আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!
আমি হাসতে হাসতে ভুলে গেলাম আমার মুঠো ভরা অতীত, আমার চোখের জলগুলো কর্পূরের মতো আকাশে উড়ে যায়। আমি গুনতে থাকি আমার বেদনাগুলো কতটা পাগল, সমান্য আঘাতে এতো কান্না কেন এই মনে, আজও ভুলে যাই পথ চলতে চলতে! ব্যাগে পড়ে আছে সাদা কাগজে এক মুঠো লেখা, লেখাগুলো বড্ড সুন্দর, দু লাইনের। তবে সে লেখাতে মিশে আছে জগৎ ভরা বিষন্নতা। ইদানিং কেনো জানি নগরীর সব বিষন্নতা আমাতে বাসা বাধে আর আমার হারিয়ে ফেলো সুখে মাতে পুরো পৃথিবীর অলিগলি।
আমি সেখানে কল্পনা করে একে ফেলি আমার প্রিয়মানুষের হাসি। বাস্তবে আমিই ভুল ছিলাম।
কিছু মানুষ যে আমার অভাব মনান্তরের মতোই অনুভব করে, অথবা আমাকে ভেবে চোখের জল ভাসায় প্রতিটা দিন সেটা আমার গোবর ভরা মাথায় এতটুকু খেলেনি। ইদানিং এ মাথায় খেলা করে সব অর্থহীন ভাবনা: ঘর বাধবো সোনালী ফ্রেমে সেখানে হাসবে আমার পাশে কোনো মানবী কেউ। আমাদের দুজনার মাঝে দাড়িয়ে একটি ছেলে অথবা মেয়ে।
যার নাম নিয়ে আমরা কতনা বাজি ধরে ছেলে হলে রাখবো "কথা" অথবা মেয়ে হলে রাখবো "নদী"। কতনা রাত বালিশে মাথা এলিয়ে শ্রান্ত শরীরে চোখ বুঝতে বুঝতে ভেবেছি নদীর পাশে একটা সুন্দর ভিলা বাড়ি, বাবা মা থাকবে পাশের রুমে আর আমরা থাকবো দখিনার বারান্দার কাছে । আমাদের সন্তান খেলে বেড়াবে উঠোন জুড়ে। কখনো কখনো এসব ভাবনা ভাবলে হাসি পায়, তবু কেনো যেনো রাতগুলো এসব ভেবে কাটাতে ভালোই লাগে, মনটা যেনো খাচা ছাড়া অচিনপাখি। সাদা বরফে ঢাকা দিন গুলোতে শীত শীত মনে কতনা আরামে শুয়ে শুয়ে স্বপ্নের জাল বুনে যাই।
হায় জীবন! এখনও পাশে এসে দাড়ালো না কে্উ, যারা দাড়াতে চায় তারা ভাবে এ মনে অন্যকেউ বাসা বানিয়ে রেখে চলে গেছে, আর আমি বোকার মতো সেই বাসা পাহারা দিয়ে যাই বিনা বেতনে!
বারবার মনটা চলে যাচ্ছে সেই চিঠির দুটো লাইনে। কিছুক্ষন পর পর মনের মাঝে একটি ছায়াচিত্র ভেসে ওঠে। শীতের কনকনে হাওয়া মাঝে মাঝে মুখটা বোধহীন করে দেয়, আমার মন খারাপ গুলো জমে যায় সারিবাধা পাইন গাছের মতোই, আমি বরফের পাহাড় ডিঙ্গাতে ডিঙ্গাতে সামনে এগিয়ে যাই, কোথায় যাচ্ছি কেন যাচ্ছি উত্তর একটাই, বাবার জানাযায় যোগ দিতে। হ্যা চিঠিতে বোনের লেখা দুটো লাইন:
বাবা মারা গেছে,
কাল বিকেলে জানাযা!
হাতে পাবার পরই হাটতে শুরু করেছি, কবে ছেড়েছে খামটা দেখিনি, চিঠিতে তারিখ লেখা নেই কোথাও। কতদিন লাগলো চিঠিটা আমার হাতে পৌছুতে জানি না, শুধু জানি কাল বাবার জানাযা. পকেটটা শূন্য, প্লেনে উঠবার সাধ্য নেই, শুধু জানি কালকের মধ্যে পৌছুতে পারলে বাবার পা ধরে একটু কাদতে পারবো, বুকের ভিতর জমে আছে সহস্র বছরের কান্না।
বরফের মতো শক্ত হয়ে জমে আছে বুকের ভিতর, বের হচ্ছে না, সেটা নিয়ে একটু কষ্ট আরকি! আমি আসছি বাবা, তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে!
উৎসর্গ লোটাসকে যার বাবা মারা গেছেন ২০০৫ এ, তবু এখনো দেশে গিয়ে দেখতে পারেনি বাবার কবর! লোটাসকে নিয়ে এটা আমার দ্বিতীয় লেখা। ওকে নিয়ে গল্প লেখার শখ আমার অনেকদিনের, কিন্তু লিখতে পারি না, কারন আমি ভালো লিখিয়ে না, আমার হাতে তেমন ভালো লেখা আসেনা। কিছু মানুষের দুঃখ আছে খুবই স্বতন্ত্র, কিছু মানুষের পথচলা খুবই বিচিত্র, কিছু মানুষের মন খুবই অসাধারন। মাঝে মাঝে মনে হয় এরা এ মর্ত্যের খুব স্বাভাবিক কেউ নন, হয়তো আগের জনমে তারা আকাশের কেউ ছিলো অথবা এরা আকাশ থেকে ছিটকে পড়া কোনো এক তারা! আমি ভাবনায় পড়ে যাই এদেরকে নিয়ে কিছু লিখতে। হয়তো যেদিন লিখবো সেদিন তারা আরও উচ্চতায় চলে যাবে, এদেরকে নাগাল পাওয়া আমাদের সাধ্য নেই!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।