সূত্রঃ বিডিস্পোর্টসনিউজডটকম
নোংরা খেলা খেলে গায়ের জোরে আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসাবে ঘানার বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিল উরুগুয়ে। চরম নাটকীয়তা পূর্ণ ম্যাচে আফ্রিকার শেষ বাতি ঘানাকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে গেল উরুগুয়ে। নোংরা এবং শরীরী খেলা, অনভিজ্ঞতা, চাপ আর দুর্ভাগ্যের কাছে হেরে গেল ঘানা আর বিশ্বকাপের ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে সেমিফাইনালে উঠলো ৪০ বছর পর। সর্বশেষ তারা সেমিফাইনাল খেলেছিল ১৯৭০ সালে।
নির্ধারিত সময়ে খেলার ফলাফল ছিল ১-১।
খেলার শুরুর দিকে উরুগুয়ে খানিকটা প্রাধান্য বিস্তার করে খেললেও ধীরে ধীরে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে ঘানা। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে সুলে মুনতারি গোল করে এগিয়ে দেন ঘানাকে,পুরো আফ্রিকা তখন পাচ্ছে সেমিফাইনালের সুবাতাস। কিন্তু ৫৫ মিনিটে দারুণ এক ফ্রি-কিকে উরুগুয়েকে ম্যাচে ফেরান এবারের বিশ্বকাপে তারকা হয়ে ওঠা দিয়াগো ফোরলান। সময় যত বাড়তে থাকে ততই উরুগুয়েকে চেপে ধরতে থাকে ঘানা। তবে, নির্ধারিত সময়ে গোল করতে ব্যর্থ হয় দুই দলই।
কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে ঘানার আক্রমণের চাপে পুরোপুরি কোণঠাসা হয়ে পরে উরুগুয়ে। আর উরুগুয়ে শুরু করে চরম নোংরা খেলার প্রদর্শনী। ঘানার মূল নায়ক জিয়ান বেশ কয়েকবারই বল নিয়ে ঢুকে যান উরুগুয়ের ডি-বক্স এর ভেতর। আর প্রায় প্রতিবারই ট্যাকলিংএর নামে গায়ের জোরে তাকে গোল বঞ্চিত করেন উরুগুয়ের ডিফেন্ডাররা। রেফারীরা সাধারণত ডি-বক্সের ভেতর রক্ষনভাগের খেলোয়াড়দের ফাউল দেয়ার ব্যাপারে একটু ছাড় দেন, কারণ রক্ষনভাগের ভেতর ফাউল মানেই পেনাল্টি, আর সে সুযোগটাই নেয় উরুগুয়ে।
শরীরী খেলার অবাধ প্রদর্শনী করে তারা যেভাবে একের পর এক গোল বঞ্চিত করে ঘানাকে, ডি-বক্সের ভেতর বলে নমনীয় রেফারীর চোখে সেগুলো ফাউল মন না হলেও, সেগুলোকে ফেয়ার প্লে বলতে ভয় পাবে উরুগুয়ের চরম সমর্থকও। কিন্তু নাটকীয়তার এসব শেষ নয় বরং ছিল শুরু। অতিরিক্ত সময়ের শেষ মূহুর্তে মরিয়া ঘানার নিশ্চিত গোল রুখে দেন উরুগুয়ের আক্রমণের অন্যতম সেরা অস্ত্র লুইস সুয়ারেজ। উরুগুয়ের গোলকিপার যখন ব্যর্থ তখন গোললাইনে দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে বল ফেরান সুয়ারেজ। অবধারিত পেনাল্টি, লাল কার্ডও দেখেন সুয়ারেজ।
কিন্তু লাল কার্ড মাথায় নিয়ে নিশ্চিত পরাজয় হাত দিয়ে ঠেকান সুয়ারেজ। হোন না লাল কার্ডের বলি, হোক না পেনাল্টি, নিশ্চিত গোল খেয়ে হেরে যাওয়ার চেয়ে পেনাল্টি ঠেকানোর আশা বাঁচিয়ে রাখাই যে ভাল। সুয়ারেজের এই নোংরা খেলাই উরুগুয়ের জন্য আশির্বাদ বয়ে আনলো। আর একটু আগে জয়টা মুখ তুলে যাদের দিকে চেয়ে ছিল, সেই ঘানা পায়ে ঠেলল সুযোগ। তাদের আর জেতা হলো না! গোটা আফ্রিকার চোখ যখন ওই পেনাল্টির দিকে, নার্ভাস আসামোয়া জিয়ানের পেনাল্টি শট তখন ক্রসবারে লেগে ফিরে এলো।
ইতিহাস গড়া হলো না ঘানার। সাথেই সাথেই বাজে রেফারীর বাঁশি। সময় শেষ, এবার ট্রাইবেকার। উরুগুয়ের গোলরক্ষক ফার্নান্দো মুসলেরার ঘানার তৃতীয় ও চতুর্থ শট ঠেকিয়ে দিয়ে নিশ্চিত করেন উরুগুয়ের জয়। অনভিজ্ঞ ঘানার খেলয়াড়রা চাপ না নিতে পারলেও ঠাণ্ডা মাথায় বিজয় ঠিকিই নিশ্চিত করে উরুগুয়ের খেলোয়াড়রা, তাদের পক্ষে একমাত্র মিস করেন মেক্সিমিলানো।
ভাগ্যহত ঘানা তাই একাই কাঁদেনি, কেঁদেছে পুরো আফ্রিকা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।