আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার নীলা আপা



নীলা আপা'র সাথে আমার পরিচয় হয় সিলেটের মীরা বাজারে। তখন আমি অনেক ছোট। দশ বছর বয়স। আমার ছোট মামা চা বাগানে কাজ করেন। শীতের শুরুতে মামা'র বাড়ি বেড়াতে যাই।

একদিন বিকেলে খেলতে খেলতে পুকুরে পড়ে যাই,আমি সাঁতার জানি না,তখন এই নীলা আপা আমাকে বাঁচান। আপা,কলেজ থেকে বাসায় ফির ছিলেন। তারপর আমি ঢাকায় চলে আসি এবং নীলা আপা'র কথা ভুলে যাই। তার দশ বছর পর আবার আমার নীলা আপা'র সাথে দেখা হয়। মজার ব্যাপার হলো এবারও সিলেটে দেখা হয়।

আমি তখন সিলেটের শ্রীমঙ্গলে। আমি একা একটা টিলা ওপর বসে আছি। তখন সন্ধ্যা। হঠাৎ আপা আমার পেছন থেকে ডেকে বললেন এই তুই এইখানে একা বসে আসিছ কেন?জানিস না সন্ধ্যার পর বাগানে সাপ নামে। বিষাক্ত সাপ! আমি আমার নীলা আপা'র জন্য অন্তর থেকে অজানা এক ভুবনের টান অনুভব করি।

আপা এখন থাকেন বেলজিয়াম। তার স্বামীর সাথে। ল্যুভেন - লা - ন্যুউভ শহরে। আপা বাচ্চাটার নাম তীর্থ। কিন্তু আমি ডাকি স্পাইডারম্যান।

দারুন বুদ্ধিমান একটা বাচ্চা। আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে আপা ঢাকা আসবেন। আপা ঢাকা আসলে অনেক মজা হবে। আমি অপেক্ষায় আছি। আমার আপা'র প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাস।

আপা Phd করবেন। "কৃষ্ণা দ্বাদশীর জোছনা যখন মরিয়া গেছে নদীর চড়ায়-/ সোনালি ধানের পাশে অসংখ্য অশ্বত্থ বট দেখেছিল, হায়, শ্যামার নরম গান শুনেছিল- একদিন অমরায় গিয়ে ছিন্ন খঞ্জনার মতো যখন সে নেচেছিল ইন্দ্রের সভায় বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতো তার কেঁদেছিল পায়। " আমার নীলা আপা দারুন সব কবিতা লিখেন ছোট গল্প লিখেন। এখন জীবনী লিখছেন। স্কুল জীবন থেকে'ই আপা লেখালেখি শুরু করেছেন।

একসময় বিভিন্ন পএ পএিকায় আপা'র লেখা চোখে পড়তো। আনন্দ বাজার পএিকাতে ও আপা'র লেখা ছাপা হয়েছে। আর এখন অনেক ওয়েব সাইটে আপা'র লেখা চোখে পড়ে। আপা'র লেখা পড়তে আমার অনেক আনন্দ হয়। লেখা লেখি ছাড়াও আপা গান করেন।

বিশেষ করে রবীন্দ্র সংগীত আপা'র গলায় দারুন লাগে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আপা গান করেন আবার তরুন কুমার আপা'র লেখা কবিতা আবৃওি করেন। আমাদের তীর্থ (স্পাইডারম্যান)এন্টারপেন সিটিতে বৈশাখী অনুষ্ঠানে গান গায়। আহা...কি আনন্দ !এখন আপা ছোট ছোট বাচ্চাদের গান শিখান নাচ শিখান। আমি খুব বুঝতে পারি যার হৃদয়ে আকাশের সমান ভালোবাসা আছে,শুধু তার দাড়াই এই সব সম্ভব।

আমি যখন বলি আমার নীলা আপা,তখন আমার অনেক গর্ব হয়। আপা'র অনেক কথা আমি বুকে ধারন করে বসে আছি। আপা'র কিছু কিছু কথা আমি কোনোদিন ও ভুলতে পারবো না। আমার নীলা আপা সত্য কথা বলতে ভয় পান না। আপা স্পষ্ট বলেন- "কতো মেয়ের ভালোবাসা শুধু সন্দেহ আর অবিশ্বাসের নীচে চাপা পড়ে, ধিক্কার সেই সব প্রেমিক নামের মুখোশধারীদের,ভালোবাসার মানে কি চেহারা দেখে প্রেম করা?" "যাদের ভালোবেসেছি তারা কেউ অনেক ভালোবেসেছে আর কেউ তাচ্ছিল্য দিয়েছে।

লাখ টাকার দামী উপহারও ভোলাতে পারে না আমায়, শুধু ভালোবেসে ভালোবাসা দিলে নিজের জীবন কে দান করে দিতেও পিছ পা হই না। ভালোবেসে বিষও যদি দাও,পান করবো অনায়াসে। " "ফেসবুক বন্ধ করে আরো অনেক অপরাধের তৈরী করে ফেললো সরকার। যেসব বখাটে এখানে সময় কাটিয়ে সাইবার অপরাধে সময় কাটাতো,তারা এখন সেই সময়টা কে কাজে লাগেবে টিজিং-এ। আর অনেক প্রতিভাবান লেখক/কবি যাদের কোথাও লেখা হয়ে উঠেনা,তাদের হারাবো আমরা।

" "ভালোবাসা চেয়েছিলো নারী,অফুরান আনন্দে গড়িয়ে যেতে চেয়েছিলো নারী,সবুজ ঘাসে ছুটে যেতে চেয়েছিলো, খোলা আকাশের দিকে হাত বাড়িয়ে কালপুরুষ প্রেমে নিমজ্জিত হতে চেয়েছিলো,কিছু পারেনি,কোনো যাদু মন্ত্রেও কিছু হয়নি,ভালোবাসার চেয়ে আর বড়ো কোনো যাদু কি আছে?" "শব্দেরা ক্রমশ খসে পড়ে আকাশের তারার মতো, শুধু আঁচলেই শব্দেরা রইলো না আর... একদিন আমিও আবার কিশোরী হবো,ছুঁয়ে যাবো প্রজাপতি রঙ আহা যদি আবার ফিরে যাওয়া যেতো কুড়ি বছর আগে শুভ বুদ্ধির উদয় হোক সকল প্রেমিক - প্রেমিকার মনে" "মাইর দিতে ইচ্ছে করে,কারে মারি!যারা যারা মাইর খাইতে চাও, এইখানে লাইন বাইন্ধ্যা খাড়াও,ঘুম থেকে উইঠ্যা দিমু...ঠিক আছে? গেলাম শুইতে..." "এ আমার আনন্দ, আমার প্রেম,আমার স্বর্গ,আমি তিলোত্তমা,আমার এ রূপ পেয়েছি এই স্বর্গীয় কোমল পরীদের থেকে,অনেকদিন পরে জানলাম আমি খারাপ নই,কারণ শিশুরা কখনো ভুল মানুষকে ভালোবাসে না..." আমাদের মিতু নীলা আপাকে নিয়ে লিখেছেন - "এক যে ছিল নীলাদিদি, বউ এর নামটি তরুন সরি, স্বামীর নামটি তরুণ দুজন মিলে দারুণ জুটি, একটু লক্ষ্য করুন এবার, একটু লক্ষ্য করুন... See More দুই এর মাঝে নীলাদিদি একটু ফর্সা বেশী আর, মিষ্টি তাহার হাসি দাদার মনে মনে যে তাই হিংসা রাশি রাশি ভীষণ, হিংসা রাশি রাশি দিদি লিখতে পারে কাব্য, দাদা কিন্তু পাঠক আর, একটু সমালোচক দিদির কথা অনেক মিষ্টি, দাদার টা ঝাল-টক বেশী- না,অল্প ঝাল টক । দিদির গান আর নাচের গুণে আমি যে অবাক আমি, ভীষণ হই অবাক দাদার মতো কাঠখোট্টার পাশেও সে সবাক আমি অবাকে নির্বাক... আমার দাদা বিজ্ঞান বুঝে, আর্টে আছে কি? বলো, আছে কিছু কী? নেই জানে সে, তাই বুঝে না, পেয়েছে সে কি অমূল্য রত্নরাজি । সেদিন আবৃত্তি শুনি সে ভালোই করেছে দিদির লেখা পড়েছে যাক বাঁচলাম এতদিনে বুদ্ধি খুলেছে তাহার গুণও তো আছে! দোষে-গুণেই মানুষ এটা আমরা সবাই জানি তাই ধৈর্য ধরতে জানি হিংসা ভুলে দাদা এখন দিদির পাশে, মানি এখন, শান্ত নদীর পানি... তীর্থর সাথে আরেকটি প্রাণ দেখতে এখন চাই মনে, একটি খোয়াব পাই... ২ শয়তান যথেষ্ট তাই, অপর কেন নাই আমি শীঘ্র দেখতে চাই... ৪ হাসিমুখ, গ্রুপ ফটোতেও আমার দিদি ষ্টার জানি, সে-ই তো কর্ণধার সবাই তাকে রাখবে ঘিরে, আলোতে তাহার । আছে, জগতে কি আর...! দুজনকে বললাম আজ খোয়াব, ভয় ঝেড়ে এবার খুলে, মনের সকল দ্বার... নটে গাছটি মুড়ায় কথা ফুরায় না আমার আমি, আসবো যে আবার। নীলা।

নীলাঞ্জনা। আমার নীলা আপা। দশ খানা পৃথিবী ভরা মানুষকে দিলে ও আপা'র ভালোবাসা ফুরাবে না। আমি আকাশের দিকে তাকালেই দেখতে পাই আপা দু'হাত বাড়িয়ে আছেন আমাদের দিকে। আপা আমরা তোমাকে অনেক ভালোবাসি।

আপা,তোমার প্রতি যে আমার কতো ভালোবাসা তা তুমি কোনোদিনও জানবে না। আমার আপা'র জন্য এক আকাশ শুভ কামনা। আমার আপা ভালো থাকুক। ভালো থাকুক আমার আপা'র সমস্ত প্রিয় মানুষেরা। ('জিয়ে জিয়ে নিন জিয়ান সেং ঝু নিন সুন লি।

'আপা তুমি তো অনেক দিন জাপান ছিলে বলতো কি লিখেছি?হা হা হা...)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।