আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এভাবে বিচারের বাণী নিভৃতে কতদিন কাঁদবে

আর কটা দিন সবুর করো মরিচ বুনেছি..
গত ১লা বৈশাখে নববর্ষের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘রাজু ভাস্কর্য'-এর সামনে আয়োজিত কনসার্টে শত শত মহিলা ও যুবতীদের আদিম বর্বরতায় নির্যাতন করা হয়েছে। উলঙ্গ ও অর্ধ-উলঙ্গ প্রায় ৫০ জন নির্যাতিতাকে পুলিশ উদ্ধার করে নির্যাতিতাদের নিকটাত্মীয় কিংবা বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে। সবচেয়ে রহস্যজনক ব্যাপার হলো, শাহবাগ থানার কর্তা ব্যক্তিরা কোনো উচ্ছৃংখল ছাত্রকে গ্রেফতার করেনি। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, কোন নির্যাতিতা মহিলা কর্তৃক লিখিত অভিযোগ না থাকায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। পুলিশ ধর্ষণউদ্যত নরপশুদের হাত থেকে প্রায় অর্ধশত নির্যাতিতাকে উদ্ধার করল-কিন্তু অভিযোগ না পাওয়ায় তাদেরকে গ্রেফতার না করে ‘জামাই' আদরে পালানোর পথ কেন করে দিল, তার কৈফিয়ত কিন্তু সংশ্লিষ্টদের একদিন দিতেই হবে।

এ ব্যাপারে ক্ষমতাসীন দলের নীতি নির্ধারকরা কিংবা মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একজন মহিলা হয়েও কেন এ জঘন্য কাজের প্রতিবিধানে ব্রতী হলেন না- তা ভাবলে বিস্মিত হতে হয়! প্রায় এক যুগ পূর্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রলীগ নেতা ও ধর্ষণের সেঞ্চুরিয়ান জসিমুদ্দিন মানিকের যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী (যারা এখনও ক্ষমতাসীন) করত, তাহলে সেই ছাত্র সংগঠনের ঔদ্ধত্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন কলেজ, বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ অগণিত ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা হয়তোবা সংগঠিত হতো না। এর পুরো দায়ভার তাদের মুরুববী রাজনৈতিক সংগঠনকে অবশ্যই নিতে হবে এবং জাতির কাছে দায়মুক্তির জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না বলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘ছাত্রলীগের তরফ থেকে আনা ফুলের তোড়া' ফিরিয়ে দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না। দলীয় রাজনীতির কুটিল সংস্কৃতি পাল্টিয়ে নিজেদের আগে সংশোধিত হতে হবে। ছাত্রদের বিরোধীপক্ষের সভা-সমিতি ভেঙে দেয়ার নিকৃষ্ট মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার না করে দেশীয় ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তাদেরকে পড়াশুনার টেবিলে ফেরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

চরিত্র সংশোধনের জন্য দলীয়ভাবে উদ্যোগের মাধ্যমে ধর্মচর্চাসহ যাবতীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। নচেৎ ছাত্র সংগঠনের কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি করলেই কিন্তু সমস্যার সমাধান হবে না। সমস্যা পূর্ববৎই থেকে যাবে। ‘পুলিশ-র্যা ব' রাষ্ট্রীয় আইন-শৃক্মখলা নিয়ন্ত্রণের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পরপরই আইন-শৃক্মখলা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা কেমন জানি দলীয় সরকারের আজ্ঞাবাহী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়।

ক্ষমতাসীন দলের টাউট-বাটপারদের দৌরাত্ম্যে আইন-আদালতসহ থানা কিংবা এসপি অফিসে সাধারণ জনগণের অধিকার রহিত হয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের অশ্রুতপূর্ব দলীয়করণে তা দলীয় প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে। ফলে বিচারের বাণী নিভৃতেই কাঁদবে-এটাই স্বাভাবিক। সরকারি মদদে ও ইঙ্গিতে বৈধ বিরোধী রাজনৈতিক দলের সম্মেলন ও সভা ভাঙ্গা এখন যেন পুলিশ বাহিনীর ‘রুটিন ওয়ার্কে' পরিণত হয়েছে।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.