ওদের কারনেই জালিম ব্রিটিশরা আমাদের পূর্বপুরুষদের ১৯০ বছর জুলুম করতে পারছে।
১৭৫৭ সালে এক কূটিলটিশ প্রতারণার মাধ্যমে পলাশীর প্রান্তরে আমাদের স্বাধীনতা সূর্য অস্ত যায়, একথা আমরা সবাই জানি। সেদিন সাত সমুদ্র তের নদীর ওপার থেকে আসা ইংরেজরা স্বাধীন মুসলমান নবাবের হাত থেকে দেশের শাসন ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয় বলে তাদের অন্যতম নীতিই ছিল প্রশাসন, প্রতিরক্ষা, বিচারব্যবস্থা, জমিদারী, জায়গিরদারী, শিক্ষা, সংস্কৃতি সকল গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গন থেকে মুসলমানদের উৎখাত করে সেসব স্থানে ব্রিটিশ-অনুগত হিন্দুদের বসানো হয়। পলাশী বিপর্যয়ের ৩৬ বছরের মধ্যেই পূর্বতন ভূমি ব্যবস্থা বদলিয়ে ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্থের নামে নতুন ভূমি ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয় একদল ইংরেজ-অনুগত নব্য জমিদারগোষ্ঠী যাদের সিংহভাগই ছিল হিন্দু। এভাবে মাত্র একশ’ বছরের মধ্যেই এক কালের সমৃদ্ধ মুসলিম জাতিকে একটি নিঃস্ব জনগোষ্ঠীতে পরিণত করা হয়।
ইংরেজ সিভিলিয়ান ডব্লিউ ডব্লিউ হান্টারও তাঁর ‘ইন্ডিয়ান মুসলমানস’ নামের গ্রন্থে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে, এককালে যাদের দরিদ্র হওয়ার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারতো না, ইংরেজ শাসনামলে তাদের পক্ষে স্বচ্ছল থাকাটাই অসম্ভব করে তোলা হয়।
স্বাভাবিকভাবেই মুসলমানরা ইংরেজদের শাসন সেদিন সহজ ভাবে মেনে নিতে পারেনি। পলাশীর পর থেকে একশ’ বছর ধরে তারা সশস্ত্র সংগ্রাম চালায় স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে। মীর কাসিমের সংগ্রাম থেকে শুরু করে মজনু শাহের ফকীর বিপ্লব, তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার সংগ্রাম, হাজী শরীয়তুল্লাহ দুদু মিয়া প্রমুখের ফরায়েজী আন্দোলন, ত্রিপুরার শাসনের গাজীর সংগ্রাম, স্বন্দীপের আবু তোরাবের নেতৃত্বে কৃষক বিদ্রোহ, নোয়াখালী-লক্ষীপুরের কৃষক নেতা নওয়াব আলীর লবণ বিদ্রোহ, মহীশূরের হায়দার আলী-টিপু সুলতানের সংগ্রাম, সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরেলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি নেতৃত্বাধীন জেহাদ আন্দোলন- এসবই ছিল মুসলমানদের সশস্ত্র স্বাধীনতা আন্দোলনের বিভিন্ন দৃষ্টান্ত।
এসব সশস্ত্র সংগ্রামের সর্বশেষ ঘটনা ছিল ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ।
অন্য সব আন্দোলনে এককভাবে শুধু মুসলমানরা অংশ নিলেও কিছু সংখ্যক হিন্দু সিপাহি বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করে, যদিও এ বিদ্রোহেও প্রধান অংশগ্রহণ করে মুসলিমরা। বিপুল সংখ্যক হিন্দু জনগোষ্ঠী এসব আন্দোলন থেকে দূরে থাকায় এর প্রতিটি আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। সিপাহী বিপ্লবও ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পর হিন্দু বুদ্ধিজীবীরা উল্লাসে ফেটে পড়ে।
বঙ্কিমচন্দ্র ‘সংবাদ ভাস্করে’ লেখে-
‘হে পাঠক, সকলে উদ্বাহু হইয়া পরম ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়া জয়ধ্বনি করিতে করিতে নৃত্য কর,... পাঠক সকল জয় জয় বলিয়া নৃত্য কর, হিন্দু প্রজা সকল দেবালয়ে সকলের পূজা দেও, আমাদের রাজ্যেস্বর শত্রুজয়ী হইলেন। ’
আর কবি ঈশ্বর গুপ্ত লিখলো :
‘চিরকাল হয় যেন ব্রিটিশের জয়।
ব্রিটিশের রাজত্ব স্থির যেন রয়।
এমন সুখের রাজ্য আর নাহি হয়।
শাস্ত্র মতে এই রাজ্য রামরাজ্য কয়। ’
হিন্দুরা কী আমাদের এই হীরার বাংলাদেশের ভাল চায়????????? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।