচালককে প্রধান করে গঠিত কমিটি ৫৮৬টি বিল পরিশোধযোগ্য বলে একটি প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে যমুনা গ্রুপের এই ২১টি বিল নেই। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ২৮১তম সভায় এই ২১টি বিল পরিশোধযোগ্য নয় বলে মত দিয়েছেন পর্ষদ সদস্যরা।
পীর মাশায়েখ খতিব ও ইমামরা মাঠে নামছেন
যমুনা গ্রুপের সব অনৈতিক ব্যবসা বন্ধ এবং এর মালিককে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশবরেণ্য অনেক পীর-মাশায়েখ, ইমাম ও খতিব। একই দাবিতে বিভিন্ন ইসলামী দল ও সংগঠনও বিবৃতি দিয়েছে। পৃথক বিবৃতিতে বলা হয়, পীর-মাশায়েখ, ওলি আউলিয়া এবং মুসলিম মনীষীর পদধন্য বাংলাদেশে মাদক ব্যবসা চলবে না। যমুনা গ্রুপের মালিক নুরুল ইসলাম বাবুলকে সপরিবারে গ্রেফতার না করা হলে লাখ লাখ ভক্ত, মুরিদ, আশেকান, জাকেরিন ও ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলেও বিবৃতিতে হুমকি দেওয়া হয়।
কিশোরগঞ্জের খানকাহ এমদাদিয়া আশরাফিয়া থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে পীরে কামেল আল্লামা শাহ মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, 'বাংলাদেশের মাটিতে কোনো ধরনের মাদকব্যবসা বরদাশত করা হবে না। আগেও আলেমগণ আন্দোলন করার ফলে এই অভিশপ্ত বাবুল মদের বাণিজ্য বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল। আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। কোনো ধরনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই। যমুনা গ্রুপের সব ব্যবসা বন্ধ না করলে এ জন্য সারা দেশের মানুষকেই আল্লাহর গজবের শিকার হতে হবে।' বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'এক কুখ্যাত বাবুলের জন্য কোটি কোটি জনতা আল্লাহর আজাবের শিকার হবে, তা আমরা মেনে নিতে পারি না। আমাদের ইমানি দাবি পূরণের পাশাপাশি যুবসমাজকে রক্ষার জন্যই প্রয়োজনে হরতাল-অবরোধসহ যে কোনো কর্মসূচিতে সব ভক্ত, মুরিদান, আশেকানদের নিয়ে আন্দোলনে শরিক হতে প্রস্তুত রয়েছি।' আল্লামা শাহ মুহাম্মদ ইসমাঈল আগামী শুক্রবার কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শহিদী মসজিদে জুমার নামাজের পর যমুনা গ্রুপের সব ব্যবসা বাতিল এবং তার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন।
যমুনা গ্রুপের হান্টারসহ সব মাদক ও নেশাদ্রবের বিরুদ্ধে রাজপথে উলামায়ে কেরামের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন খেলাফতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির ও ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী। গতকাল বাদ আসর লালবাগের কার্যালয়ে ইসলামী যুব খেলাফত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ ঘোষণা দেন।
মুফতি ফজলুল হক আমিনীর (রহ.) ছেলে মাওলানা হাসানাত বলেন, '৯০ শতাংশ মুসলমান অধ্যুষিত বাংলাদেশে যমুনা গ্রুপ মদ উৎপাদন ও সরবরাহ করে দেশের আনাচে-কানাচে যুবসমাজের নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ ধ্বংস করছে। ফলে সন্তানও তাদের বাবা-মাকে হত্যা করতে কুণ্ঠাবোধ করছে না। এ অবস্থা আর চলতে দেওয়া যায় না।' আবুল হাসানাত আমিনী জানান, কোনো ব্যক্তিবিশেষ বা গ্রুপ নয়, তাদের আন্দোলন মাদক ও সব ধরনের নেশা জাতীয় দ্রব্যের বিরুদ্ধে। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী যুব খেলাফতের সহসভাপতি মাওলানা কাজী আজিজুল হক, মাওলানা তাসলীম আহমদ, মাওলানা সালমান আহমদ, মাওলানা মঞ্জুর মুজিব, মাওলানা শহিদুল ইসলাম, মাওলানা মুনসুরুল আলম, মাওলানা আনিছুর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশের সম্মিলিত ইসলামী জনতার সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ রেজওয়ান আহমদ এক বিবৃতিতে বলেন, যমুনা গ্রুপের সব ব্যবসা বাতিল এবং যমুনা ফিউচার পার্কটিকে ভেঙে দেশের সবচেয়ে বড় জামে মসজিদে পরিণত করার ইমানি দাবিতে আগামী শুক্রবার সিলেটের কোর্টপয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশগ্রহণের জন্য সিলেটের সর্বস্তরের তৌহিদী জনতাকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
শায়খ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, ঢাকার মহাপরিচালক পীরে কামেল আল্লামা মুফতি মীযানুর রহমান সাঈদ পৃথক বিবৃতিতে বলেন, 'মুসলমানদের জন্য মদ ইসলামে পুরোপুরি হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। যমুনা গ্রুপ মদের বাণিজ্য করে বাংলাদেশের শুধু মেরুদণ্ড ভেঙে দিচ্ছে না, এদেশে ইসলামের বিরুদ্ধেই জিহাদ ঘোষণা করেছে।' তিনি বলেন, 'কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী বাবুল এবং যমুনা গ্রুপের ক্রাউন হান্টারের বিরুদ্ধে খতিব মাওলানা উবায়দুল হক, আল্লামা মুফতি ফজলুল হক আমিনী, শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক এবং চরমোনাই পীর মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ ফজলুল করীমসহ (রহ.) অনেক আলেম দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন বলে তারা তখন মদের ব্যবসা বন্ধে বাধ্য হয়েছিল।'
মুফতি মীযান আরও বলেন, বাংলাদেশের সম্মিলিত ইসলামী জনতা যে ইমানি আন্দোলনের সূচনা করেছে, এর প্রতি সমর্থন জানানো এবং তাদের আন্দোলনে অংশগ্রহণ প্রত্যেক মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব। এর পাশাপাশি যারা আগে থেকে মাদকবিরোধী আন্দোলন করছেন, তাদেরও এর প্রতি সংহতি জানানো উচিত। যমুনা গ্রুপের মদের ব্যবসা বন্ধ না হলে সবার ওপরই গজব নাজিল হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। মুফতি মীযান দেশের সব পীর-মাশায়েখ, আলেম, ইমাম, খতিব, বক্তা ও তৌহিদী জনতাকে যমুনা গ্রুপের সব ব্যবসা বাতিল করে বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত করার জিহাদে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান। মিরপুর মুসলিম বাজার মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও পীরে কামেল আল্লামা মুফতি আবদুল ওয়াহিদ কাসেমি বলেন, 'মসজিদ ভেঙে কবরস্থান গুঁড়িয়ে দিয়ে মদের বার বসানো হয়েছে, এই সংবাদ জানার পর আমার বুকটা ফেটে গেছে।' তিনি আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, 'আমার মতো হাজারো মানুষের বুকফাটা ইমানি আর্তনাদে পার্কটিতে গজবও নাজিল হতে পারে।'
এদিকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা হেফাজতে ইসলামের আহ্বায়ক ও মাদানিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবদুল বাছির, জমিয়ত নেতা মাওলানা রুহুল আমিন নগরী এবং কিশোরগঞ্জ-৬ আসনে আগামী নির্বাচনে ১৮ দলীয় জোটের মনোনয়নপ্রত্যাশী আতিকুল্লাহ ভুঁইয়া বাংলাদেশের সম্মিলিত ইসলামী জনতার কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যমুনা গ্রুপের সব ব্যবসা বাতিল এবং নুরুল ইসলাম বাবুলের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলনে সক্রিয় সহযোগিতার অঙ্গীকার করেন। জমিয়ত নেতারা বলেন, অতীতেও আমাদের পূর্বসূরিরা ক্রাউন হান্টারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যমুনা গ্রুপের জবাব দিয়েছিলেন।
এদিকে ইমাম উলামা মুসলি্ল পরিষদের সভাপতি মাওলানা আবদুল আলিম নেজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল কাজী মাসুদুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, সরকার যমুনা গ্রুপের সব ব্যবসা বন্ধ এবং বাবুলকে ফাঁসি না দিলে ইসলামী জনতা প্রয়োজনে আইন হাতে তুলে নেবে।
একই দাবিতে বাংলাদেশ তৌহিদী জনতা, বাংলাদেশ মোতাওয়ালি্ল সমিতি, বাংলাদেশ কাজী সোসাইটি, ইমান আকিদা সংরক্ষণ পরিষদ, নাস্তিক-মুরতাদবিরোধী ইসলামি জনতা, বাতিল প্রতিরোধ ও হ
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।