আমি সবার চক্ষুষূল
মানুষের জীবন বড়ই বিচিত্র! আমার বয়স খুব বেশী নয়। তারপরও এই কম সময়টাতেই আশেপাশে হতে দেখেছি বিচিত্র সব ঘটনা। এদের কোনটা আনন্দের, কোনটা কষ্টের, কোনটা ত্যাগের, কোনটা পাওয়ার আবার কোনটা অদ্ভুত!
ধারাবাহিকভাবে এই ঘটনা গুলো সবার সাথে শেয়ার করার ইচ্ছা। এই ঘটনা গুলোর বেশীরভাগই আমার নিজের সামনে হতে দেখা, কিছু শোনা। তবে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে ঘটনার গুলোর পাত্র-পাত্রীর নাম, স্থান ও সময় পরিবর্তন করা হবে।
আজ যে ঘটনাটি বলতে চাচ্ছি তা আমার নিজের সামনেই হতে দেখা।
পাগল না মহামানব?
আমাদের এক শিক্ষক প্রায়ই বলেন যে ব্যক্তি নিজের ভালবাসাকে অন্য কারো সাথে শেয়ার করে হয় সে পাগল নয়তো সে মহামানব এর পর্যায়ে চলে গেছে।
অজয় ছেলে হিসেবে খুব ভাল। ভদ্র, শান্তশিষ্ট, Helpful ও লজুক প্রকৃতির। ধর্মের দিক দিয়ে সে হিন্দু।
তো ভার্সিটি তে উঠার পর একটি মেয়েকে তার ভাল লেগে গেল। মেয়েটিও হিন্দু তবে স্বভাব চরিত্রে অজয়ের ঠিক উল্টো! তার boyfriend এর লিষ্ট মাসে মাসে আপডেট হয়! তবে সেই লিষ্ট এ যুক্ত হবার ভাগ্য অজয়ের হলোনা। অজয় "বন্ধু" হলো মেয়েটির যার কাজ হলো ক্লাস লেকচার, নোট এই সব মেয়েটিকে সাপ্লাই দেয়া। সাথে আরেকটি additional কাজ করতে হতো অজয়কে যা হলো মেয়েটি যখন তার present boyfriend এর সাথে ডেটিং করতো তখন তাদের পাহারা দেয়া!
যাই হোক মেয়েটি এই কাহিনীর main character না। কাহিনীর এই পর্যায়ে মঞ্চে আবির্ভূত হলো মিনা।
মিনা অজয়কে ঐ মেয়েটির খপ্পর থেকে "উদ্ধার" করল। মানে অজয় আস্তে আস্তে মিনার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ল। তবে মিনারও কিছু প্রবলেম আছে।
প্রথমত, সে মুসলমান। দ্বিতিয়ত, মিনাও ধোঁয়া তুলসী পাতা না।
মিনারও boyfriend আছে। মিনার boyfriend হয়েছে ভার্সিটিতে ওঠার আগেই। কিন্তু যেহেতু মিনার ভার্সিটিতে একা একা লাগছিল তাই সে স্বাদোরে অজয়কে কাছে টেনে নেয়। তবে আবারো অজয়ের দুর্ভাগ্য। এবারো সে boyfriend হতে পারলনা।
ওদের ঘনিষ্ট চলাফেরা দেখে কেউ প্রশ্ন করলে ওরা বলতো আমরা খুব ভাল "friend"! ভাল friend হয়ে থাকা ভাল তবে ওদের অতিরিক্ত ঘনিষ্ট চলাফেরা দেখে ওদের বন্ধুরা ধরেই নিল যে অজয় ও মিনার মধ্যে affair হয়ে গেছে তবে ওরা তা স্বীকার করতে চাচ্ছেনা বলে "ভাল বন্ধু"-"ভাল বন্ধু" করছে। ধর্মে বৈপরিত্য থাকলেও ওদের শুভাকাঙ্খীরা ব্যাপারটিকে স্বাগতই জানিয়েছিল কারণ এখনকার দিনে ধর্ম বড় কোন বিষয় না। লক্ষনীয় বিষয় হল অজয় মিনাকেও সেই রকম "সার্ভিস" দিতে লাগল যা ও আগের মেয়েটিকে দিতো। নোট করে দেয়া, বাজার করে দেয়া(মিনা হলে থাকে), রাতে টিউশানি থেকে মিনাকে হলে পৌছে দেয়া ইত্যাদি ইত্যাদি।
এরকমও হয়েছে যে অজয় কে ওর বন্ধুরা বলল, "বিকেলে ক্যাম্পাসে আসিস, খেলব।
" অজয়ের জবাব, "না, এত দূর থেকে ক্যাম্পাসে আসতে ইচ্ছা করেনা, ঘুমোবো, টিউশানি আছে........"। অথচ ঐ দিনই সন্ধ্যায় মিনার সাথে ওকে পাওয়া গেল ক্যাম্পাসেই।
বন্ধুরাও ওকে আর কিছু বলতো না affair হয়ে গেছে ভেবে। সবাই ধরে নিল যে মিনা ওর ক্যাম্পসের বাইরের boyfriend কে ex বানিয়ে দিয়েছে মানে ওটাকে ছেড়ে অজয়কে ধরেছে।
তো কোন এক ভালবাসা দিবসের কয়েকদিন আগে দেখা গেল যে মিনা তার আগের boyfriend এর সাথে ক্যাম্পাসে ঘুরছে আর অজয় বেচারা মন খারাপ করে তার পুরানো বন্ধুদের(যাদের সে প্রায় ভুলেই গিয়েছিল) সাথে বসে আছে।
এ অবস্থা দেখে অজয়ের এক বন্ধু মিনার এক ঘনিষ্ট বান্ধবীকে জিজ্ঞেস করল, "কি ব্যপার, মিনা কি তার ex-boyfriend কে চির বিদায় বলার জন্য ক্যাম্পাসে নিয়ে এসেছে?" বন্ধবীটি জবাব দিল, "ex-boyfriend হবে কেন? এটাই মিনার boyfriend এবং ওরা মনে হয় valentine day তে কি করবে তার প্লান করছে। "
তো valentine day তে দেখা গেল মিনা লাল একটা শাড়ি পরে ওর boyfriend এর সাথে ঘুরছে! উল্লেখ্য যে, ভার্সিটি তে উঠার পর মিনাকে কখনও বোরকা ছাড়া দেখা যায় নি!
এখনও এরকম চলছে। বিশেষ বিশেষ দিন গুলোতে মিনার আসল boyfriend এসে মিনাকে সঙ্গ দেয়। আর বাকি দিন গুলোতে অজয় মিনাকে নোট করে দেয়, বাজার করে দেয়, রাতে দেখেশুনে মিনাকে হলে পৌছিয়ে দেয়, মিনার cpu ঠিক করে এনে দেয়।
মিনাকে একবার প্রশ্ন করেছিলাম, "তুমি যে এভাবে অজয়ের সাথে থাক তোমার boyfriend কি তা জানে?" প্রশ্নটি করার পর সে আমাকে তার facebook friend list থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছে!
মিনার boyfriend সব কিছু জানে কিনা জানিনা তবে অজয় জানে।
অজয়ের ভালবাসাতেও কোন খাঁজ নেই। কিন্তু সে তার ভালবাসাকে অন্য একজনের সাথে শেয়ার করে চলেছে।
অজয় কে কি বলা যায়? পাগল না মহামানব?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।