আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"পশুর মাতৃত্ব ও আমরা"

সংঘাতহীন পৃথিবীর প্রত্যাশায় ..........।

একটি খবর দেখে চোখ আটকে গেল। নবজাত তিন ব্যাঘ্র শাবককে লালন-পালন করছে কুকুর৷ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস স্টেটের সাফারি জুওলজিক্যাল পার্কে এ দৃশ্য চমত্‍কৃত করছে দর্শকদের৷ পার্কের মালিক টম হার্ভি জানান, গত রবিবার তিন শাবককে জন্ম দেয়ার পরই তাদের পরিত্যাগ করে মা বাঘিনী৷ শিশু বাঘগুলো মায়ের খোঁজে সারা পার্ক ঘুরে বেড়াচ্ছিল৷ ব্যাপারটি বুঝতে পেরে ওদের সদ্য প্রসবা একটি মা কুকুরের কাছে নিয়ে আসেন হার্ভি৷ মা কুকুরটি নিজ সন্তনের মতোই ব্যাঘ্র শাবকগুলোকে দুধ খাওয়াচ্ছে, যত্ন নিচ্ছে, আদর করছে! একটি কুকুর যেখানে বাঘের ছানাকে মাতৃস্নেহে লালন করছে, সেখানে আমরা দেখি মানুষ হয়েও পরকীয়ায় নিমগ্ন মা নিজের হাতে কিংবা প্রেমিকের সহায়তায় নিজ সন্তানকে হত্যা করে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখছে, লাশ বস্তাবন্দী করে রাস্তায় ফেলে দিচ্ছে, কিংবা জানালা দিয়ে লাশ ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছে পঁচা আবর্জনার মত। যে সন্তান গর্ভে আসার পর থেকেই তার মা ডাক শোনার প্রতিক্ষায় মা কাটিয়েছে কত কল্পনাপ্রবণ দিন, কত নির্ঘুম রাত, কতই না ব্যাকুল মুহূর্ত। যে সন্তানের মা ডাক শোনার পর তীব্র প্রসব যন্ত্রনা ভুলে মা পেয়েছিল স্বর্গীয় সুখ, যে সন্তানের একটু কান্না শুনে মা ছুটে আসতেন সমস্ত জাগতিক প্রয়োজন ফেলে, সেই শিশুটিই আজ মায়ের চোখের কাঁটা, তার অস্তিত্ব আজ মায়ের পরকীয়ার অস্তিত্বের জন্য হুমকি! তাই মা আজ ভালোবাসার সোনার হরিণের আশায় "সীমার" হয়ে গেছে। নিজ সন্তানের কণ্ঠরোধ করতে তার হাত কাঁপেনা। হায়রে মাতৃত্ব! মাতৃত্ব সম্ভবত মানবতার চেয়েও মহৎ কোন অনুভব। কারণ মানুষ অনেকক্ষেত্রে মানবতার ডাককে উপেক্ষা করতে পারলেও, মাতৃত্বের ডাককে উপেক্ষা করতে পারে না। অন্য মানুষের কষ্টে হৃদয় বিগলিত না হলেও নিজ সন্তানের কষ্টে ব্যাকুল হয় না এমন মানুষ পৃথিবীতে বিরল। আমরা যে মনুষ্যত্বের গর্ব করি, যে কারণে নিজেকে সৃ্ষ্টির সেরা জীব বলি, তার কতটুকুর সত্যিকার দাবীদার আমরা? এ বিশ্বকে প্রতিটি শিশুর বাসযোগ্য করে যাবার যে অলিখিত শপথ আমরা নিয়েছিলাম, পেরেছি কি সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে? যে শিশুরা মায়ের কোলেই নিরাপদ নয়, সড়কে নিরাপদ নয়, নারীলোভী আত্মীয় বা প্রতিবেশীর কাছে নিরাপদ নয়, ধর্মী্য শিক্ষকের কাছে নিরাপদ নয়, তার নিরাপত্তার জন্য আমরা কি কিছুই করতে পারি না? এভাবে এক নপুংসক সমাজের অক্ষম প্রতিনিধি হয়ে আর কতকাল বাঁচবো? আর কতকাল ??

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।