আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্লগিংয়ের উপর খড়গ! চীন কি আবারো সেই 'কাগজ' সভ্যতায় ফিরে যেতে চাইছে?

''সংবাদপত্র যা ছাপে তার একটা বড় অংশই হলো 'লর্ড জোনস মারা গেছেন' ধরণের তথ্য। অথচ সেটি যাদের জানানো হয় সেই জনগণ খবরই রাখে না যে লর্ড জোনস বেঁচে ছিলেন''

'শতফুল ফুটতে দাও' এর মাও জে দঙয়ের চীনদেশে ব্লগের উপর খড়গ নেমে এসেছে। ব্লগ যদি হয় মত প্রকাশের সেই মাও কথিত 'ফুল', তবে তাকে উপড়ে ফেলতে চাইছে চীন সরকার। চেয়ারম্যান মাও আর নাই, তাঁর কথামালাও যেন অলস পড়ে আছে রচনাবলীর শতফুলের কাহিনীতে। তবে হ্যাঁ, এই ঘটনায় ক্ষেপে আছে ব্লগবন্ধুরা।

গত এক সপ্তাহ ধরেই জনপ্রিয় ব্লগসাইটগুলো হঠাৎই বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। যেখানে ১৭ টিরও বেশি জনপ্রিয় কমিউনিটি ব্লগসাইট ছিল। সবচেয়ে অবাক লাগছে বিশ্বের সর্বশীর্ষ ইন্টারনেট ইউজার দেশটি এইসব সাইট কেন বন্ধ রয়েছে, তার কোন জবাব বা তথ্য দিতে চাইছে না (পড়ুন- পারছে না) সরকার। সাইটগুলো বন্ধ করার বিষয়ে সরকারি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না সে বিষয়েও গতকাল পর্যন্ত কোনো তথ্য দেয়নি চীন সরকার। এসোসিয়েটেড প্রেসের খবর পড়ে যা বুঝলাম, অধিকাংশ সাইটই নাকি 'রক্ষণাবেক্ষণের কাজে সাময়িক বন্ধ রয়েছে' এমন ধরনের বার্তা প্রদর্শন করছে।

কিছু ব্লগসাইটে বেটা দেখানো হয়েছে। ফলে ব্যবহারকারীরা সাইটের সব সুবিধা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। অনুমানের আঁধারে ঢিল না ছুড়ে এই সাইটে ক্লিক করলেই পাওয়া যাচ্ছে বেশ কিছু তথ্য। সরকারি চাপের মুখে সাইটগুলো হয়তো ব্লগিং সেবা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এসব জনপ্রিয় ব্লগসাইট মাসের পর মাস ধরে চলছে, সেগুলোকে হঠাৎ করে পরীক্ষামূলক সাইট বলার কারণে অবাক হয়েছেন হাজারো ব্লগার।

এর প্রতিবাদে বিক্ষোভও হচ্ছে। সরকারের চোখে মুলা দেখিয়ে থেমে নেই চোরাগোপ্তা ব্লগিং! অনলাইন বিষ্ফোরণের যুগ বলা হচ্ছে এই সময়কালকে। যেখানে কাগুজে সাংবাদিকতার কবর দিতে সিটিজেন জার্নালিজম শতগুণ বেগে বিকাশিত। ব্লগ হলো ব্যক্তি পরিচালিত ওয়েবসাইট যেখানে সাধারণত মতামত, ঘটনার বর্ণনা কিংবা স্থির বা সচল চিত্রের নানা মিথষ্ক্রিয়া চলানোটাই স্বাভাবিক। এটি এমন একটি সাইট যেখানে ব্যক্তি ইচ্ছামতো তার মতামত, দর্শন, বিভিন্ন চলমান বিষয় সম্পর্কে তার ব্যক্তিগত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ স্বাধীনভাবে পরিবেশন করেন।

টেক্সট ছাড়াও তিনি পারেন চিত্র বা ভিডিওর সরাসরি বা হাইপারলিঙ্ক আকারে পরিবেশন করতে। আর বিশ্বব্যাপী ব্লগের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এতে পাঠকরাই লেখক, লেখকরাই পাঠক! তর্ক-বিতর্ক করার সুযোগ এখানে ভাইস-ভাইর্সা। কাগুজে সংবাদপত্র যা ছাপে তার একটা বড় অংশই হলো 'লর্ড জোনস মারা গেছেন' ধরণের তথ্য। অথচ সেটি যাদের জানানো হয় সেই জনগণ খবরই রাখে না যে লর্ড জোনস বেঁচে ছিলেন। জনগণকে প্রযুক্তির মহাসড়কে এগিয়ে যেতে না দিয়ে চীন সরকার কী আবারো 'কাগজ' সভ্যতায় ফিরে যেতে চাইছে? হায় চীন, সভ্য চীন!


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.