বগুড়ায় পুলিশ খোঁজ পেল আরও একটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের। শহরের মালগ্রাম আদর্শ কলেজপাড়ায় গতকাল ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে একটি রিভলবার, বোমা ও ককটেল তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম, কালো মুখোশ, দেশীয় ধারালো অস্ত্র, আটটি তাজা ককটেল, জঙ্গি সংগঠন বিইএমের কাগজপত্র, বোমা-অস্ত্র বিস্ফোরণের কৌশল ক্যাটালগসহ শত শত জিহাদি বই উদ্ধার করে পুলিশ। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি মূলত একটি ছাত্রাবাস। অভিযানকালে ছাত্রাবাসের মালিক শহরের খান্দার এলাকার রেজাউল ও তার ছেলে ইউসুফকে আটক করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার জঙ্গি সংগঠন বিইএমের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সন্ধান পায় র্যাব।
ওই দিন এলএমজি-এসএমজিসহ তিন জঙ্গিকে আটক করা হয়। তাদের গতকাল তিনটি পৃথক মামলায় ৪৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ। সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আটক তিন জঙ্গির মধ্যে রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশকে তিনি জানান, শহরের মালগ্রাম আদর্শ কলেজপাড়ার ওই ছাত্রাবাসে কৌশল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। রুবেলের দেওয়া তথ্যমতে গতকাল সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। তারা ছাত্রাবাসের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে সেখান থেকে একটি রিভলবার এবং বোমা ও ককটেল তৈরির বিপুল সরঞ্জাম, বেশ কিছু কালো মুখোশ, হাঁসুয়া, ধারালো অস্ত্র, আটটি তাজা ককটেল, জঙ্গি সংগঠন বিইএমের কাগজপত্র, গান পাউডার, প্রশিক্ষণের সময় লেখার জন্য হোয়াইট বোর্ড, অস্ত্র চালানোর ও বোমা বিস্ফোরণের কৌশল ক্যাটালগসহ শত শত জিহাদি বই উদ্ধার করে।
ছাত্রাবাসটি দুই মাস আগে কয়েকজন যুবক ভাড়া নিয়েছিল। বগুড়ার পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে অভিযানে অংশ নেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম, এএসপি (এ সার্কেল) নাজির আহম্মেদ, সহকারী সুপার (সদর) গাজিউর রহমান, জেলা ডিবির ওসি মিজানুর রহমানসহ পুলিশ বিভাগের অন্য কর্মকর্তারা। পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক জানান, রুবেলের দেওয়া তথ্যমতে সেখানে অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন বিইএমের কৌশল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বোমা ও ককটেল তৈরির সরঞ্জাম, একটি রিভলবার, তাজা ককটেল, দেশীয় অস্ত্র, বিইএমের কিছু কাগজপত্র, মুখোশসহ শত শত জিহাদি বই পাওয়া গেছে। এ ছাত্রাবাসে তারা বোমা বা অস্ত্র চালানোর কৌশলের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) গাজিউর রহমান জানান, আটক তিন জঙ্গিকে থানায় হস্তান্তরের পর সরকারি কাজে বাধা, অস্ত্র ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে। র্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) আবদুল আলীম বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন। তিন মামলায় ১৫ দিন করে ৪৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। গ্রেফতার তিন জঙ্গিকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে ফিরোজ আলম নামের একজন দিনাজপুরের বাসিন্দা পরিচয় দিলেও তিনি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার ফুলকোট গ্রামের আফাজ উল্লাহর ছেলে সানাউল্লাহ।
তিনি স্থানীয় মিতাহুল ইসলামিয়া মাদ্রাসার পরিচালক। অন্যজন ঢাকার কমলাপুর রেল কলোনির মিজানুর রহমানের ছেলে নাহিদ পরিচয় দিলেও তার প্রকৃত পরিচয় ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীর আন্দারিপাড়ার মিজানুর রহমানের ছেলে রুবেল। তৃতীয়জন গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার সোনারপাড়ার মকরুফ শেখের ছেলে বারহা শেখ বাবু। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার র্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের সদস্যরা শহরের ঠনঠনিয়া দক্ষিণপাড়ায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন বিইএমের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সন্ধান পায়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।