তৃষ্ণার্ত প্রকৃতি মেঘের দেখা পেয়েছে। হিমালয়ের শিখর থেকে প্রিয়তমা কৃষ্ণকলি দেখা দিয়েছে, মিলনের পূর্বে ঢাকা পড়েছে সূর্য। সূর্য্যি মামার বিচ্ছুরিত আলোর রেশ মৃদু মন্দ আভার মত বিরাজিত, উত্তর থেকে শীতল বায়ু ধরাকে শান্তির পরশে করেছে উদ্বেলিত। না শীত না গরম, জ্যৈষ্ঠের এই দাবদাহের পর কৃষ্ণকলির আগমন নিয়ে এসেছে এমনি আমেজ। গুড়ু গুড়ু মৃদু মন্দ ছন্দে জলধি প্রকাশ করছে তার উচ্ছাস।
সাথে সাথে একটা দমকা মতো হাওয়া, যা আবার কালবৈশাখীর মতো লোকালয়ের ক্ষতির কারণ নহে, এসে এলোকেশী এ অবনির কেশ দুলিয়ে যায়। বাতাসে জলের ছোঁয়া বাড়াতে শীতল আমেজ টের পাইয়ে দিচ্ছে বৃষ্টির আগমন। আয় বৃষ্টি ঝেপে।
ফিঙে পাখিটি ডাবগাছে আশ্রয় নিয়েছে, স্কুলের মাঠের কোলাহলরত ছেলেমেয়েরা রুমে উঠে গিয়েছে। বাঁশের তৈরী সাঁকো দিয়ে ত্রস্ত পায়ে দু'একজন পার হচ্ছে।
সকলে ছাদের নিচে গেলো, বৃষ্টি কা্উকে বা লাগিয়ে দিলো হালকা পরশ। থেমে থেমে মোলায়েম হাওয়ায় এমন দোলা যেন মেঘ আর পৃথিবী শীৎকার তুলেছে তার গুড়ু গুড়ু ডাকে। পাশেই ভীষন আলসে কড়ই গাছটা সূর্য্যি মামা নেই ভেবে নাকি লজ্জায় ঘুম দিয়েছে। এক ফালি পাটক্ষেত হাওয়ার দেয়া পাটে দক্ষিণ যাত্রামুখী হয়ে সজ্জিত হচ্ছে বর্ষার এ মহামিলন ক্ষণে। হঠাৎ ঝিলিক মারলো হলদে আভার মতো, ছেলেমেয়েরা চিৎকার দিয়ে উঠলো, গর্জে উঠলো আকাশ, ঝলকিত হাসির তালে যেন পটকা ফোটানো।
বৃষ্টি এলো, কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো পরিস্থিতিকে পাল্টে রসে সিক্ত করতে থাকলো এবং সিক্ত গাছ ,মাটি, কাদা, জমে উঠা পানি, মেঘের নাদ, হালকা হাওয়া সর্বোপরি প্রায় নিরব হয়ে আসা মানুষ ও পশুপাখির আওয়াজ। শুধু বৃষ্টির শব্দ, কী সরব তার উপস্থিতি! সবকিছুকে ম্লান করে দিয়ে আজ মিলনের রস নিঃসৃত হচ্ছে, এ রসের রসায়নে জীবন তৈরী হয়, জীবন বেঁচে থাকে। এ যে জীবনের রস, এ প্রকৃতির রস।
ঝম...... বৃষ্টি
থৈ থৈ অবনি
গোল গোল ফোটা
রূপা রং যেমনি।
আয় তবে ত্বরা করে
অবগাহি ধরণী
তৃষ্ণা মিটিয়ে
আনন্দে চান করি।
শুকনো দেহখানি তৃপ্ত করে
পুরাণো দিনগুলো রপ্ত করে
সামনে যাবি আয়
আয় ত্বরা করি।
পুরান খাতার পাতা থেকে: ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৪।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।