টরন্টোতে আর কোনো জি-২০ সম্মেলন নয় !
নতুনদেশ ডটকম
টরন্টোতে আরো একটি জি-২০ সম্মেলন ? প্রশ্নই উঠে না। অন্টারিওর প্রিমিয়ার ড্যালটন ম্যাকগুইনটি স্পষ্ট করেই এই কথা বলে দিয়েছেন। ‘বিশ্বের শীর্ষনেতাদের জন্যে সম্মেলনের আয়োজন করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে টরন্টো, নাগরিকরা সত্যিই ভীতসন্ত্রস্ত্র। ‘ প্রিমিয়ারের প্রতিক্রিয়া এটি।
জুনের শেষ সপ্তাহে হয়ে যাওয়া জি-৮/জি-২০ সম্মেলনকে ঘিরে বিক্ষোভ,কানাডার ইতিহাসে নজিরবিহীন ভাঙচুর সহিংসতার পর আন্তর্জাতিক এই সম্মেলন আয়োজনকে ঘিরে সৃষ্ট বিতর্কের এখনো অবসান হয়নি।
অন্টারিওর প্রিমিয়ারের এই ঘোষনার মধ্য দিয়ে বিতর্কটি নতুন মাত্রা পেলো। এদিকে টরন্টো পুলিশের কর্মকাণ্ড তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত নাগরিক কমিটি (সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি) সম্মেলনে পুলিশের ভূমিকা স্বাধীনভাবে খতিয়ে দেখার ঘোষনা দিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো অবশ্য পুলিশের কর্মকাণ্ডের গণতদন্ত দাবি করে আসছে।
অন্টারিওর প্রিমিয়ার ম্যাকগুইনটিকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো –‘তাহলে কি টরন্টোতে জি-৮/জি-২০ সম্মেলন আয়োজন করা ভুল হয়েছে ?’- কানাডীয়ান প্রেসের এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেন নি অন্টারিওর প্রিমিয়ার। ‘ঠিক আছে।
আসুন ব্যাপারটাকে এই ভাবে দেখি। প্রধানমন্ত্রী যদি আমার সঙ্গে আলোচনায় বসেন এবং আরো একটি জি-২০ সম্মেলন করার প্রস্তাব দেন। তাহলে আমি বলবো,আমরা এটা করেছি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। উত্তরটা খানিকটা ঘুরিয়ে দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে সামনাসামনি সাক্ষাৎ হওয়ার সুযোগ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু টরন্টো বড় ধরনের বেদনার ভিতর দিয়ে গেছে। ব্যবসা বাণিজ্য, সহায় সম্পত্তির ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। নাগরিকদের উপর মনস্তাত্তিক একটা চাপও তৈরি হয়েছে। টেলিভিশনের পর্দায় পুলিশের গাড়ি পুড়তে দেখেছে,এটা এমন একটা দৃশ্য যা কানাডার নাগরিকরা খুব সহজে মন থেকে মুছে ফেলতে পারবে না।
’
জি-৮ /জি-২০ সম্মেলনচলাকে বিশ্বের দরিদ্রজনগোষ্ঠীর দু:খ বেদনার কথা তুলে ধরতে বিক্ষোভ কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। কিন্তু বিক্ষোভ কর্মসূচী চলাকালে কালো মুখোশপড়া একটি গোষ্ঠী ব্যাপক ভাঙচুর এবং সহিংসতা চালায়। পুলিশ এক হাজারেরও বেশি নাগরিককে গ্রেফতার করে। কানাডার ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় গণগ্রেফতারের ঘটনা। এমনকি ১৯৭০ সালে সামরিক শাসনের পর যে বিপুল সংখ্যক নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছিলো তার পরিমানও ছিলো এর চেয়ে কম।
এদিকে প্রবল জনমতের চাপে শেষ পর্যন্ত পুলিশের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখতে পর্যালোচনা কমিটি গঠনের ঘোষনা দিয়েছে পুলিশের কর্মকাণ্ড তদারকে নিয়োজিত সিভিল কমিটি। কমিটির চেয়ারম্যান অলোক মুখার্জী জরুরী বৈঠক শেষে বুধবার এই ঘোষনা দেন। এর আগে অবশ্য পুলিশ প্রধানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে তিনিও বলেছিলেন, জি-৮/জি-২০ সম্মেলনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কোনো ধরনের গণতদন্ত প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন না। এক সপ্তাহের মাথায় তিনি তার অবস্থান পাল্টালেন। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি অবশ্য মিডিয়াকে বলেছেন, সম্মেলনে পুলিশের আচরন নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
সেই প্রতিক্রিয়াকে সম্মান জানাতেই এই পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে স্বাধীন গনতদন্ত এর যে দাবি উঠেছে সেই ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন বা সরকারের কোনো পর্যায় থেকেই সমর্থনসূচক কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। বরং টরন্টো সিটির নির্বাচিত কাউন্সিলরদের সভায় পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। সিটি মেয়র ডেভিড মিলার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় আবারো বলেছেন, পুলিশ অত্যন্ত প্রশংসনীয়ভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। তবে টরন্টোর প্রভাবশালী দৈনিক পত্রিকা টরন্টো স্টার তার সম্পাদকীয় নিবন্ধে দাবি করেছে, নাগরিকদের সঙ্গে পুলিশ যে আচরন করেছে তার স্বাধীন গণতদন্তই করতে হবে।
এর বাইরে কোনো ধরনের পর্যালোচনা বা তদন্ত গ্রহনযোগ্য হবে না।
http://www.notundesh.com/shirshokhobor.html
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।