এসো, গল্প শোনাই।
গল্পটা আমার বাবার মুখে শোনা। আমি শুনে খুব নির্মল আনন্দ পাইছিলাম। তাই ভাবলাম ঝটপট লিখে ফেলি।
বাবার কলিগের নাম আনোয়ার সাহেব।
পেশায় ইন্জিনিয়ার। প্রায়ই আনোয়ার সাহেবের বাসায় অফিসের অনেক বন্ধু বা সিনিয়র অফিসার এসে থাকেন।
কোনো এক ছুটির দিনে আনোয়ার সাহেবের বাসায় তার এক সিনিয়র অফিসার বেরাতে এলেন। দরজা নক করতেই ১২ - ১৪ বছরের এক ছেলে বেরিয়ে আসলো।
ছেলেটাকে দেখে ভদ্রলোক বললেন, "বাবু, তোমার নাম কি? তুমি আনোয়ার সাহেবের কি হও? কোন্ ক্লাসে পড়?"
ছেলেটি শুকনো মুখে বললো, "আমার নাম মাহমুদ।
আমি এ বাসায় কাজ করি। আমি কাজের লোক। লেখাপড়া করিনা। আপনি ড্রইং রুমে বসেন। আমি ডেকে দিচ্ছি।
"
ভদ্রলোক একটু হতাশই হলেন । দেখতে শুনতে এতো চমৎকার একটা ছেলে এ বাড়ির কাজের ছেলে, ঠিক মিলাতে পারলেন না।
যাই হোক আনোয়ার সাহেবের সাথে ভদ্রলোক অনেকক্ষণ আড্ডা দিলেন। দুপুরে খাবার সময় হয়ে গেলো। ভদ্রলোক আনোয়ার সাহেবের সাথে ডাইনিং টেবিলে খেতে বসলেন।
ভদ্রলোক দেখলেন, মাহমুদ নামের ছেলেটা যে কিনা এই বাড়ির কাজের লোক, সেও খাবার টেবিলে বসে আছে।
ভদ্রলোক একটু ইতস্তত করে আনোয়ার সাহেবকে বললেন, "আচ্ছা। এই ছেলে আপনার কে হয়?"
আনোয়ার সাহেব বললেন, "আমার ছোটো শালা। কেন? "
ভদ্রলোক বললেন, "না ঠিক আছে। সমস্যা নাই।
কিন্তু এতো সুন্দর একটা ছেলে, লেখা পড়া না করে বাড়ির কাজ লোক হিসাবে কাজ করে !?! "
আনোয়ার সাহেব: "ও ক্যান কাজের লোক হইতে যাবে? ও তো ল্যাবরেটরিতে ক্লাস সেভেনে পড়ে। "
ভদ্রলোক: "কিন্তু ও যে বললো, ও লেখাপড়া করেন। এ বাড়িতে কাজ করে। "
যাইহোক ভদ্রলোক দুপুরের খাওয়া শেষে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে চলে গেলেন।
চলে যাওয়ার সাথে সাথেই আনোয়ার সাহেব তার শ্যালক মাহমুদকে ডেকে বললেন, "এ্যাই তুই এই ফাযলামিটা কেন করলি ওনার সাথে??"
মাহমুদ: "আমি কি করলাম??"
আনোয়ার সাহেব: "তুই ক্যান বললি, তুই এই বাসায় কাজ করিস?"
মাহমুদ: "ক্যান বলবো না।
গত বার বদমাইশটা আইসা আমারে জিগগেস করলো আমি কি করি। আমি বললাম আমি সিক্সে পড়ি। সে আমারে দিয়া ১০ টা ট্রনস্লেশন , ৪ ট সরল অংক আর ২টা জ্যামিতি করাইছে।
তাই এইবার যখন আইসা জিগাইছে, আমি সাফ সাফ কইয়া দিছি। আমি লেখা পড়ার ধারের কাছেও নাই।
আমি এই বাড়ির কামের পোলা। "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।