নাগরিক অধিকার, সংবিধান ও আদালত অবমাননা
ফরহাদ মজহারের লেখাটা পড়লাম। হাসি পাচ্ছে। হাসি পাচ্ছে বিষয় চিন্তা করে। হাস্যকর সব ঘটনা ঘটছে আদালত নিয়ে । গত ক'মাস ধরে।
১. মানহানি মামলার নামে একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সারাদেশের বিভিন্ন আদালতে মামলা করে তাতে আবার তলব দেয়া হচ্ছে।
পরিকল্পিত ঝামেলা ফেলানোর জন্য সরকারের নিজের সতর উলঙ্গ করে দিয়ে এসব করে যাচ্ছে। কিন্তু কারো কোন বাৎচিত নেই।
২. আর যে কোন মামলায় সরকারী পেটুয়া বাহিনী দিয়ে ধরে এনে যখন তখন রিমান্ডে নেয়ার একটা মহোচ্ছব চলছে রিতীমত।
৩. আদালতের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে খোদ পুলিশ বাহিনী 'আমার দেশ' এর প্রেস বন্ধ রেখেছে মাসাধিক কাল।
তখন আদালত অবমাননার মামলা হয়না। কিন্তু, আদালতের কোন রায়ের বিরুদ্ধে লজিক্যাল কোন বিবৃতি আসলেই তা হয়ে যায় বিরাট আদালত অবমাননা।
৪. কিছুদিন আগেও এটর্নী অফিস থেকে এক জামিন আটকে দেয়া হয়েছিল । সচেতনপাঠকরা ঠিকই মনে রেখেছেন।
৫. মানবতা বিরোধী আদালতে বিচারক দেয়া হয়েছে এমন লোককে যে নিজেই আদালত অবমাননা থেকে শুরু করে মার্ডার কেসের আসামী।
কারণ তিনি দলীয় লোক। আরো কত জন এরূপ আছে কে জানে?
ফরহাদ বলেছেন:
আমরা দেখেছি কিভাবে একজন ব্যক্তি-বিচারক হাইকোর্টের নির্দেশ স্খগিত রেখে নাগরিক ও মানবিক অধিকার লঙ্ঘন করছে। বিশেষত অভিযুক্তকে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রিমান্ডে নিতে এবং অত্যাচার নির্যাতন করে জোর করে অপরাধের স্বীকারোক্তি আদায় করতে কোন কোন বিচারক যে অনুমতি দেন সেটা তো আমরা চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি। চিন্তা, বিবেক, আইন ও ইনসাফের প্রশ্নে আদালতের একনায়কতান্ত্রিক ভূমিকা এই সকল ক্ষেত্রে ব্যক্তি-বিচারকের স্বেচ্ছাচার এবং নাগরিক ও মানবাধিকার বিরোধী ভূমিকা হিসাবে হাজির হয়েছে।
এতকিছুর পরেও বলতে হয়, এটা রাজনীতির জগত।
কত কিছু হয়? কিন্তু মানুষের শেষ আশ্রয় যে বিচারালয়। এতে এত রাজনীতিকরণ হলে মানুষ যাবে কোথা?
ম্যকেইভেলি কি লিখে গ্যাছে সেটা না ঘেটেই বলা সম্ভব সরকার কি করছে এখানে। ফরহাদ মজহারের এজন্য দুটো সূত্র দিয়েছেন,
" আদালত অবমাননা সংক্রান্ত তর্কের কোন পরিচ্ছন্ন মীমাংসা নাই। শ্যাম চাই আবার কুলও ঠিক রাখতে হবে। এক দিকে দাবি করতে হবে রাষ্ট্র নাগরিকদের চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে।
অন্য দিকে আবার আইন ও বিধিনিষেধ সাপেক্ষে এমনভাবে নাগরিকদের জিহ্বা ও লেখালিখির রাশ টেনে ধরে রাখতে হবে যাতে চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার দাবি নিছকই কথার কথা হয়ে থাকে। "
সাব্বাশ। চরম সূত্র। কিন্তু চোখদিয়ে রক্তাশ্রু না বের হলে বোধয় মনের দুঃখটা বলা যাবেনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।