সাম্প্রতিক মাওলানা সাইদুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর আবারো প্রমাণিত হল যে দেশে জঙ্গি তৎপরতা অব্যাহত আছে। মাওলানা শাইখ রহমানের ফাঁসি হওয়ার পর অনেকে ধারনা করেছিল যে দেশে জঙ্গি কার্যক্রম শেষ হয়ে গেছে কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সমূলে তা উৎপাটিত হয়নি। সুতরাং আমাদের এ বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ আবহমান কাল থেকে একটি শান্তি প্রিয় অঞ্চল হিসাবে পরিগণিত হয়ে আসছে এবং এদেশের মানুষ আসলেই শান্তি প্রিয়। এ অঞ্চলটি মুসলমান প্রধান হলেও আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞাতায় দেখেছি আমাদের দেশে বসবাসকারী অন্যান্য ধর্মের জনগণও মুসলমানের পাশাপাশি মোটামুটি সমান সুযোগ সুবিধা নিয়ে বসবাস করে আসছে ।
বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রিতি পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে অনেক উন্নত । আর বর্তমানে যে জঙ্গি তৎপরতার চিত্র দেখা যাচ্ছে তাতে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা চলে এটি আমাদের দেশের বিরুদ্ধে একটি গভীর চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্র । এদেশের শান্তি প্রিয় মানুষ এ টি করতে পারে না।
অন্যদিকে যে মুসলমান ধর্মকে জঙ্গি ধর্ম হিসাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে দেশের তথা পৃথিবীর মানুষের সামনে তাও প্রশ্নবিদ্ধ। কারণ একটু সচেতনভাবে লক্ষ্য করলে ব্যাপারটা পরিষ্কার কয়ে যাবে ।
ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম একথা সর্বজন স্বীকৃত। তাবৎ ধর্মের লোকজন এবং পৃথিবীর প্রায় সকল মণীষী এ কথা স্বীকার করেছেন যে ইসলাম একটি বিজ্ঞান সম্মত ধর্মই কেবল না একটি পূণাঙ্গ জীবন বিধান। ইসলামে জঙ্গি তো দূরের কথা কোন মানুষ হত্যা করা বা এ জাতীয় কর্মকান্ড সম্পূর্ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের জঙ্গিরা বোমা মেরে মানুষ মারার হলি খেলায় মেতেছে এবং এতে আবার ইসলামের লেবাস দিচ্ছে । ইসলাম কায়েমের নামে তারা দেশের প্রচলিত আইন-কানুন এর বিরুদ্ধে কথা বলছে এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ মারার পথ বেচে নিয়েছে যা সম্পূর্ন ইসলাম বিরোধী এবং সর্বপরি মানবতা বিরোধীও বটে।
আমাদের মহানবীর জীবন চরিত্র সংগ্রামী কাহিনী অধ্যয়ন করলেই আমাদের সামনে বিষয়গুলো পরিস্কার হয়ে যাবে। নবীর জীবনে কাউকে মারা তো দূরের কথা কোন মানুষকে কষ্ট পর্যন্ত দেননি । ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁর ত্যাগ ও পদ্ধতি কি আমাদের দেশের জঙ্গিরা কখনো পড়েনি।
আমার মতে জঙ্গিদের ধরে জবানবন্দি নেয়া উচিত -কোন ইসলাম তাদের মানুষ মারার লাইসেন্স দিয়েছে এবং মানুষ মেরে ইসলাম কায়েমের এ পদ্ধতি তাদের কে শিখিয়েছে। সরকারের আইন-শৃংখলা বাহিনীর উচিত হবে এখনি এদের মূলোৎপাটন করা যাতে ভবিষ্যতে কোন নাশকতামূলক কর্মকান্ড করতে না পারে।
অন্যদিকে দেশের জনগনেরও অনেক দায়-দায়িত্ব রয়েছে এ ব্যাপারে। আমাদের আশে-পাশে কেউ জঙ্গি তৎপরতা চাল্লাচ্ছে কিনা তা লক্ষ্য রাখা এবং সময়মত আইন-শৃংখলা বাহিনীকে জ্ঞাত করা। পরিবারের সকলের খেয়াল রাখা উচিত কোন সদস্য জঙ্গি তৎপরতার সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে কিনা। সমাজের সচেতন মানুষ হিসাবে আমাদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে কারণ কেবল সরকার একার পক্ষে এ সমস্যা সমাধান করা দূরহ হবে বৈকি
আমরা আমাদের সোনার বাংলাকে জঙ্গি আখড়ায় পরিণত হতে দিতে পারি না এবং আদৌ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে দিতে পারি না। এ কাজে সকলের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।