আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নোংরা মেয়ে



আমাকে চিনতে পারছো তো অনিন্দ্য!! রোজ যাকে বাসে করে অফিসে যেতে দেখ কখনো দাঁড়িয়ে রড ধরে হেলে দুলে তুমিও দাঁড়াও আমার গা ঘেসে, কখনো নিজেকে সামলে রাখতে না পেরে আমার ওপরই ঝাঁপিয়ে পড়ে উল্টো আমাকেই গালমন্দ করতে থাকো, আমি কেন আমাকে সামলে চলতে পারিনি। অথচ চালকের আচমকা ব্রেক কষলে যেন তোমার সুবিধাই হয় আরেকটু। হাত দুখানা চলে যায় জায়গামতো; কখনো সরি বলো কখনো বা বিজয়ী হাসি। আমি তখনো কিছু বলতে পারিনি তোমাকে; পাছে আমাকেই একজন বাজে মেয়ে সাব্যস্ত হতে হয়, চোখে-মুখে গিলে খাওয়া অর্ধশত পুরুষদের সামনে। আবার আমিই যখন বসে থাকি অনেক দুর্লভে পাওযা কোন সিটে, তুমি তখন আমারি গা ঘেসে দাঁড়িয়ে দেখতে থাকো আমার বুকের অনাবৃত অংশ।

কল্পনায় তখন আমাকে নিয়ে তুমি অন্য জগতে। কখনো বা মনে মনে ফুঁসতে থাকো কামিজের গলাটা এতো চাপা হলো কেন পারতো তো আরেকটু প্রসারিত হতে তাহলে আর এতটা কষ্ট করতে হতোনা না চাইতেই তোমার সুস্বাদু খাবারের সন্ধ্যান পেয়ে যেতে। আমাকে কি এখনো চেনোনি, অনিন্দ্য!! যাকে তুমি একবার রবি ঠাকুরের লাবণ্য নামেই বেশী ডাকতে, কখনো আবার বনলতা সেন কিংবা সুনীলের বরুনা অথবা নীরা! যখন যা ডাকতে ইচ্ছে করতো তাই ডাকতে। মনে পড়ে বাংলা ডিপার্টমেন্টের সামনে কতো অপ্রয়োজনে এসে দাঁড়িয়ে থাকতে। শ'খানেক প্রেমের কবিতা একদম মুখস্ত করে ফেলেছিলে শুধু আমাকে শোনাবে বলে।

তোমার কণ্ঠে আবুত্তি করা কবিতাগুলো মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনতাম। এত দরাজ কণ্ঠে কি করে করো! আমি তাজ্জব বনে যাই। বারবার ছুটে যাই তোমার কণ্ঠে কবিতা শুনতে। তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে রাখো সারাদিন কখনো গভীর রাত নেমে আসে তোমার লোমশ বুকে মাথা রেখে, নাক ঘষে তোমার বুকে কখনো মনে হতো তোমার ঐ বুকটাই আমার নিরাপদ আশ্রয়। এরপর তুমিও বেসামাল হয়ে পড়তে নিঃশ্বাস নিতে ঘনঘন আদরে আদরে আমাকে পাগল করে তুলতে কপাল থেকে শুরু করে চোখ নাক কান থুতনি এবং ঠোঁট; ওখানে এসে তুমি থেমে যেতে, যেন যাত্রা বিরতি।

রঙ না মাখা আমার গোলাপী ঠোঁট দুটোই তোমার সবচেয়ে প্রিয় ছিল। এরপর এবং এরপর তুমি আর থেমে থাকতে না। আমি যেন তোমাকে বাঁধা দিতে চাইতাম কিন্তু ঐ বাঁধাটা কখনো তেমন জোরালো হতোনা। এখনো আমাকে চিনতে পারলেনা, অনিন্দ্য! যমুনা ব্রিজ দেখানোর কথা বলে আমাকে নিয়ে গেলে যমুনার পারে, নতুন গড়ে ওঠা যমুনা রিসোর্টে নিজেই ড্রাভিং করে এলে ঢাকা থেকে এতো দূর! তোমার সে কি উচ্ছ্বাস! আমার একটু স্পর্শ পাওয়ার জন্য তোমার সে কি ব্যাকুলতা! সারাটা পথ আবৃত্তি আর গানে আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখলে। তোমার যেন আর তর সইছিলোনা! গাড়িতেই কয়েকবার জড়িয়ে ধরতে চাইলে রিসোর্টে গিয়েও তোমার উৎসাহের কোন কমতি দেখিনি।

চমকে দিলে হীরের আংটি পরিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথে। সারাটা দিন আমাকে ভরিয়ে দিলে আদরে আদরে। আমিও নিজেকে সঁপে দিলেম তোমার কাছে সবকিছু উজার করে তোমাকে ভালো বাসলাম। আর প্রতিদান হিসেবে তুমি ফেরার সময় বললে, ছিঃ! বাজে মেয়ে। ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।