আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিজামীদের গ্রেপ্তার রাখার আদেশ.... (ডিমের দাম বেড়ে জাবার আসঙ্কা )



ঢাকা, আগস্ট ০২ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- একাত্তরে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর চার শীর্ষ নেতাকে সোমবার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তার রাখার আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লার উপস্থিতিতে এদিন আদালত তাদের হাজিরা গ্রহণ করে। এরপর তাদেরকে গ্রেপ্তার রাখার আদেশ দিয়ে পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ ছাড়া আদলত মুলতবি ঘোষণা করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর জামায়াতের এই চার নেতাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন প্রথমবারের মতো পুরানো হাইকোর্ট ভবনে স্থাপিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাদেরকে হাজির করা হয়।

এর আগে কড়া পুলিশ প্রহরায় কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি পুলিশ ভ্যানে তাদেরকে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সকাল ১০টায় তাদেরকে ট্রাইব্যুনালের নিচ তলায় অবস্থিত হাজতখানায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদেরকে দ্বোতলার এজলাস কক্ষে নেওয়া হয়। এরপর ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নিজামুল হক, এ টি এম ফজলে কবির ও এ কে এম জহির আহমেদ আসন গ্রহণের পর আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। কাঠগড়ায় জামায়াতের এই চার নেতার জন্য চারটি চেয়ার রাখা ছিলো।

তারা সেই চেয়ারে বসেছিলেন। আদালত মুলতবির আগেই চার জামায়াত নেতাকে কারাগারে নিতে এজলাস কক্ষ থেকে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। কাঠগড়ায় নেওয়ার পর নিজামী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লা তাদের আইনজীবীদের সঙ্গে কানে কানে কথা বলেন। এক পর্যায় তারা চেয়ারে বসেন। আদালতের কার্যক্রম শুরুর পর প্রায় ১০ মিনিট তারা কাঠগড়ায় ছিলেন।

আদালতে আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী আলাল, জসিম উদ্দিন সরকার, ফেরদৌস আখতার ওয়াহিদা, ফরিদ উদ্দিন খানসহ ২০/২৫ জন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। সরকার পক্ষে ছিলেন ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী প্যানেলের প্রধান গোলাম আরিফ টিপু, সদস্য সৈয়দ রেজাউর রহমান, সৈয়দ হায়দার আলী, জিয়াদ আল মালুম, আবদুর রহমান হাওলাদার ও আলতাফ হোসেন। অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান, মুরাদ রেজা, মমতাজ উদ্দিন ফকির ও সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন প্রমুখ এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে আসামিদের পক্ষে আইনজীবী তাজুল ইসলাম ও জয়নুল আবেদিন আদালতের কাছে ওকালতনামা ও তিনটি আবেদন উপস্থাপন করেন। আদালত এসব বিষয় ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দিতে বলেন।

আদালত থেকে বেরিয়ে জয়নুল আবেদিন সাংবাদিকদের বলেন, "আমরা চার নেতার পক্ষে ওকালতনামা আদালতের কাছে উপস্থাপন করেছি। আদালত তা গ্রহণ করেছেন। এছাড়া তিনটি আবেদনও আমরা দিয়েছি। এগুলো হচ্ছে- অভিযোগের প্রত্যায়িত (সার্টিফাইড) অনুলিপি, আগের জারি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিল আবেদন এবং মামলা কাগজপত্র। " তিনি জানান, আদালত পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেনি।

কঠোর নিরাপত্তা : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের এই চার নেতার হাজিরা উপলক্ষে সোমবার ট্রাইব্যুনালসহ আশ-পাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। স্থাপন করা হয় সিসিটিভি ও আর্চওয়ে। র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও দায়িত্ব পালন করে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যানে জামায়াতের চার নেতাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা এবং সেখান থেকে পুনরায় কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। পথে আসামিদের বহনকারী ভ্যানের সামনে-পেছনে পুলিশের ৫/৬ টি পিকআপ ছিলো।

আদালতের বাইরে বিক্ষোভ : জামায়াতের এই চার নেতাকে ট্রাইব্যুনালে আনার সময়ে শিশু একাডেমীর পাশে আদালতের প্রবেশ পথের সামনে 'আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান' কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০/৩৫ জন কর্মী বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় তারা 'যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাই', ' জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ' ইত্যাদি স্লোগান দেয়। পর্যবেক্ষক: আদালত কক্ষে পর্যবেক্ষকদের বসার জন্য আলাদা আসন রয়েছে। এদিন বিদেশি কোনো পর্যবেক্ষককে দেখা যায়নি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত ২৬ জুলাই ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আটক দেখানোর এক আবেদনের ওপর শুনানি গ্রহণ শেষে জামায়াতে ইসলামীর এই চার নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে তাদেরকে ২ আগস্ট (সোমবার) হাজির করার আদেশ দেন।

এর মধ্য দিয়ে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে এই আদালতের বিচার কাজ শুরু হয়। সেদিন আদেশে ট্রাইব্যুনাল আরো বলে, "গত ২১ জুলাই ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা ১ নম্বর মামলায় নিজামী, মুজাহিদ, কাদের ও কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানানো হয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলছে। চিফ প্রসিকিউটর বলেছেন, তদন্তের স্বার্থে চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি প্রয়োজন। "চিফ প্রসিকিউটর আরো বলেছেন, যদিও তারা অন্য মামলায় গ্রেপ্তার আছেন; কিন্তু এ মামলায় তারা গ্রেপ্তার নন।

ওইসব মামলায় তাদের জামিন পাওয়ার এবং বিদেশে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন। " আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, "এই চারজন যাতে বেরিয়ে যেতে না পারে� সেজন্য এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। " ১৯৭৩ সালের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট এর ৩/২ ধারার অপরাধ তদন্তের স্বার্থে জামায়াতের এই চার নেতাকে আটক দেখানোর জন্য ওই আবেদন জানানো হয়।

এ ধারায় হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ রয়েছে। নিজামী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লাকে স�প্রতি গ্রেপ্তারের পর বিভিন্ন মামলায় হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার পল্লবী ও কেরানীগঞ্জ থানায় মুক্তিযোদ্ধা হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গত ২৫ মার্চ তদন্ত সংস্থা, আইনজীবী প্যানেল ও ট্রাইব্যুনাল গঠনের ঘোষণা দিলে বহু প্রতীক্ষিত এই বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। Click This Link


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।