আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজধানীতে জমে উঠছে পশুর হাট

রাজধানীর পশুর হাট জমে উঠছে। গতকাল দুপুরের পর থেকেই বেচাকেনা বেড়েছে। এর আগে দুইদিন তেমন বেচাকেনা হয়নি। আজ পুরোদমে বেচাবিক্রি হবে বলে মনে করছে ব্যবসায়ীরা। এদিকে এ বছর রাজধানীতে রেকর্ড পরিমান কোরবানীর পশু উঠেছে।

ক্রেতারা বিভিন্ন হাট ঘুরে ঘুরে পশু কিনছেন। রাজধানীতে পশু আমদানী বেশি হওয়ায় তুলনামূলক দাম কম। এতে অনেকটা খুশি ক্রেতারা। বিক্রেতাদের জানায়, বাজার মন্দা। ক্রেতার সংখ্যা যেমন কম, তেমনি লাভের পরিমানও সামান্য।

ব্যবসায়ীদের মতে, কোরবানির হাটে ভারতীয় গরুর আমাদানির কারণে দাম কম। গতকাল সরেজমিন গাবতলী পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাকে গরু আসছে। খামারিরা বলছেন, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, মেহেরপুর, সিরাজগঞ্জ, কুমিল্লার দাউদকান্দি, মানিকগঞ্জের সিংগাইর থেকেই আসছে বেশিরভাগ গরু। ফরিদপুর থেকে দুটো গুরু নিয়ে গাবতলীতে হাটে এসেছেন শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, গাবতলী বাজারে তার গরুই এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড়।

দাম চাচ্ছেন প্রতিটির ১৩ লাখ টাকা। সাত মাস বয়সে এ গরু দুটি সাত লাখ টাকায় কেনা হয়েছিল। গত দুই দিনে অনেকেই গরু দুটিকে দেখতে ভিড় করেছেন। তবে কেউ দাম করেননি বলেও জানান তিনি।

মেহেরপুর জেলার গাংনী থেকে আসা খামারি রফিকুল ইসলাম বলেন, দুই দিন হয়েছে দশটি গরু নিয়ে এসেছি।

তবে এখনো ভালো ক্রেতার দেখা পাইনি। তার দাবি, প্রতিটি গরুর মাংস হবে চার মনের বেশি। দামও হাঁকাচ্ছেন ৪০ থেকে ৫০ হাজারের মধ্যে। কুষ্টিয়া থেকে আসা খামারি মো. শফিক মোল্লার কাছেও মিললো একই বক্তব্য। তিনি জানালেন, দুই দিন রোদের মধ্যে গরু নিয়ে অপেক্ষা করছেন, তবে ক্রেতা নেই।

তবে তিনি আশা করছেন আজ-কাল ক্রেতা বেশি হবে। কারন একদিন পরেই ঈদ। অবশ্য ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেল শ্যামলী থেকে গরু কিনতে আসা সাইফুর রহমানের কণ্ঠে। তিনি জানান, দুই দিন ধরে তিনি বাজারে আসছেন পছন্দের কোরবানীর পশু কেনার জন্য। কিন্তু পাচ্ছেন না।

গাবতলী হাট পরিচালনা কমিটির সদস্য সানোয়ার হোসেন বলেন, এবারের হাটে গরু যথেষ্ট উঠলেও ক্রেতাদের ভিড় তেমন দেখা যাচ্ছে না। ঈদের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে বলে তার আশা। দেখা গেছে, গরুর দাম গতবারের চেয়ে এবার তুলনামূলক কম। আলী আকবর নামের এক ক্রেতা গরু কিনেছেন ষাট হাজার টাকায়। তার মতে, শনিবার গাবতলী ঘুরে গিয়েছি।

তবে দামে মেলেনি। তবে বাজারে গরু উঠেছে অনেক। অনেকেই এসে ঘুরে ফিরে দেখছেন। তারা অপেক্ষা করছেন ঈদের আগে গরুর দাম আরো কমার। মিজানুর রহমান সিরাজগঞ্জ থেকে ৩৫টি গরু নিয়ে গাবতলীতে পৌঁছেছেন শনিবার রাতে।

গতকাল বেলা ১১টা পর্যন্ত মাত্র ৩টি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন। তার আরো ৩৫টি গরু গাবতলীতে এসে পৌঁছাবে আজ রাতে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বছরের এই কটি দিন আমরা ঢাকা আসি দুইটা পয়সার মুখ দেখবো বলে। একদিকে গরুর বিচালি, খড় ও ঢাকায় গরু নিয়ে আসার খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে, রাস্তায় চাঁদার হারও আগের চেয়ে বেশি।

সে তুলনায় ক্রেতারা দাম বলছে কম। ঢাকায় গরু ঢোকার পর যত তাড়াতাড়ি বেচা যায় তত লাভ। একটা গরু একদিন ফেলে রাখলে বাড়তি খড়ের পয়সা গুণতে হয়। রাজধানীর আজমপুর পশুরহাটে ব্যবসায়ী শাহজাহান আলী জানান, অনেক আশা নিয়ে সেই চুয়াডাঙ্গা থেকে গরু নিয়ে এসেছি বিক্রি করবো। কিন্তু এখানে গরুর দাম তুলনামূলক কম।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে আসা গরু বিক্রেতা আমিরুল ইসলাম জানান, ঢাকায় এসেছি গরু বিক্রি করতে, লাভবান হবো বলে। কিন্তু ঢাকায় গরুর দাম কম।

ব্যবসায়ী জইমুদ্দিন জানান, ১৬টি গরু এনেছি বিক্রি করলাম ১৩টি। লাভ কম হলেও খুশি। গরুগুলো বিক্রিতো করতে পেরেছি।

বিক্রি না করতে পারলে বাড়িতে নিয়ে কি করতাম। তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, গরু আনার সময় রাস্তায় হয়েছে চাঁদাবাজি। এখন বাজারে এসেও গাড়ি প্রতি ১৫'শ থেকে ২ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। পুলিশ চাঁদা দাবি করে। না দিলে রশি কেটে দেয়।

এদিকে,আজমপুর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্বপাশ্বর্ে সংলগ্ন সড়কের দু'পাশে বাঁশ দিয়ে কোরবানির পশু রেখে বাজার বসেছে। বারিধারা জে ব্লকে রাস্তা খুড়ে বাশের খুটি বসিয়ে গরু রাখা হয়েছে। ফুটপাতেও গরুর সারি। ফলে বাড্ডা কুড়িল রোডে যানজট অসহনীয় পর্যায়ে পেঁৗছেছে। আগারগাও এলাকায় বাংলাদেশ বেতারের বাউন্ডারির ভেতরে গরু রাখা হয়েছে।

নয়াবাজার এলাকায় অলিগলি ছাড়িয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ বা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনের সড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে হাট। হাসপাতালের গেটের সামনেও পশু বাঁধা রয়েছে। অননুমোদিত হাটের কারণে সবচে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে হাসপাতালে আগত রোগী এবং তাদের স্বজনরা।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.