mamun.press@gmail.com
ছাত্রলীগে সম্মেলনের তোড়জোড়
আবদুল্লাহ আল-মামুন, ফেনী
দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর পর ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী মাসের যেকোন দিন সম্মেলন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা রয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হতে পারে। সম্মেলনকে সামনে রেখে জেলা নেতৃত্বে আসতে আগ্রহী নেতারা তৎপর হয়ে উঠেছেন। বর্তমান ও সাবেক নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূল নেতাদের সাথেও যোগাযোগ রা করছেন।
সেই সাথে কেন্দ্রীয় নেতাদের আশীর্বাদ নিতেও কেউ কেউ ঢাকায় ছুটছেন। তবে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি না হয়ে সিলেক্টেড কমিটিও হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। এেেত্র বর্তমান নেতাদের পছন্দই প্রাধান্য পাবে। এতে করে জেলা ছাত্রলীগের পরবর্তী নেতৃত্ব পুরোপুরি জয়নাল হাজারী বিরোধীদের হাতে চলে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে তৎকালীন জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক জয়নাল হাজারীর সুপারিশেই দিদারুল কবির রতন সভাপতি ও শুসেন চন্দ্র শীলকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্র থেকে জেলা কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়।
দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় এবং জেলা আওয়ামীলীগের কোন্দলে জড়িয়ে ছাত্রলীগও বিভক্ত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে ফেনী সরকারী কলেজ শাখার কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি গঠন নিয়েই ছাত্রলীগের দু’টি গ্র“প প্রকাশ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে। গত কিছুদিন পূর্বে জয়নাল হাজারী অনুসারী অংশ পাল্টা কমিটিও ঘোষণা দেয়। অবশ্য পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই কমিটি অল্প দিনের মাথায় চুপসে যায়। তবে সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বীতার জন্য উভয় গ্র“পই প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় সংগঠনের নির্দেশনা অনুযায়ী বর্তমান জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ অনেকেই পরবর্তী কমিটিতে থাকতে পারছেন না। এেেত্র সভাপতি পদে সদর উপজেলা সভাপতি আনোয়ার হোসেন মানিক, সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন ডালিম এর নাম শোনা যাচ্ছে। এেেত্র এদের একজন সভাপতি ও অপরজন সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন। তবে মানিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করলে ডালিমই পরবর্তী সভাপতি হবার সম্ভাবনা রয়েছে। সাধারণ সম্পাদক পদে ফেনী সরকারী কলেজ শাখার আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম জুয়েল এর নাম শোনা যাচ্ছে।
এছাড়া নেতৃত্ব সংকট মেটাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা কামরুল হোসেন ও নিজ জেলার রাজনীতিতে আসতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
অন্যদিকে সভাপতি পদে বর্তমান সহ সভাপতি কাজী জাহিদ ও ছাগলনাইয়া কলেজ শাখা সভাপতি জহিরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ফেনী কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি নিজাম পাটোয়ারী ও সাধারণ সম্পাদক রাশেল হাজারীও প্রতিদ্বন্ধীতা করতে পারেন।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দিদারুল কবির রতন জানান, সিলেক্টেড নয় সম্মেলনের মাধ্যমেই নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে। জুন মাসের মধ্যে সম্মেলন হতে পারে বলে তিনি জানান।
ছাত্রদলে কমিটি নিয়ে অস্থিরতা
দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর পর গত সোমবার ফেনী জেলা ছাত্রদলের ৭ সদস্যের কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে।
কমিটিতে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন কায়সার সাব্বির কে সভাপতি ও সাবেক প্রচার সম্পাদক নঈম উল্যাহ চৌধুরী বরাত সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। অন্যান্যরা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি মেছবাহ উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কায়সার এলিন, যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ আলম ভূঞা ও হুমায়ুন কবির বাদল এবং প্রচার সম্পাদক সালাহ উদ্দিন মামুন। কমিটি ঘোষনার পরপরই ঘোষিত কমিটির ৭ নেতা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পৃথক কর্মসূচীর ডাক দেয়। আমান উদ্দিন কায়সারের নেতৃত্বাধীন গ্র“প উল্লেখিত কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি দাবী করেন। তারা ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, অন্যথা তারা গণপদত্যাগ করবেন।
ওই গ্র“পে রয়েছেন মেছবাহ উদ্দিন, সৈয়দ আলম ও বাদল। তাদের অভিযোগ, কমিটির অপর তিনজন অছাত্র ও মাদকাসক্ত। এদের মধ্যে বিবাহিতও রয়েছে।
গত মঙ্গলবার ফেনী প্রেস কাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আমান উদ্দিন কায়সার সাব্বির আরো বলেন, মাদকাসক্তদের ব্যাপারে আগেই কেন্দ্রীয় সংগঠনকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, বরাতকে সাধারণ সম্পাদক রেখে কমিটির অপর সব নেতৃত্ব তার পছন্দমত দেয়া হলেও তিনি ওই কমিটিকে মেনে নিবেন না।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন ফেনী সদর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুর হোসেন সেলিম। তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে গনপদত্যাগের ঘোষনা দিয়ে বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীদের সমর্থন নিয়ে আমরা এ পকেট কমিটি প্রত্যাখ্যান করছি।
সাংবাদিক সম্মেলনে নবঘোষিত কমিটির নেতারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি কফিল উদ্দিন মামুন, সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের লিংকন, ফেনী শহর সভাপতি খুরশিদ আলম হারুন, আলীয়া মাদরাসা সভাপতি কাজী আবুল কাশেম, ফেনী কমার্স কলেজ সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম দুলাল, ফেনী পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট সভাপতি আরিফুর রহমান প্রমুখ। সাংবাদিক সম্মেলনের আগে পরে সাব্বিরের নেতৃত্বে শহরে বিােভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে ট্রাংক রোডের জিরো পয়েন্টে নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
একই সময় শহরের সমবায় মার্কেটের সামনে থেকে নবঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক নঈম উল্যাহ চৌধুরী বরাত ও সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কায়সার এলিনের নেতৃত্বে শহরে আনন্দ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদনি করে। নঈম উল্যাহ চৌধুরী বরাত জানান, দীর্ঘদিন পর নতুন নেতৃত্ব ঘোষনা হওয়ায় সংগঠনের নেতাকর্মীরা আনন্দিত। নতুন করে পরিকল্পনা নিয়ে ফেনী জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় ছাত্রদলকে সুসংগঠিত করা হবে।
এদিকে প্রচার সম্পাদক সালাহ উদ্দিন মামুনকে উল্লেখিত পাল্টাপাল্টি কর্মসূচীতে দেখা যায়নি।
জানা গেছে, কাঙ্খিত পদ না পাওয়ায় সে হতাশ হয়ে কোন কর্মসূচীতে অংশ নেয়নি। একথা স্বীকার করে মামুন জানান, তিনি সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ চেয়েছিলেন। যোগ্যতা অনুসারে পদ না পাওয়ায় তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে এখনই কমিটির বিপে অবস্থান না নিয়ে তিনি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবেন। ইতিমধ্যে বিষয়টি কেন্দ্রীয় সংগঠন ও জেলা বিএনপির সভাপতি মেজর (অবঃ) সাঈদ এস্কান্দারকে অবহিত করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার জেলা সভাপতি আমান উদ্দিন কায়সার সাব্বির’র নেতৃত্বে বিদ্রোহী অংশের নেতারা সাঈদ এস্কান্দার’র সাথে দেখা করে তাদের ােভের কথা জানান। সাঈদ এস্কান্দার তাদেরকে মিলেমিশে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।