নিজেকে হয় নাই চেনা
সেদিন ব্রজিল বনাম আইভরিকোষ্টের খেলা চলছিল। আমি আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের খেলা ছাড়া আর কোন খেলা সাধারনত দেখিনা। যদিও আমি আকজন আর্জেন্টিনার সাপোর্টার আমি ব্রাজিল আর্জেন্টিনার তর্ক বিতর্ক সিরিয়াস পর্যায় যাবার আগেই স্টপ করে দেই। এক্ষেত্রে আমি যেটা করি তা হল প্রতিপক্ষের যুক্তিকে মেনে নেয়া। আমি প্রতিপক্ষের যুক্তি মেনেনেই আর মনে মনে বলি "যা বাবা তাও তুই চুপ থাক" হুদাই যেই আর্জেন্টিনা - ব্রাজিল নিয়া ফালাফালি করিস তাতে কোন প্রকার লাভ তো নাই ই তার উপর সময় ও সম্পর্ক দুটিই নষ্ট।
কিন্তু সেদিন অনেক দূর না আগালেও একজন ব্রাজিলিয়ান সমর্থকের মুখ বন্ধ করেই থামলাম।
খেলা দেখছিলাম, ক্যান্টিনে বসে অন্য ছাত্ররাও খেলা দেখছে। আমি জানতাম ব্রাজিল জিতবে কিন্তু ড্রগবার কিছু ভালো খেলা দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলাম। কিন্তু ওবেটা তো তেমন বলই পেলনা। অন্যদিকে আমার এক বন্ধু যে কিনা ব্রাজিলের সাপোর্টার সে বক বক করেই চলেছে।
ওর বক বক শুনে আমিতো বিরক্ত হচ্ছিলামই আমার পাশে অন্য দেশের ছাত্ররাও বার বার আমাদের দিকে তাকাচ্ছিল বিরিক্তির ভঙ্গিতে। কিন্তু ব্যপারটা ওকে বোঝাব কেমনে বুঝতেই পারছিলাম না।
ও অনেক কথাই বলছিল, তবে বার বার একটা কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলছিল যে, যারা আইভরিকোষ্টের সাপোর্ট করে তারা এক ড্রগবার নাম ছাড়া আর কার নাম বলতে জানেই না। এর মধ্যেই হাফ টাইমের খেলা শেষ হল। মাস্টার্সের এক বড় ভাই যিনি ঐ দিন আইভরিকোষ্টের সাপোর্টে ছিলেন।
তিনি আমাদের পাশ দিয়ে যাবার সময় আমার বন্ধুটি তাকে সরাসরি বলে ঊঠলো " আচ্ছা খুবতো আইভরিকোষ্টের সাপোর্ট করেন এখন বলেন তো কয়জন খেলয়াড়ের নাম ব্জানেন?" যেহেতু আমরা ক্রিকেট পাগলে দেশের মানুষ সেহেতু কোন দেশের জাতিয় ফুটবলারদের নাম না জানাইতো স্বাভাবিক। তিনিও বলতে পারলেন না। চুপ করে চলে গেলেন।
এর পর তো সে আর থামতেই চায় না। বার বার বলেই যাচ্ছে।
এবার আমি তাকে বললাম। আজীবন ব্রাজিলের সাপোর্ট করেছ এখন আমাকে ব্রাজিলের সব খেলোয়াড়ের নাম বল দেখি কেমন পার।
ও বল্লঃ পারবো মানে? অবশ্যি পারবো, আমরা না জেনে সাপোর্ট করি না।
আমি বল্লামঃ আচ্ছা ঠিক আছে এখন একটা একটা করে নাম বলতে থাক আমি শুনি। (বেচারা মনে করেছিল ওর ঝাড়ীতে আমি আর দুইবার প্রশ্ন করবোনা) কিন্তু আকষ্মিক পালটা প্রশ্ন শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল।
অনেক্ষন আমতা আমতা করে বল্ল আমি কেন তোমাকে নাম বলতে যাব আমার কি ঠেকা লাগসে নাকি?? আমি বললাম তাইলে যেখানে সেখানে মানুষ্কে এমন প্রশ্ন কর কেন যার উত্তর তুমি নিজেই দিতে রাজি না? আমার তো মনে হয় তুমি একটা খেলোয়াড়ের নামও জাননা।
একথাটা তার ইগোতে সত্যিই লেগে গেল, হিতাহুত জ্ঞান শুন্য হয়ে শুরু করলো ব্রাজিলিয়ান খেলয়ার দের নাম বলা। এক দুই তিন এভাবে বলতে বলতে চার নাম্বার থেকে সত্যিই আটকে গেল। আর নাম আসছে না। মাম্বলিং করতে করতে আর একটা নাম বল্ল এর পর শুরু করলো, রোনাল্ডো, রিভাল্ডো, রোনাল্ডিনহো সহ পুরান খেলোয়াড়দের নাম............... আর যায় কোথায়?? আশে পাশের বাংগালী ছাত্ররা হো হো করে হেসে উঠলো।
ব্যপারখানা বুঝতে পেরে সেই যে চুপ করলো সেদিন আর কথা বলতে পারলোনা। সাধারনত ব্রজিল জিতলে তাদের সাপোর্টারদের কথার ফুলঝুরি ছুটে......... সেদিন অন্তত ও আর কথাই বলে নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।