আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মন্ত্রীর চক্ষু শিবির উদ্বোধনের দর্শক প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা

সময় হারিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু.......................

বাইলজুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র তৌকির বলল, 'স্যারেরা আমাগো নিয়ে আইছে। বলছে, আইজ স্কুল করতে হবে না। কে নাকি আসবে। ' তবে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র মনির জানতো মন্ত্রী আসবেন। "তাই স্যারেরা দুই ক্লাস করাইয়া আমাদের নিয়ে আসছে", সাংবাদিকদের বললো সে।

ঘটনাস্থল শনিবার সকালে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতি আয়োজিত চক্ষু শিবির। শিবিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন। আর এ অনুষ্ঠানের দর্শকসারিতে বসাদের একটা বড় অংশ ছিল প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রী। অনুষ্ঠানে দর্শকদের বসার জন্যে কয়েকশত চেয়ার রাখা ছিল। আশেপাশের সবগুলো স্কুল ছুটি দিয়ে শিক্ষার্থীদের এনে এইসব দর্শক চেয়ার ভরা হয়।

এ অনুষ্ঠানের কারণে সেদিনের মতো তাদের ক্লাস বাতিল হয়ে যায়। মন্ত্রীর বক্তব্যের সময়ও এদের শিশুসুলভ চাপল্যে মেতে থাকতে দেখা যায়। তাদের অনেকেই জানতো না, কেন এখানে এসেছে। জানতে চাইলে বিভিন্ন শ্রেণীর বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী বলে, "স্যাররা আসতে বলেছে। তাই এসেছি।

" ১৩ নং সেক্টর মাদ্রাসার মক্তবের ছাত্র আব্দুল আজিজ বলে, "সবার সাথে আসছি। কেন আসছি, জানি না। " শিক্ষকরা জানান, কল্যাণ সমিতির সভাপতি শাহাদত হোসেন তাদের স্কুল থেকে শিক্ষার্থীদের অনুষ্ঠানে নিয়ে আসতে বলেন। এছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতাও শিশুদের পাঠানোর জন্যে ফোন করেন। এ কারণে অর্ধেক স্কুল করেই তারা শিক্ষার্থীদের অনুষ্ঠানস্থলে নিয়ে আসেন।

সমিতি থেকেই অনুষ্ঠানে আসার জন্যে তাদের ব্যানারও তৈরি করে দেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, "স্থানীয় নেতানেত্রীদের অনুরোধ মানেই হুকুম। মন্ত্রী আসবে, দর্শক বাড়ানোর জন্যে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আসতে বলেছে। আমাদের তো না এনে উপায় নেই। একদিনের ক্লাস হয়তো হবে না।

" ঢাকা ব্রিলিয়ান্ট স্কুলের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, "আজ আমাদের স্কুলের ছুটি। তবে সেক্রেটারী সাহেবের (কল্যাণ সমিতি) অনুরোধের কারণে আমরা বাচ্চাদের নিয়ে এখানে এসেছি। " রাজউক উত্তরা আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষক মোঃ আঞ্জুনুল ইসলাম আজমত বলেন, "শাহাদত সাহেব অনুরোধ করেছেন বলেই শিক্ষার্থীদের এখানে নিয়ে এসেছি। " স্কুলের শিক্ষার্থীদের কেন ক্লাস বাদ দিয়ে নিয়ে আসা হলো জানতে চাওয়া হলে অনুষ্ঠানের আয়োজক ১৩ নং সেক্টর কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুন অর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমরা তো ভেবেছি তাদের স্কুল বন্ধ। তাই এখানে নিয়ে আসতে বলেছি।

" আয়োজকদের একজন বলেন, "স্থানীয়ভাবেই স্কুল থেকে বাচ্চাদের নিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রীর এ বিষয়ে কিছু জানা নেই। " প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীসহ বিভিন্ন বড় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অনুষ্ঠানে কিংবা তাদের স্বাগত জানাতে দীর্ঘ সময় স্কুল শিক্ষার্থীদের সড়কের পাশে অপেক্ষা করিয়ে রাখা দেশে বহুল প্রচলিত একটি ব্যাপার। এটি করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের রোদে বা ক্ষুধায় অসুস্থ হয়ে পড়ার অনেক নজির আছে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর সৌজন্যে


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.