পর্যটন শহর হিসেবে কক্সবাজারের সৌন্দর্য বর্ধন, জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ও পর্যটকদের আরও বেশি আকৃষ্ট করতে শহরের কলাতলি মোড়ে নির্মাণ করা হয়েছে ‘জ’ ভাস্কর্য। বঙ্গোপসাগরে বিচরণকারী পরিবেশবান্ধব চার প্রজাতির হাঙ্গরের প্রতিকৃতি দিয়ে ভাস্কর্যটি গড়ে তোলা হয়েছে। আগামী ২৪ জুন ভাস্কর্যটি উন্মুক্ত করা হতে পারে।
সড়কপথে কক্সবাজার শহরের প্রবেশমুখে কলাতলি মোড়ে ভাস্কর্যটি পর্যটকদের প্রথম নজরে পড়বে। কক্সবাজার সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে ভাস্কর্যটি নির্মাণে অর্থায়ন করেছে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড।
ফাইবার গ্লাস দিয়ে তৈরি ‘জ’ বা ‘চোয়াল’ নামের এই ভাস্কর্যটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ টাকা।
দেশের অন্যতম জীববিজ্ঞানী রাগিব উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একদল ভাস্কর শিল্পী ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন। পুরো ভাস্কর্যটির প্রাথমিক ধারণা, ডিজাইন, নকশা তৈরি ও নির্মাণ কাজে নেতৃত্ব দেন ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (আইইউবি)-এর পরিবেশ ও পর্যটন বিভাগের খণ্ডকালীন অধ্যাপক ও জীববিজ্ঞানী রাগিব উদ্দিন আহমদ। ভাস্কর দলের অপর সদস্যরা হলেন—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ রবিউল আলম, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ (ইউডিএ)-এর সহকারী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও রূপান্তরের (ক্রিয়েটিভ ডিজাইন এন্ড রিসার্চ সেন্টার) পরিচালক নুরুল ইসলাম প্রীতম। তাদের সহকারী হিসেবে ছিলেন ঢাকাস্থ ফ্যান্টাসি কিংডমের ভাস্কর্য সংরক্ষণ বিষয়ক কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ও ভাস্কর্য শিল্পী মোহাম্মদ রবিউল আলম বলেন, ‘কক্সবাজার বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির আগ্রহে কলাতলি মোড়ে প্রথম এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে। ভাস্কর্যটির মূল ডিজাইনার রাগিব উদ্দিন আহমদই বঙ্গোপসাগরে বিচরণকারী পরিবেশবান্ধব ৪ প্রজাতির হাঙ্গরের প্রতিকৃতি দিয়ে ‘জ’ ভাস্কর্যটির ডিজাইন করেছেন। ’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে বিচরণকারী হাঙ্গরের মধ্যে বিপন্নপ্রায় ৪টি প্রজাতি বড় হাঙ্গর, বাঘা হাঙ্গর, হাতুড়ি মাথা হাঙ্গর ও চিতা হাঙ্গর—এই চারটি প্রজাতির প্রতিকৃতিই এই ভাস্কর্যে স্থান পেয়েছে। ’
ভাস্কর্য শিল্পী মোহাম্মদ রবিউল আলম জানান, ভাস্কর্যটির ভিত্তি গড়ে তোলা হয়েছে রড, সিমেন্ট ও কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে। একটি প্রবালের ওপর চারটি হাঙ্গরের প্রতিকৃতি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, রেজিন ফাইবার গ্লাস দিয়ে ভাস্কর্যটির উপরিভাগ ও চারটি হাঙ্গর তৈরি করা হয়েছে, যা লবণাক্ত আবহাওয়াতেও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই।
তিনি মনে করেন, সাধারণত ভাস্কর্য তৈরি হয় রড, সিমেন্ট ও কংক্রিট দিয়ে। যেহেতু কক্সবাজার লবণাক্ত এলাকা, তাই রড সিমেন্ট দিয়ে তৈরি ভাস্কর্য বেশি দিন টিকে থাকবে না বলে ফাইবার গ্লাস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি জানান, ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে ভাস্কর্যটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন তারা। দীর্ঘ প্রায় ৫ মাসে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
সূত্রঃআমার দেশ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।