জড় এক প্রসঙ্গ কাঠামোর নিবিড় পর্যবেক্ষক :P আমরা দিন-দিন অবাক হবার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলছি। হারিয়ে ফেলছি আতঙ্কিত হবার ক্ষমতাও। শারীরিক মৃত্যুর চেয়ে ভয়ানক বোধহয় অনুভুতির মৃত্যু। আসুন কয়েকটি উদাহরন খেয়াল করি-
১: হঠাৎ করে বিরোধীদল হরতাল ডাকলো। কেউ আজকাল জানতেও চাই না কেন হরতাল।
হালকা হাই তুলে পরদিন গভীর ঘুমের প্রস্তুতি নিই।
২: সেদিন এক ভদ্রলোক বলছিলেন, "দেখছেন!! আমি বলছিলাম না সাভারে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যাবে। আপনি তো বলেছিলেন ৫০০ও হবেনা। দেখছেন এখন আমার কথাই রাইট। হে হে ..." ভদ্রলোকের কথায় চাপা উল্লাস।
আমরা সেই সহস্র প্রানের জন্য সহানুভূতির চেয়ে ঈর্ষাটাই বেশী অনুভব করি। কেন যে এই লোক এতটা রাইট, আর আমি এত রঙ, Why?
৩: কয়েকদিন আগে আরেকটা খবর দেখলাম। সিরিয়াতে নাকি এক বিদ্রোহী সৈন্য প্রতিপক্ষের এক সৈন্যের মৃতদেহ থেকে হৃৎপিণ্ড কেটে বের করেছে। উনি এখানেই থেমে থাকেননি। সেই বক্ষ বিদীর্ণ মৃতদেহকে ডাইনিং টেবিলের মত ব্যবহার করে "রীতিমত আয়েশ করে সেই হৃৎপিণ্ড খেয়ে ঢেকুর তুলছেন" এমন একটা ভিডিও ইন্টারনেটে পোস্ট করেছেন।
আর লোকজন নাকি "ক্যানিবাল কর্প্স", "জঙ্গল হলকাস্ট" বাদ দিয়ে সেই ভিডিও হুমড়ি খেয়ে দেখছে। এসব ঘটনাও এখন আমাদের আর আলোড়িত করে না।
৪: এবার তাহলে আরেকটি খবর পড়ুন। খবরটি নাইজেরিয়ার। সেখানে কয়েকজন মানুষ ইনোভেটিভ এক ব্যবসার আইডিয়া বের করেছেন।
কয়েকজন কিশোরীকে তারা অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে কিডন্যাপ করেন। অতঃপর তাদেরকে ব্যবহার করেন শিশু উৎপাদনের মেশিন হিসেবে। এই শিশুগুলো পরবর্তীতে বিক্রি হয় উচ্চমূল্যে। এই খবরটিও কি আমাদের খুব বেশী অবাক করে? আলোড়িত করে?
এই নোংরা সমাজের নোংরামিতে আমরা হারিয়ে ফেলছি মানবিক মূল্যবোধ। আমাদের অন্তরের স্পর্শকাতর জায়গাগুলো ক্রমশই হয়ে পড়ছে অনূভুতিহীন।
শত কোটি বছরের মানষিক বিবির্তনে মানুষ আজকের অবস্থানে। আর কতিপয় নরকের কীট প্রতিনিয়ত চাইছে আমাদের শত কোটি বছর পেছনে নিয়ে যেতে। আমরা মানুষ থাকতে চাই। পশুর চেয়ে পাশবিক হতে চাই না। ঘুরে দাঁড়ানোর সময় হয়ত এখনই ।
তাই আসুন একটুখানি অবাক হই, একটু খানি আতঙ্কিত হতে শিখি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।