আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সবচেয়ে ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

বাঙালিত্ব

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে রয়েছে বাংলাদেশ। গত ৩০ বছরে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে এ দেশে প্রায় দুই লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যা একক দেশ হিসেবে বিশ্বে সর্বোচ্চ। গত মঙ্গলবার ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থা ম্যাপলক্র্যাফট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। সংস্থার প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ঝুঁকি সূচক বা এনডিআরআইয়ে বাংলাদেশকে রাখা হয়েছে সর্বোচ্চ ঝুঁকির ১৫ দেশের তালিকার ১ নম্বরে। ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও ভারতও রয়েছে সর্বোচ্চ ঝুঁকির তালিকায়।

ম্যাপলক্র্যাফটের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিবেদনটি তারা তৈরি করেছে মূলত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ঝুঁকি নিরূপণের জন্য। এ লক্ষ্যে ২২৯টি দেশ ও অঞ্চলের গত ৩০ বছরের তথ্য সংগ্রহ করেছে সংস্থাটি। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা, মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির হার, আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস, অবকাঠামোগত অবস্থা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারসহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন তথ্য বিবেচনায় আনা হয়েছে। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে দেশগুলোকে সর্বোচ্চ, উচ্চ, মাঝারি ও স্বল্প ঝুঁকির চারটি তালিকায় ভাগ করেছে ম্যাপলক্র্যাফট। এনডিআরআইয়ে সর্বোচ্চ ঝুঁকির ১৫ দেশের মধ্যে প্রথম নামটি বাংলাদেশের।

গবেষণা সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮০ সালের পর থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে অন্তত এক লাখ ৯১ হাজার ৬৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়েই মারা গেছে এক লাখ ৬৭ হাজার ১৭৮ জন। ঝুঁকির বিচারে বাংলাদেশের পরই রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, ইরান, পাকিস্তান ও ইথিওপিয়া। এশিয়ার দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তি ভারত ও চীন রয়েছে তালিকার ১১ ও ১২ নম্বর অবস্থানে। ইন্দোনেশিয়ার ক্ষেত্রে বিগত দিনগুলোতে সবচেয়ে বড় দুর্যোগ ছিল ২০০৪ সালের সুনামি।

গত ৩০ বছরে ইন্দোনেশিয়ায় এক লাখ ৯১ হাজার মানুষ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে মারা যায়; এর মধ্যে সুনামিতেই মারা যায় এক লাখ ৬৫ হাজার। ইরানের ক্ষেত্রে ঝুঁকির সবচেয়ে বড় কারণ ভূমিকম্প। ১৯৮০ সালের পর থেকে দেশটিতে কেবল ভূমিকম্পেই মারা গেছে ৭৪ হাজার মানুষ। এই সময়ে ভারতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে এক লাখ ৪১ হাজার ও চীনে এক লাখ ৪৮ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে। সর্বোচ্চ ঝুঁকির তালিকায় ৬ থেকে ১০ নম্বরে রয়েছে সুদান, মোজাম্বিক, হাইতি, ফিলিপাইন ও কলম্বিয়া।

ম্যাপলক্র্যাফটের বিশেষজ্ঞ আনা মস বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, 'দারিদ্র্য এসব দেশের ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ঘন ঘন দুর্যোগের কারণে দেশগুলো আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও বিপুল জনঘনত্বের কারণে যেকোনো দুর্যোগে প্রাণহানি ঘটছে অনেক বেশি। ' ম্যাপলক্র্যাফটের বিবেচনায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও ঝুঁকিমুক্ত নয়। সংস্থাটির সূচকে জি-এইটভুক্ত শিল্পোন্নত দেশগুলোকে রাখা হয়েছে উচ্চ ঝুঁকির তালিকায়।

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে উচ্চ ঝুঁকিতে আছে ফ্রান্স (১৭) ও ইতালি (১৮)। ২০০৩ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে এই দুটি দেশে তাপপ্রবাহে মারা গেছে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক শক্তি যুক্তরাষ্ট্র আছে তালিকার ৩৭ নম্বরে (উচ্চ ঝুঁকি)। দেশটিতে গত ৩০ বছরে হারিকেনে মারা গেছে চার হাজার ৮০০ মানুষ। জাপান (৪১), জার্মানি (৫০), রাশিয়া (৫৪), কানাডা (১০৭) ও যুক্তরাজ্য (১১১) রয়েছে ম্যাপলক্র্যাফটের স্বল্প ঝুঁকির তালিকায়।

আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সবচেয়ে কম ঝুঁকিতে আছে অ্যানডোরা, বাহরাইন, জিব্রাল্টার, মাল্টা, মোনাকো, কাতার, সান মারিনো ও সংযুক্ত আরব আমিরাত Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.