আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার মোবাইল বেলা: নিশিতে কল কইরো আমার ফোনে

মানুষ চাই.....সতিকারের মানুষ খুঁজছি....

আমার মোবাইল বেলা 'র পরের অংশ.... সিটিসেলের LG V111 কিনে শুরু করে দিলাম রাত ১১ টার পরে ২.৩০টাকা মিনিটে কথা বলা। সে সময় এই প্যাকেজটা নিয়ে একটি জনপ্রিয় এ্যাড ও হয়েছিলো,নিশীতে কল কইরো আমার ফোনে। তো, কথা হতো আমার বন্ধুর তাহার মোবাইলে আমার তাহার সাথে। রাতে হোস্টেলে সবার ডিস্টার্ব হবে এজন্য ছাদের একটা রুমে উঠে কথা বলতাম। হোস্টেলে সুমনদা'র এক ফাজিল বন্ধু আসলো, তার নাম আনন্দ, সে একদিন ফাজলামি করে ছাদের দরজা বন্ধ করে দিলো, সে ভেবেছিলো যে আমি চিল্লাচিল্লি শুরু করে দেবো, আসলে আমি জানতাম এটা তার কাজ, তাই যখন দেখলাম দরজা বন্ধ তখন চুপ চাপ বসে রইলাম, দেখলাম ঘন্টা খানেক পরে কে যেনো এসে আবার দরজা খুলে দিয়ে দৌড় দিল।

পরে অবশ্য সে নিজেই বলেছিলো তার এই ফাজলামীর কথা। এক বছর এভাবে চলল, কিন্তু আমার রসিক মোবাইল LG V111 বেরসিক ভাবে ইন্তেকাল ফরমাইলো। কারন অজানা। আবার শুরু হলো আমার মোবাইল বিহীন জীবন, চলল প্রায় এক বছর। এর মাঝে আমার তাহার বাড়ি থেকে তাহাকে মোবাইল কিনে দিয়েছে তাহার বাবাও একখানা কিনে ছিলেন কেবল মাত্র আদরের মেয়ের সাথে কথা বলার জন্য।

এদিকে আমার মোবাইল নাই, হাতে তেমন জমানো টাকাও নাই, ভার্সিটির এক বন্ধু জানালো যে সে মোবাইল চেন্জ করবে এজন্য একটা পুরাতন মোবাইল বিক্রি করতে চায়, Siemens C35. বলল, সবঠিক আছে কেবল সেট চেন্জ করতে চায় বলে বিক্রি করছে। কিনে বুঝলাম আসল কাহিনী, নেটওয়ার্ক ঠিকমতো পায়না। বন্ধুটির সাথে এ নিয়ে ঝগড়াও করতে গেলাম না, কারন এমন কিছু কিছু সেলস্ ম্যান থাকে বাংলাদেশে, যা আমার মতো লোক দিয়ে এরকম কাজ করা সম্ভব না। গেলাম মেকারের কাছে মেকার বলল, নেটওয়ার্ক আইসি নষ্ট মোবাইলে যেটা লাগাতে আমার যে দাম দিয়ে পুরানো সেট কিনেছি তার ডাবল দাম পড়বে। হায় হায়, কি আর করা তাহার সাথে কথা বলতে হবে, ওদিকে নতুন মোবাইল কেনার টাকাও নাই।

কি আর করা,নেটওয়ার্ক পাবার জন্য ঘর থেকে বের হয়েই শেষ পর্যন্ত কথা বলতে হতো। মাস ছয়েক এভাবে কাটালাম। 2005 এর প্রথম দিকে ফেব্রুয়ারি কি মার্চ মাস হবে সেবা টেলিকম বিদেশী কোম্পানী ওরাসকম কিনে নিয়ে নাম দিলো বাংলালিংক । তাদের প্রথম প্যাকেজ ছাড়লো সেট দিয়ে 35,00 টাকা দাম। সাথে 6টি 300টাকার মোবাইল কার্ড + সিম।

ভাবলাম, যাক এতদিনে আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম। গুলশান-2 এর মেইন অফিসে লাইন দিয়ে একদিন টাকা জমা দিয়ে দ্বিতীয় দিন প্যাকেজ সংগ্রহ করলাম। সেট ভাগ্যে পড়লো Motorolla C201. ঠিক এরকমই দেখতে সেট টা। কিন্তু তখনও বাংলা লিংকের মিনিট 6.90 পয়সা , ছয়টি কার্ড শেষ করে বাংলালিংক সিম বাদ দিয়ে গ্রামীনে চলে গেলাম, কারন তাহার গ্রামীন নাম্বার যাতে ওয়ান টু ওয়ান করা যায় আর 3.50 টাকা মিনিট কাটে। কথা চলতে থাকলো।

2005 এই বছরের মাঝামাঝি সময়ে আসলো ডিজুস, যা গ্রামীনেরই একটা অংশীদারী কোম্পানী। এসেই তারা অফার দিলো রাতে তাদের ডিজুস টু ডিজুসে 30 পয়সা দিয়ে যতখুশি কথা বলা যাবে। খুশিতে তো আটখানা হয়ে গেলাম, কখন রাত হবে, কখন কথা বলবো অনেক অনেক...... প্রথমে তো ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলতে বলতে মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে যেতো সাথে কান গরম হয়ে ব্যাথা করতো, পরবর্তীতে দেখা গেলো আধ ঘন্টা কথা বলার পর নেটওয়ার্কই কেটে যেতো, পরবর্তীতে নেটওয়ার্ক খুঁজতে ঘুমিয়েই পড়তাম। রাতে ঘন্টা ধবে কম খরচে কথা বলার সুখ বেশিদিন থাকলো না, দেশের অভিভাবকদের অনুবোধে ডিজুসের সেই অফার বন্ধ করে দেয়া হলো। হায়....... সেই দিন তারপর ফুরালো.... নিশিতে কল কইরো আমার ফোনে.... চলবে...


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.