আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মানবতার অবক্ষয় ও মানবতার পরাজয় (সংশোধিত .......)

আওয়াজ উঠতে হবে, আওয়াজ উঠছে

সেমিনারে বক্তব্য আর ভাষনে শ্লোগানেই কেবল নিহিত মানবতার বুলি ক্ষুর্ধাত চোখগুলোর উপর তেলতেল চুলের গর্বিত খুলি.......................... মানবতার বড় বড় বুলিতে আজ সয়লাব পত্রিকার পাতাগুলোর জমিন, কবিতার লাইনগুলো আর ক্রোড়পত্রগুলোর পাতাগুলো। কেবলই শব্দে শব্দে জীবিত মৃত্যু আত্ব্যার বাস্পিত বর্তমান, বাস্তবায়নের নামে তাত্বিক জগত আজ পর্যবসিত নিমতলীর আগুনের ঝলসানো বেলায়। সমাজের একটা শ্রেনী সম্পূর্ণ রুপে শিক্ষার ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তাদের জীবন হয়ে পড়ছে নরকের চেয়েও অধম, প্রভূর হাসিতে তার হাসি আর কর্তার বকাঁঝকা তার ভাগ্য, নিজের জীবনকে কে সে গ্রিলের সাথে হাতকড়া দিয়ে বেঁধে দিয়েছে আর রান্নাঘরের শীতল চাতালে পাতলা কাঁথার সাথে লেপ্টে নিয়েছে। আমি বুঝি না, একটা কাজের ছেলে একটা কাজের মেয়ে নামে মানুষ কেন রোবট এর মত একটা প্রানীর জন্ম দিচ্ছে। তার স্বাদ-অভিলাশ সব মাটি দিয়ে তাকে রান্না ঘরের ধুমায়িত চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি রাখছে।

জীবনের চাহিদায় সামান্য কিছু টাকা আর কিছু পুরানো নতুন জামা-কাপড়, হায় এগুলোই কি মানুষের জীবনকে পূর্ণ করে দিতে পারে। আমি অবাক হয়ে দেখি যে বাসায় কাজের ছেলে/মেয়ে আছে সে বাসায় সবাই তার নাম ধরে বিচ্ছরিভাবে ডাকে, মাঝে মাঝে বয়সে যতই বড় হোক বাড়ির ছোট ছেলেটাও তাকে তুই তুকারি করে। আমি অবাক হয়ে যাই মানুষের ব্যবহার এতটা ঠুনকো কেন? এতটা নিলর্জ্জ কেন মানবতা সেখানে?হায়! রে! শিক্ষা! হায়রে মানবতা! হায়রে ভদ্রতা নামে মুখোশ পড়া আধুনিক অভদ্ররা। মানুষ জীবনের প্রয়োজনে জীবিকা বেছে নেয়, কেউ কেউ বেছে নিতে পারেনা, তাদের উপর জীবিকা চেপে বসে, (আমরা আধুনিক-রা জীবিকা দ্বারা ভরন-পোষন করি) আর তাদেরকে তাদেও জীবিকাই খেয়ে খেয়ে নিঃশেষ করে দেয়। জীবিকার এই যে কামড়, তার কতটুকু আমরা উপলব্ধি করতে পারি, এবং কখন-ও পারি কি? যে সমস্ত পরিবার ওয়েল এডুকেটেড, সমৃদ্ধ তাদের বাসাতেও দেখেছি বাচ্চা কাজের ছেলে/মেয়েকে নিলর্জ্জভাবে ব্যবহার করা হয়, তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়, সবচেয়ে অবাক ও ঘৃণার বিষয় তাদের শিক্ষার কোন ব্যবস্থা করা হয় না, এমন নয় যে, তাদের স্কুল কলেজে ভর্তি করে দেয়া হোক, কিন্তু অক্ষর চেনানো থেকে শুরু করে জীবনে শিক্ষার যে প্রভাব, শিক্ষার যে আলো তা কেন তাদের ভেতর দেয়ার চেষ্টা করা হয় না।

কেন..? সত্যি বুকটা ফেটে যায় যখন দেখি কচি কচি মুখের উপর কাজল-কালো মেঘের ছায়া, চোখের নিচে বৈশাখ মাসের ঘন-ঘটা। ভোরে পরিবারের ১ম সদস্য জাগার প্রহর থেকে পরিবারের শেষ সদস্য ঘুমাবার পূর্ব পর্যন্ত তার সে অক্লান্ত অপমানিত বোঝা-বাহী যাত্রার যে নিদারুন যন্ত্রনা, পলে পলে মানসিকতার যে øায়ুক্ষয়, ক্ষনে ক্ষনে আবদার ও প্রত্যাশার বিপরীতে ফলাফলের বিয়োগে যে চপটেঘাত, যে শাসন, গালিগালাজের আকঁন, তার আসলেই তুলনা হয় না। তুলনা হয় না, মানবতার এ জঘন্য অপমানের সাথে পলপটের অত্যাচারের। আমি বুঝি না, কেন সরকারীভাবে অর্নাস, মার্স্টাস, পিএইচডি ডিগ্রির সার্টিফিকেট দেয়া হয়, কেন মানবতার উপর বাধ্যতামুলক কোন শিক্ষার ব্যবস্থা নেই, ধর্মীয় অনুভুতিগুলো আজ মানুষের মন হতে ঝেটিয়ে বিদায় হচ্ছে। তাদের দৈন্যতায় সমাজ জীবনে দাম্ভিকতার যে বীজ বপন হচ্ছে তার কি কোন সুরাহা নেই।

মানুষের মুক্তির যে আন্দোলন যুগে যুগে যেভাবে বদলে ক্রমাগত এগিয়ে আসছে, সেভাবেই কি তা আবার সার্কেল তৈরি করছে। মানুষ এখন আর মানুষের মত আচরণ করছে না, কিছু কিছু মানুষ আছে যাদেরকে আজ আর জানোয়ার বলে গালি দেয়া যায় না, তাদের মানুষ বলেই গালি দিতে হয়, তারা হচ্ছে আধুনিক মেশিন মানুষ। (লেখাটা আরও বৃহত, খন্ড খন্ডভাবে বিভিন্ন জায়গায় আছে, পুরোটা একজায়গায় করব ইনশাআল্লাহ)।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।