স্বপ্নগুলো সত্যির প্রত্যয়ে পথচলা ............
জানালা দিয়ে বৃষ্টির পানি এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে, গায়ে পানির ছিটা আসছে।
একবার মনে হল বারান্দায় গিয়ে বৃষ্টির সাথে খেলা করি, একটু মুখ টা কে ভিজিয়ে আসি। কিন্তু ........
মাঝে মাঝে চাপা কান্নার সাথে দেখতাম বৃষ্টি পড়ত অথবা ডায়েরী ছেড়াপাতা গুলো টুকরো কাগজ হয়ে ঝরে পড়ত বৃষ্টি হয়ে।
অথবা পানির মধ্যে বৃষ্টির ফোটা গুলোকে দেখা যেতো বা পাতা কে স্পর্স করে বৃষ্টি মাটিতে পড়ে যেতো!
চারপাশ খুব শান্ত বৃষ্টির শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছে না................
অরুন হেটে যাচ্ছে,বৃষ্টিতে ভিজচ্ছে সে। যতক্ষন ভালো লাগবে ততক্ষন হাটবে সে, কিন্তু 'কেন?' এই প্রশ্ন করলেই সে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।
কারন সে জানে না 'কেন' এর উওর! পিচঢালা পথে হেটে যাচ্ছে.... এ্কটা গাড়ি দ্রুত চলে গেল তাকে আরো ভিজিয়ে দিয়ে।
একরাশ পানিতে আবার সে ভিজে গেল আর মুচকি হাসল।
অরুনের নিজের সাথে কথন;-
বাসা থেকে যখন বের হচ্ছি তখন মা বলল জ্বর আসবে আজ। মা আজ কেমন করে জানি তাকিয়ে ছিল। মাঝেমাঝে মায়ের জন্য খুব মায়া হয়।
আমার কোন দিন জ্বর আসেনি। সকালে এক গ্লাস পানি গেয়ে বের হয়েছি, মা বের হওয়ার আগে বার বার বলল নাস্তা খেয়ে বের হতে।
নাস্তা খেয়ে বের হওয়া টা উচিত ছিল। বলা তো যায় না যদি মায়ের হাতে বানানো খাবার টা আর কোন দিন যদি না খেতে পারি?
এই বৃষ্টি টা কে দেখে আর লোভ সামলাতে পারলাম না।
হাত ঘড়ি টার দিকে তাকিয়ে...
সকাল ৭ টায় বের হওলাম আর এখন প্রায় ১০ টা ছুই ছুই।
হুম মোবাইল টা বন্ধ করে রেখেছি।
আল্লাহ জানে আজ কতজন ফোন করেছে আর আমাকে গালি দিয়েছে! অনেক ক্ষন তো হল আর কতক্ষন বৃষ্টি হবে?
বৃষ্টির সথে কথা;-
অরুন মনে মনে কথা বলতে বলতে এবার দাড়িয়ে গেল। সে তার বন্ধুর বাসার সামনে চলে এসেছে!
দৌড় দিয়ে বন্ধুর বাসার ছাদে চলে গেল। কিছুক্ষন পায়চারী করল। এবার সে আকাশের দিকে তাকিয়ে জোরে জোরে বলতে লাগল.............
এই বৃষ্টি তুমি আজ কখন থামবে? তুমি জানো না আমি অনেক ব্যস্ত মানুষ? আমার অনেক কাজ আছে, তুমি এভাবে সারাদিন.........
আজ বাড়ি যাবে না? আজ এত কিসের কষ্ট বল তো? কে তোমাকে কষ্ট দিয়েছে, আমাকে বল? অনেক তো হল এবার থামো প্লিজ!
বৃষ্টি এবার গুড়ি গুড়ি পরছে।
অরুন তা দেখে হেসে দিল........
অনেক থ্যাংক্স বৃষ্টি অনেক......... এত অভিমান করতে হয় না বৃষ্টি, আমি তো তোমার কাছে আসবই একদিন না একদিন.......এত অভিমান ভালো না!
কথা বলতে বলতে অরুন হারিয়ে গেল.....
শেষ....
অরুন কে অনেক খোজা-খুজি করে সেই দিন আর পাওয়া যায়নি। তার সেল ফোন টাও বন্ধ ছিল। ২দিন পর অরুনের বন্ধুর ছাঁদ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
হস্পিটালে কৃ্ত্রিম শ্বাস দিয়ে তাকে বাচিয়ে রাখা হয়। তার শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল অনেক আগে থেকেই! কিন্তু সে আর বাচতে পারেনি.......
সর্বশেষ
অরুন কে মাটি দিয়ে আসার পর হঠ্যাত কড়া রোদ্দের মাঝে খুব জোরে বৃষ্টি শুরু হল, টানা ৪ দিন সেই বৃষ্টি পড়ল............
সেই টানা ৪ দিনের বৃষ্টির পর বৃষ্টিকে আর দেখা যায় নি অনেক মাস! পরবর্তীতে আবার বৃষ্টির দেখা পাওয়া গেল।
বৃষ্টির প্রতি কারো কোন ক্ষোপ নেই, অভিমান নেই। কিন্তু দেয়ালে অরুনের বৃষ্টিতে ভিজার ছবিটার প্রতি কেন জানি খুব ক্ষোপ আর অভিমান জাগে......!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।